বিপজ্জনক বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের চেয়ে বেশি মানুষ চিরতরে হারিয়ে গেছে রহস্যঘেরা আলাস্কা ট্রায়াঙ্গল থেকে। আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে রহস্যময়ভাবে হারিয়ে যায় যাত্রীবাহী জাহাজ, উড়োজাহাজ। এদিকে, ১৯৭০ সাল থেকে আলাস্কা ট্রায়াঙ্গল এলাকায় নিখোঁজ হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। ভিনগ্রহের বাসিন্দা ইউএফও আর বিগ ফুট সেখানে দেখা যাওয়ার নানা কাহিনি রয়েছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতোই এই অঞ্চলের শক্তিশালী তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও ভিনগ্রহের প্রাণীদের এর জন্য দায়ী করেছেন কেউ কেউ।
আলাস্কা ট্রায়াঙ্গলের অঞ্চলটির দক্ষিণে দুটি স্থান হচ্ছে জুনাও এবং অ্যাংকোরেজ এবং উত্তরে উপকূলীয় শহর উটকোয়েগভিগ অবস্থিত। ত্রিভুজাকৃতির এলাকাটি আলাস্কা ট্রায়াঙ্গল নামে পরিচিতি পেয়েছে। আলাস্কার অন্য সব অঞ্চলের মতো এখানেও জনবসতি কম। কিন্তু এখানে মানুষ চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার হার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঞ্চলের দ্বিগুণের বেশি।
অসংখ্য অস্বাভাবিক এবং রহস্যময়ী ঘটনার গল্পও শোনা যায় এই এলাকায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭০ সাল থেকে গত ৫৪ বছরে জায়গাটি থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছেন ২০ হাজার মানুষ। অবশ্য এই সংখ্যা নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।
রহস্যঘেরা অতিপ্রাকৃত এই এলাকাটি নিয়ে প্রচলিত আছে নানা ধরনের ভয়ার্ত গল্প। এখানে থাকতে পারে ‘সাসকুয়াচ’ বা ‘বিগফুটে’র মতো প্রাণীদের বিভিন্ন শহরে আতঙ্ক ছড়ানোর গল্পও। যেমন কেনাই পেনিনসুলার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত পোর্টলক নামের এক শহরকে ঘিরে জন্ম নেওয়া সেই কাহিনিটির উদাহরণ টানা যায়। শহরটি ১৯৫০- এর দশকে পরিত্যক্ত হয়। কথিত আছে ‘নানতিনাক’ নামের একটি অচেনা প্রাণী শহরের বাসিন্দাদের আক্রমণ করে মেরে ফেলছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও আলাস্কা ট্রায়াঙ্গল থেকে অনেক মানুষ রহস্যজনকভাবে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও আলাস্কার কেবল এক শতাংশ এলাকায় মানব বসতি আছে, তারপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যেকোনো রাজ্যের তুলনায় এখানে মানুষ নিখোঁজের হার বেশি। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের তথ্য অনুয়ায়ী, এই সংখ্যা প্রতি লাখে ৪২ দশমিক ১৬ জন। এদিক থেকে এর পরের অবস্থানে রয়েছে অ্যারিজোনা। সেখানে সংখ্যাটি লাখে ১২ দশমিক ২৮। আর দেশটির অন্য রাজ্যে এমন রহস্যজনক নিখোঁজের গড় হচ্ছে সাড়ে ছয়।
প্রথম যে নিখোঁজের ঘটনা আলাস্কা ট্রায়াঙ্গলের প্রতি মানুষের মনে কৌতূহলের জন্ম দেয় সেটি ঘটে ১৯৭২ সালে। মার্কিন কংগ্রেসম্যান হেল বোগস, নিক বেগিচ, তাদের একজন সহকারী এবং পাইলট সন্দেহভাজন উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পরে নিখোঁজ হন। অ্যাংকোরেজ থেকে জুনাও যাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু ৪০ দিনের অনুসন্ধান অভিযানে কারও দেহ তো পাওয়া যায়ইনি, এমনকি মেলেনি উড়োজাহাজটির কোনো ধ্বংসাবশেষ।
এবি