ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসনের দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠেছে শাখা ছাত্রদলের তিন নেতার বিরুদ্ধে। তবে সমালোচনা সৃষ্টি হলে পরে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন ছাত্রদল নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন তারা। তিন নেতারা হলেন- আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য রাফিজ আহমেদ ও নুর উদ্দিন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১৬ ডিসেম্বরে (২০২৫) আমাদের মূল বক্তব্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে। বিশেষ করে সাজিদ হত্যাকাণ্ডের ৫ (পাঁচ) মাস অতিবাহিত হলেও এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার না হওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে নানা অযৌক্তিক আপত্তি আরোপ করা, অথচ একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রাত ১১টা পর্যন্ত ছাত্রী হলের অনুষ্ঠান উপভোগের মত ঘটনাগুলোর মাধ্যমে যে বৈষম্য ও অসংগতি প্রকাশ পেয়েছে- সেই বিষয়গুলোই আমাদের বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।’
এতে আরো বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে বক্তব্য প্রদানের সময় অনাকাঙ্খিত ও শালীনতাবিরোধী কিছু ভাষার ব্যবহার হয়েছে যা কোনোভাবেই আমাদের কাম্য ছিল না। এজন্য সম্মানিত শিক্ষক সমাজের নিকট আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। একইসঙ্গে আমাদের কোনো মন্তব্যে কোনো শিক্ষার্থী কষ্ট পেয়ে থাকলে তাদের নিকটও আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এছাড়া ভবিষ্যতে এধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে ইবি ছাত্রদল আরও দায়িত্বশীল, সংযত ও সতর্ক ভূমিকা পালন করবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। শিক্ষক সমাজের সম্মান রক্ষা এবং একটি সুস্থ, সহনশীল ও ইতিবাচক শিক্ষাঙ্গন গঠনে ইবি ছাত্রদল সর্বদা সচেতন ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও হলটির ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল কর্তৃপক্ষ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিনসহ প্রমুখ।
তবে অনুষ্ঠান শেষ করতে দেরি করায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে, এই অভিযোগে হলের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রদল নেতারা। রাত ১১ টার দিকে হল থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের গাড়ি বের হওয়ার সময় রাফিজ আহমেদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভে আসেন। ফেসবুক লাইভে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তারা।
এসএম