

সাখাওয়াত হোসেন জুম্মা, বগুড়া প্রতিনিধি: বাঙালি নদীর ভাঙনে শাখা নদীর উপরে নির্মিত সেতুর দক্ষিণ পাশের সংযোগ সড়ক ধসে যায়, দীর্ঘ ১০ বছর অতিবাহিত হলেও সংস্কারবিহীন হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালারতাইড় সেতুটি। এর প্রেক্ষিতে ওই সংস্কারবিহীন ভাংগা সেতুর সঙ্গে বাঁশের সাঁকো লাগিয়ে সাধারণ মানুষ এবং মোটরসাইকেল কিছুটা চলাচল করতে পারলেও অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এর ফলে ওই এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহন নিয়ে বিপাকে পড়ে দ্রæত সেতুটি নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলারতাইড় গ্রামের কালারতাইড় পাড়ায় ১৯৯৭ সালে বাঙালির শাখা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। জনবহুল এলাকার ওই সেতুর উভয় পাশে পাকা সড়ক রয়েছে। দক্ষিণ পাশে রয়েছে শোলারতাইড়সহ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের সহস্্রাধিক মানুষ সেতু দিয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। ২০১২ সালে বাঙালি নদীর ভাঙনে সেতুর দক্ষিণ পাশের সংযোগ সড়ক ধসে যায়। ফলে সেতুর দক্ষিণ পাশের জনগণ কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কুতুবপুর হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।
ফলে ওই সেতুটি চলাচলের একমাত্র পথ হওয়ায় কয়েক বছর আগে সংস্কারবিহীন সেতুর ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন গ্রামবাসী। এরপর থেকেই অদ্যাবধি ভূক্তভোগীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। দীর্ঘদিনেও ওই সেতুর সংস্কারকাজ না হওয়ায় সেতুর দুই পাশের রেলিংও ভেঙে গেছে। কখনও কখনও ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করলেও অন্যান্য সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ গেছে।
উপজেলার শোলারতাইড় গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মোছাদ্দেক হোসেন, এনজিওকর্মী মোহাম্মদ আলী জানান, আগে ওই সেতু দিয়ে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতো। সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর থেকে শুধু মোটরসাইকেল চলাচল করে।
সেতু এলাকার ভূক্তভোগীরা আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা ওই সেতুটি পুনরায় নির্মাণের আশ্বাস দিলেও পরে ভুলে যান। সেতুটি সংস্কার না করায় গ্রামবাসী ১০ বছর ধরে উৎপাদিত কৃষিপণ্য অতিরিক্ত ভাড়া ও সময় ব্যয়ে বিকল্প পথে বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যান। তারা সেতুটি সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘কালারতাইড় সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় উপজেলার কাজলা, ছোট কুতুবপুর এবং বৃহৎ শোলারতাইড় গ্রামের শত শত জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’ সেতু নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করেছেন বলে দাবি করেন ওই চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী তুহিন সরকার বলেন, ‘ কালারতাইড় সেতুটি প্রায় অকেজো হয়ে পড়ায় নতুন করে নির্মাণের চেষ্টা চলছে। প্রায় আড়াই মাস আগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন শেষে সেখানে ৬৬ মিটার আরসিসি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে নকশার কাজ শেষ হয়েছে। নকশা অনুমোদন হয়ে আসলেই টেন্ডার আহবান করা হবে।’