

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার: প্রায় এক বছর আগে একই এলাকায় রাতের অন্ধকারে ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে নুরুল হুদা নামে রামু কলেজের এক ছাত্রকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। যে ঘটনার সাথে নিহত ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দীনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে আসছিল নিহত নুরুল হুদার স্বজনরা। আর এই ঘটনার জের ধরে হঠাৎ সামনে এসে সিএনজি অটোরিকশা আটকানো হয় ফয়সালের। এরপর কুপিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিটের খুন করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আর এতে আজিজ সিকদারের নেতৃত্বে অংশ নেয় ১৫ থেকে ২০ জন।
বুধবার (৬ জুলাই) সকালে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল হত্যার প্রধান আসামী আজিজ সিকদারের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে র্যাব-১৫ এর উপঅধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মেহেদি এই তথ্য জানান।
ঘটনার পরপরই র্যাব অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামী আজিজ সিকদার ও ফিরোজ আলমকে আটক করে। তাদেরকে আটকের বিষয়ে বুধবার সকালে ব্রিফিং করে র্যাব। সেখানে এই তথ্য জানানো হয়।
আটক আজিজ সিকদার খুরুশকুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মৃত বাঁচা মিয়া সিকদারের ছেলে এবং ফিরোজ আলম একই এলাকার সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে।
মেজর মঞ্জুর মেহেদি জানান, এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘবদ্ধভাবেই করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত হত্যার মূল উদ্দেশ্য সেটি জানা যায়নি। এই হত্যার সময় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো উদ্বারের চেষ্টা চলছে।
তিনি জানান, আজিজ ও ফিরোজ প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো অনেকের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে জানতে পারি। তাই এ বিষয়টিও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক আসামীদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
গত রোববার কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন থেকে ফেরার পথে কুপিয়ে খুন করা হয় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল উদ্দিনকে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে সদর মডেল থানায় নিহত ফয়সালের বড়ভাই নাছির উদ্দীন বাদী মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করা হয়। এতে প্রধান আসামী আসামী করা হয় আজিজ সিকদার ওরফে আজিজ (৩৭)। এছাড়াও অন্য আসামীরা হলেন, খুরুশকুল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মধ্যম ডেইলপাড়া এলাকার সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে ফিরোজ আলম (৩৬), বাঁচা মিয়া সিকদারের ছেলে জহিরুল হক ওরফে জহির (৪০), মনিউল হকের ছেলে শামসুল হুদা সিফাত (২৫), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে মো. আরিফ ওরফে ধইল্যা (৪৫), ফজল হক সিকদারের ছেলে রফিক (৫০) ও দিদার (৩০), মনিউল হকের ছেলে একরামুল হুদা ইমন (২৪), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে ফরিদুল আলম (৫০), মনিউল হকের ছেলে বদরুল হুদা (২২), ফরিদুল আলমের ছেলে ফাইরুজ আলম ওরফে লেফটা (২৪), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে বাক্কুইল্যা (৪৮), জহিরুল ইসলাম বাক্কুইল্যার ছেলে মো. তারেক (২৪), রফিক সিকদারের ছেলে রিয়াদ সিকদার (২৫), ফরিদুল আলমের ছেলে মো. মুন্না (১৯), পেঁচারঘোনা এলাকার হাছান আলীর ছেলে মো. হামিদ (২৩) ও ফজল কাদেরের ছেলে মো. রিয়াদ (২৪)। ঘটনার দিন অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছিল।
এদিকে পুলিশের সামনে খুন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের অবহেলার অভিযোগ উঠলেও মামলার এজাহারে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।