
আন্তর্জাতিক ডেস্ক- পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করায় আট মাসের অন্তঃসত্তা মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছে তার পাষণ্ড মা। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরবর্তী শিল্পনগরী গুজরানওয়ালার বুতরানওয়ালিতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পিটিআই’র।
স্থানীয় পুলিশ সুপার নাদিম খোখার বলেন, ২২ বছর বয়সী তরুণী মুকাদাস তিন বছর আগে পরিবারের অমতে স্থানীয় তরুণ তৌফিকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন। এ কারণে তার প্রতি পরিবার অসন্তুষ্ট ছিল।
তিনি বলেন, সম্প্রতি মুকাদাসের মা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে যে, তারা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে এবং তৌফিকের সঙ্গে তার বিয়ে মেনে নিয়েছে। এ সময় তিনি জামাইসহ মেয়েকে নিজ বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
নাদিম খোখার বলেন, শুক্রবার স্থানীয় একটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে যান আট মাসের সন্তানসম্ভবা মুকাদাস। সেখান থেকে তাকে ছলনা করে বাড়িতে নিয়ে যান মা। বাড়িতে নেয়ার পর মুকাদাসকে তার বাবা আরশাদ এবং ভাই আদিল নিষ্ঠুর নির্যাতন করে। পরে মা গলায় ছুরি চালিয়ে তাকে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় মুকাদাসের বাবা, মা ও ভাইসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বাবা আরশাদ গ্রেফতারও হয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাদিম জানিয়েছেন, মুকাদাস হত্যার ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে মুকাদাসের স্বজনদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এ ঘটনার সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত চলবে।
এদিকে মুকাদাসের দেবর শফিক পুলিশকে বলেছেন, পরিবারের অমতে বিয়ে করায় প্রথমে মুকাদাসকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। তবে পরিবারের জন্য বদনাম বয়ে এনেছে অভিযোগ করে তারা তাকে হত্যাই করে ফেললো।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করার ঘটনাকে কনের পরিবারের জন্য অসম্মানজনক মনে করা হয়। এ কারণে পরিবারের সম্মান রক্ষায় অমতে বিয়ে করা সন্তানকে হত্যার ঘটনা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়।
সম্মান রক্ষার এই হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানে ভয়াবহ সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে। গত বছর এক হাজার ১শ’জনকে এ কারণে প্রাণ হারাতে হয়েছে। পরিবারের সম্মানের জন্য সন্তান হত্যাকে হারাম ও ক্ষমার অযোগ্য গোনাহ ঘোষণা করে গত ১২ জুন পাকিস্তানের সুন্নি ইতেহাদ কাউন্সিল। ফতোয়ায় বেরলভি মতবাদের অনুসারি ৪০ জন আলেম স্বাক্ষর করেছেন।