

এস আই মুকুল, ভোলা প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদের মধ্যে জ্বালানী গ্যাস অন্যতম। যা মানুষের দৈনিন্দন কাজসহ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। এই প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎস বিভিন্ন জেলায় থাকলেও দৈনিন্দন কাজে ব্যবহার থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। ঠিক তেমন চিত্র দেখা যায় ভোলা জেলার দক্ষিণাঞ্চলে। জেলায় শাহাবাজপুর নামে একটি গ্যাস ক্ষেত্র আছে। যাহা ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলায় অবস্থিত। আশির দশকে এই গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেলেও তা উত্তোলণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। এই গ্যাস উত্তোললের পরেও সরকারীভাবে গ্যাস সংযোগ পাইনি গ্যাস ক্ষেত্রের আসপাশের এলাকাসহ সংশ্লিষ্ট পাঁচটি উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার। সরকারীভাবে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকলেও নিজস্ব উদ্দোগে কিছু সংখ্যক লোক উক্ত জ্বালানী গ্যাস দৈনিন্দন কাজে ব্যবহার করে আসছে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায় টিউওবওয়েল স্থাপন করে তার মাথায় সিলিন্ডার লাগিয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাসাবাড়ীতে গ্যাসের চুলার সাথে সংযোগ দিয়ে জ্বালানী হিসাবে এই গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। এতে যেমন সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার অভাবে গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। তেমনি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। প্রায় ৪ বৎসর আগে শাহাবাজপুর গ্যাস ফিল্ডে কুপ খননের পর উত্তোলিত গ্যাস সুন্দবন গ্যাস কোম্পানীর মাধ্যমে ভোলার পৌরসভায় মাত্র ২০ কি.মি এলাকায় আবাসিক সংযোগ দেওয়া হয়। ব্যপক চাহিদা থাকায় ভোলার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে নতুন করে শহরের পৌর এলাকায় আরও ২০ কি.মি গ্যাস লাইন টানা হয়। অন্যদিকে ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুদের কারণে ইতিমধ্যে গ্যাস ভিত্তিক দুইটি বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়ে উঠেছে। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানী গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য জমি ক্রয় করছে। শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ম্যানেজার সাইয়েদ মোঃ কবির সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন এই প্লানটিতে বর্তমানে ৪টি কুপ রয়েছে। ৩টি কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলণ করা হলেও সাময়িক ত্রুটির জন্য দুইটি কুপ থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে ৪৪ এমএমসিএফটি গ্যাস বৈদ্যুতিক পাওয়ার প্লান্ট ও রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া আবাসিক গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ১ এমএমসিএফটির নিচে। উক্ত প্লান্টের ৪টি কুপ থেকে আগামীতে ৫৮ এমএমসিএফটি গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা যায় ৩৮২বিসিএফ (বিলিয়ন কিউবিক ফিট) গ্যাস মজুদ আছে। অন্যদিকে ২০১৪ সালে শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ত্রিমাত্রিক সাইসমিক সার্ভে করা হয়। তাতে ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু এর পরিমাণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এলাকার বিশিষ্ট জনদের সাথে কথা বললে তারা বলেন সরকারীভাবে আবাসিক ও ক্ষুদ্র বাণিজ্যিক গ্যাস লাইন সরবরাহ করা হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। ইহাতে অনেক লোকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।