কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষের গোলাগুলির ঘটনায় সৈয়দ আমিন নামের একজন নিহত এবং পৃথক আরেক ঘটনায় স্বামীর নির্যাতনে এক রোহিঙ্গা নারী নিহত হয়েছে।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে পৃথক সময়ে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ও সি ব্লক এবং বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, উখিয়া থানার সদ্য যোগদানকারি ওসি মো. শামীম হোসেন।
নিহত যুবক সৈয়দ আমিন কুতুপালং ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকের বাসিন্দা।
এছাড়া পৃথক ঘটনায় নিহত রোহিঙ্গা নারী উখিয়া উপজেলার বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে তথ্য দিলেও তার নাম ও পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি ওসি।
শামীম হোসেন বলেন, রবিবার রাতে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ও ডি ব্লকে আরসা ও আরএসও’র সন্ত্রাসী গ্রুপ অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। গোলাগুলিতে সৈয়দ আমিন নামের এক রোহিঙ্গা যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। পারে এপিবিএন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি হয় বলে জানা গেছে। তারপরও কারা, কি কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
নিহত রোহিঙ্গা যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান শামীম হোসেন।
এদিকে রবিবার রাতে উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বামীর মারধরে এক নারী নিহত হয়েছে জানান এ ওসি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যম কর্মিদের নিশ্চিত করতে পারেননি।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, গত সাড়ে ৮ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৫৬টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৬৮ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২১ জন আরসা সদস্য, ৩ জন আরএসও সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।
এর আগে সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর উখিয়ার বালুখালী (ক্যাম্প-৮) ও কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-২ ই) আরসা ও আরএসওর মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ছানা উল্লাহ (২৭) ও আহম্মদ হোসেন (৩৬) নিহত হন। দুজনই আরসার সদস্য ছিলেন।
গত ৩ অক্টোবর রাতে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় আরসার শীর্ষ কমান্ডার মো. ইউসুফ (৩৮) ও আরএসও সদস্য মো. আরাফাত নিহত হন।