

ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীতে কলেজছাত্রীদের ইভটিজিং করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিন জনকে পিটিয়ে আহত করেছে নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহত তিনজনকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে এই ঘটনায় ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহম্মদ তপু ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক ভূঁঞা রবিনকে জেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাহউদ্দিন ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখিতদের কেন স্থায়ী বহিস্কার করা হবে না তা আগামী ৩ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে জবাব দিতে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন সংগঠনটির জেলা সভাপতি সালাহউদ্দিন ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার। জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠন বহির্ভূত কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় তাদের সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
তবে জেলা কমিটি তাদের আওতাধীন ইউনিট বাতিল কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বহিস্কার করতে পারে কিনা এনিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে দ্বিধাদ্বন্ধ রয়েছে। ছাত্রলীগের জেলা কমিটির শীর্ষ অনেক নেতাই সাময়িক বহিস্কারের বিষয়টি মানতে নারাজ। তারা জানান, কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান ছাড়া সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউকে জেলা কমিটির বহিস্কারের এখতিয়ার নেই।
বহিস্কারের খবর জানাজানি হলে কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও অগঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তোলপাড় চলছে।
এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সাময়িক বহিস্কারের কথা বলা হলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা কমিটি কাউকে বহিস্কার কিংবা শাখা বিলুপ্ত করার কোন সুযোগ নেই।
সংগঠন সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে কলেজ শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করায় পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটুর সাথে পৌরসভা প্রাঙ্গণে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ড হয়। এ ঘটনার জের ধরে পিটু কয়েকজন সহযোগী নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়। ফের ইভটিজিং করায় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সাথে পিটুর উত্তপ্ত বাকবিত-া হয়। উভয়পক্ষের হাতাহাতির একপর্যায়ে পিটু ও তার সহযোগীদের পিটিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত পিটু ও তার দুই সহযোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপর আহতদের মধ্যে জয় নামে একজনের নাম জানা গেছে।
ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক ভূঞা রবিন সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, ঘটনার সময় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমদ তপুসহ তারা জেলা ছাত্রলীগ কার্যালয়ে ছিলেন। কলেজ শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করায় পিটু সাধারণ ছাত্রদের হামলার শিকার হয় বলে তিনি শুনেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রলীগ নেতা সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, ‘ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটুর বিরুদ্ধে পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টারে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ইভটিজিং ও আধিপত্য বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে পিটু দীর্ঘদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।”
সংগঠনের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পৌরসভা প্রাঙ্গণে পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটুর উপর হামলার ঘটনায় সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমদ তপু ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক ভূঞা রবিনকে অভিযুক্ত করে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। উল্লিখিতদের কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তা আগামী ৩ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে জবাব দিতে কারণ দর্শানো নোটিস দেয়া হয়েছে।
তবে পিটুর উপর হামলার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্তার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক ভূঞা রবিন।
তিনি জানান, ঘটনার সময় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমদ তপুসহ তারা জেলা ছাত্রলীগ কার্যালয়ে ছিলেন। কলেজ শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করায় পিটু সাধারণ ছাত্রদের হামলার শিকার হয় বলে তিনি শুনেছেন।
তবে তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।