

সময়ের কণ্ঠস্বর, নোয়াখালী: সদ্য অনুমোদন পাওয়া বেগমগঞ্জ উপজেলা, চৌমুহনী পৌরসভা ও চৌমুহনী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের কর্মী, বিবাহিত ও অছাত্ররা এমনটাই অভিযোগ করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
গত ১ মে এই বিতর্কিত কমিটি অনুমোদন দেয় নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ। যদিও এই কমিটিগুলো ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি স্থগিত করে রেখেছিল।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি যদি কোন জেলা উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত অথবা স্থগিত করে রাখে তাহলে তা আবার কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন বা নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সে অবস্থায় থাকে সাংগঠনিক নিয়মে।
সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামোর বিরুদ্ধে যে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে তার মধ্যে বেগমগঞ্জ উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয় বিবাহিত তৌহিদুল ইসলাম রাতুলকে। যিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভার নাগরিক, তার এনআইডি নাম্বার ও ভোটার আইডি যাচাই করে এ তথ্য জানা যায়।
কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয় রাহাত চৌধুরীকে। যিনি গত ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল এবং ২০২০ সালের চৌমুহনী পৌরসভার নির্বাচনে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী খালেক সাইফুল্লার ভোটের সরাসরি অংশগ্রহণ করে নৌকার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেন।
এছাড়া যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির আন্দোলনের মিছিল থেকে তাকে আটক করা হলেও থানা থেকে অদৃশ্য শক্তিতে মুক্তি পায়। রাহাত চৌধুরীর বাবা স্থানীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণ এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন সে সূত্রে সংসদ সদস্যের ছেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জিহান আল রশিদের সম্পর্ক হয় এবং বিশ্বস্ত হয়ে উঠেন।
গত এক বছর আগে তাঁকে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করলে তৃণমূলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এরপরে এক বছরের মাথায় এখন তাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করেন যাতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।
চৌমুহনী পৌর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয় মাকসুদুর রহমানকে তার ছাত্রত্ব নেই। বিবাহিত একাধিক নারী কেলেঙ্কারি ও মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক করা হয় সাইফুল ইসলামকে। তারও ছাত্রত্ব নেই এবং বিবাহিত একাধিকবার মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত।
চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয় আব্দুল্লাহ আল মামুন হুমায়ুন কে। সে কলেজের ছাত্র নয় এবং চৌমুহনী পৌরসভার গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক এর বিরুদ্ধে মোবাইল মার্কা প্রতীকের সমর্থনে সরাসরি ভোটে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও নতুন এক কমিটিতে অছাত্র বিবাহিত, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিভিন্ন মামলার আসামি রয়েছে।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এবিএম জাফর উল্ল্যাহ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেন ফয়সাল ও সাধারণ সম্পাদক আবু বাকর টিপু এবং জেলা আওয়ামী লীগ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা জানান, নতুন গঠিত এই কমিটি সর্ম্পকে আমরা আবগত নয় আমাদের সাথে কোন আলাপ আলোচনা করা হয়নি। যাদের নামে কমিটি করা হয়েছে তারা অনেককেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে কখনো দেখিনি দলীয় সভা সমাবেশে তাদের অংশগ্রহণ দেখা যায়নি। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
এছাড়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, ২০১৭ সালের বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কমিটিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করে আবারও তৃনমূল ছাত্রলীগকে শক্তিশারী করার জন্য আহবান করছি।