বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় উত্তাল ছিলো নীলফামারীর সৈয়দপুর। এসময় পুলিশ-ছাত্র সংঘর্ষে খোয়া যায় পুলিশের একটি পিস্তল। এতে পুলিশ রোসানলে পরেন সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবির হোসেন জয়। পুলিশের নির্যাতনে আহত জয়, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান।
৮ দিন পুলিশের টর্চারে তাঁর বেঁচে থাকার স্বাদ কেড়ে নিয়েছে। ছেলের দূরাবস্থার বিচারের দাবি বাবা-মার। এক ফোটা পানির বদলে প্রস্রাব দিয়েছিলেন ওসি শাহ আলম। পুলিশি নির্যাতনে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন কলেজ শিক্ষার্থী আবির হোসেন জয়।
এ বিষয়ে কথা হলে আবির হোসেন জয় বলেন, আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়া নিচপাড়ার বাড়ি থেকে আটক করা হয় আমাকে । লন্ডভন্ড করা হয় ঘরের আসবাবপত্র। বিনা অভিযোগে ৩ দিন থানায় আটক করে আমার ওপর চালানো হয় অমানষিক নির্যাতন। নেয়া হয় রিমান্ডেও। দোষ শিকারে এনকাউন্টারসহ স্বজনদের ধরে এনে পতিতা বানানোর হুমকি দেয়া হয়। তৃষ্ণনায় বুকফাটা জয়কে পানির বদলে দেয়া হয় প্রসাব। এমন বর্বরতার বর্ণনা দেন জয়।
জয়ের মা জান্নাতি বেগম বলেন, আমার সন্তান নিরপরাধ তাকে নিয়ে গিয়ে যে নির্যাতন করা হয়েছে তাকে স্বাভাবিক পাচ্ছি না সে অনেক অসুস্থ ওরকম যেনো আর কোন সন্তান কে না করে আর কোন মায়ের বুক ফেটে না যায়, শেখ হাসিনা সরকার থাকলে আমার সন্তানকে আমি কখনো ফিরে পেতাম না এই নতুন সরকারের মাধ্যমে আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি ।
পুলিশের স্বৈরাচারী আচরণে সেদিন পাক হানাদার বানিহীকেও হার মানিয়েছে। মা-বাবার বুক খালি করা পুলিশদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়াসহ সন্তান নির্যাতনের বিচারের দাবি পরিবারের। প্রশাসন অস্ত্রের ঝনঝনানিতে সেই দিন আতঙ্কিত হন এলাকাবাসী ও স্বজনরা। একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের ওপর পুলিশের নির্মমর্তা মেনে নিতে পারছেন না তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর সবকিছুই নতুন করে পরিবর্তন হচ্ছে। তবে জয়ের মানসিক ও শারীরিক ভাবে স্বাভাবিক হওয়ার সবপ্ন দেখেন বাবা-মা। অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার। আর যুবক জয়কে বিনা অভিযোগে নির্যাতনের বিষয়টি মানবাধিকার লংঘনসহ শিশু আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়েছে পুলিশ, দাবি আইন বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নীলফামারীর সৈয়দপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দপুর সার্কেল কল্লোল রায় ও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহ আলমের ভূমিকা নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। অস্ত্র উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিক্ষার্থীকে তুলে এনে বেদম মারপিট করেন। এ নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে গত শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মকবুল হোসেনের সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের প্রহ্যাতার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার আদেশ দেওয়া হয়।
এইচএ