

এস. এম. শাহাদাত হোসেন অনু, জবি: দুই ছিনতাইকারীকে ধরে প্রশংসায় ভাসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার। তবে তার ফোনটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বেশিরভাগ মন্তব্যকারী ওই ছাত্রীর সাহসিকতায় বাহবা দিয়েছেন।
এদিকে একজন ছাত্রী হয়ে একা দুজন ছিনতাইকারীকে পাকড়াও করার পরও পুলিশ তার মোবাইল ফোন সেটটি উদ্ধার করতে পারেনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই ছাত্রী।
মোবাইল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তেজগাঁও থানার ওসি অপূর্ব হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘থানায় দুজনকে (ছিনতাইকারী) ধরে দিলেও তিনি (ভুক্তভোগী) মামলা করতে রাজি হননি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ওই দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’
জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বাসে করে রাজধানীর মিরপুর থেকে পুরান ঢাকায় নিজের ক্যাম্পাস এলাকায় ফিরছিলেন। ফোনে কথা বলার সময় হঠাৎ কারওয়ান বাজার এলাকায় বাসের জানালার বাইরে থেকে এক ছিনতাইকারী তার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয়। সাথেসাথেই বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারীর পিছু নেয় শিক্ষার্থী। তাকে ধরতে না পেরে হতাশ হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন তিনি। প্রধান সড়কের পাশেই ইত্তেফাকের গলিতে দাঁড়িয়ে থাকেন শিক্ষার্থী। ঠিক তখনই আরেক ছিনতাইকারী অন্য মানুষের মোবাইল ছিনতাই করে পালানোর সময় তাকে ঝাপটিয়ে ধরেন শিক্ষার্থী। ছিনতাইকারীর মোবাইল কল লিস্ট থেকে তার সহযোগীকে ফোন করে কারওয়ান বাজার আসতে বলা হয়। সহযোগী আসলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় তাকে আটক করা হয়। আটক করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ফোন পাওয়া যায়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের (বন্যপ্রাণি শাখা) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সিয়াম জানান, আমরা মাস্টার্সের থিসিস কোর্সে হাতি গবেষণায় কাজ করছি। সেই কাজে মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে তানজিল বাসে বাসায় ফিরছিলাম। বিকেল সাড়ে ৫টায় কারওয়ান বাজার সিগনালে এমন ঘটনা ঘটে। পরে তেজগাঁও থানায় জিডি করি। থানায় ক্যাম্পাসের বড়ভাইরা যথেষ্ট হেল্প করেছে এবং মোবাইল উদ্ধারের আশ্বস্ত করেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার বলেন, আমার ফোনটা ছিনতাইয়ের সময় ফোনে কোন লক ছিলনা। আমার ফোনে ব্যক্তিগত অনেক ইনফরমেশন আছে। তারা ফোন ব্যবহার করে আমাকে ব্লাকমেইলের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি ফোনের চিন্তা করিনা, ব্লাকমেইলের চিন্তায় ঘুম আসছে না। আমি অনিরাপত্তায় ভুগছি। মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্ত আমি।
তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদ জানান, কালকে ছিনতাইকারীকে যেভাবে মেয়েটি ধরেছেন, সত্যিই সে একটা সাহসীকতার কাজ করেছেন। তিনি ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেনি জিডি করেছে, পরে পুলিশ বাদী হয়ে ছিনতাইকারীকে মামলা দিয়েছে। তাদের নামে একাধিক মামলা আছে। আমরা ফোনটি ট্রাকিংয়ে দিয়েছি। যখনই সিম ঢুকাবে আমরা লোকেশন জানতে পারবো। আশা করি শর্ট টাইমের মধ্যেই তার ফোনটি উদ্ধার করতে পারবো।
শিক্ষার্থী অনিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ওদের চক্রটি তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার এলাকায়। আর শিক্ষার্থী থাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। এদের চক্র ওখানে নেই। ইনসিকিউরড ফিল করার তেমন কিছু নেই। পুলিশ তার পাশে আছে।