এইমাত্র
  • এস আলম গ্রুপের সব সম্পত্তির তালিকা হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ
  • নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে যুবলীগ নেতার মৃত্যু
  • বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের সূচি প্রকাশ
  • মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৩ জন সদস্যকে বিজিপির কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি
  • দিল্লির কোনো গোলামকে দেশের জনগণের ওপর রাজত্ব করতে দেয়া হবে না: রিজভী
  • ব্যাংকিং-জ্বালানি খাত সংস্কারে আর্থিক সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএফসি
  • কারামুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি ডিএমপি কমিশনারের
  • লক্ষ্মীপুরে ভিটে মাটি রক্ষার দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন
  • ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু, ৭ দিনে কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ
  • চাকরিতে পুনর্বহাল ও কারাাবন্দী বিডিআরদের মুক্তির দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন
  • আজ রবিবার, ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    আইন-আদালত

    ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা নির্ধারণে আইনি নোটিশ

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পিএম

    ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা নির্ধারণে আইনি নোটিশ

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পিএম
    ছবি: সংগৃহীত

    বাংলাদেশের জনগণের জন্য প্রতি কেজি ইলিশ মাছের খুচরা বিক্রয় মূল্য সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা নির্ধারণ চেয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

    রবিাবর (২৯ সেপ্টেম্বর) ডাকযোগে ও ই-মেইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রকের কাছে এ নোটিশ পাঠান আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

    নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ইলিশ মাছের পাইকারি ও খুচরা বাজার মনিটরিং করা, ইলিশ মাছ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোর বাস্তবতা মেনে ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে একটি অভিন্ন সময়ে বা কাছাকাছি সময়ে ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার বিষয়ে লিখিতভাবে ভারতকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে যেকোনো দেশে ইলিশ মাছ রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে যেন ইলিশ মাছ রফতানি করা না হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হবে।

    নোটিশে বলা হয়, এই ইলিশ মাছ বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা অনেক বেশি বিস্তৃত। ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় প্রচুর ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন নদীতেও ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।

    ইলিশ মাছ সাগরের মাছ হলেও ডিম পাড়ার জন্য যখন ইলিশ মাছ পদ্মা নদীতে আসে তখন ইলিশ মাছ পদ্মা নদীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে পরিপুষ্ট হয় এবং প্রাকৃতিকভাবে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে উঠে।

    যেহেতু ইলিশ মাছ সাগরের মাছ তাই এই মাছ পুকুরে বা অন্য কোনো স্থানে চাষ করতে হয় না। ফলে ইলিশ মাছের কোনো প্রকার উৎপাদন খরচ নাই। এটি শতভাগ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মাছ। বাংলাদেশে রুই, কাতলাসহ যেসব মাছ চাষ করা হয় তা বাজারে কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকাতে খুচরা বিক্রয় করা হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রফতানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুত করে রাখে।

    বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রফতানি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রফতানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ জাতীয় মাছ হওয়া সত্ত্বেও বাজারে গিয়ে পদ্মা নদীর ইলিশ পায় না। ফলে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশ মাছের মতো সুস্বাদু নয়।

    বাংলাদেশে ইলিশ সুরক্ষায় তিন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞা থাকে। এর মধ্যে অক্টোবরে ২২ দিন। এ সময় মা মাছের ডিম ছাড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর বাচ্চা হলে তার সুরক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দুই মাস নিষেধাজ্ঞা থাকে। মাছের বৃদ্ধির জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই আবার এক দফায় সাগরে নিষেধাজ্ঞা থাকে।

    অন্যদিকে ভারতে নিষেধাজ্ঞা থাকে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত। ১৫ জুন শুরু হয় তাদের মাছ ধরা। বাংলাদেশে ইলিশ মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার সুবিধা পাচ্ছেন ভারতের মৎস্যজীবীরা। এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে চলা নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতে ব্যাপকভাবে ইলিশ মাছ ধরা হয়। এতে বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়ে।

    সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোর বাস্তবতা মেনে ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে একটি অভিন্ন সময়ে বা কাছাকাছি সময়ে ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা তাই অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে এখনো ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বাংলাদেশ। নোটিশ প্রাপকবৃন্দদের দায়িত্বে অবহেলার ফলে বাংলাদেশের জনগণ কম দামে বড় আকারের সুস্বাদু পদ্মার ইলিশ মাছ তথা জাতীয় মাছ খাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

    লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোতে জাতীয় মাছ ইলিশের দাম বাংলাদেশের জনগণের ক্রয়সীমার বাইরে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হবার পর বিগত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ঢাকার কারওয়ান বাজারে এবং বিগত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ফরিদপুরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর থেকে অভিযান পরিচালনা করে। সেই সময় হঠাৎ করেই অভিযান পরিচালনার স্থানে দাম কমে যায় ইলিশ মাছের।

    তবে জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজস করে এক শ্রেণির মৎস ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে মনোপলি কর্মকাণ্ড করলেও নোটিশ প্রাপকবৃন্দরা প্রতি কেজি ইলিশের সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশের জনগণকে সুলভে জাতীয় মাছ ইলিশ খাওয়ানোর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি।

    লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরও বলেছেন, বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রতি কেজি ইলিশ ১০ মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ১৮০ টাকা দরে রফতানি শুরু হয়েছে। ভারতে যেই দামে ইলিশ মাছ রফতানি হচ্ছে, তার চেয়ে প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৯০০ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে বাংলাদেশের ভোক্তাদের।

    ইলিশ রফতানির পরিপত্রটি কয়েক বছর আগে তৈরি করা। এছাড়া বাংলাদেশের রফতানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী, ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রফতানিযোগ্য কোনো পণ্য নয়। এই মাছ রফতানি করতে চাইলে যথাযথ শর্ত পূরণ করতে হবে। তাই ইলিশ মাছ রফতানির ক্ষেত্রে দেশীয় বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে রফতানি মূল্য নির্ধারণ করা উচিত ছিল।

    বাংলাদেশের জনগণ যেখানে প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ১৯০০-২৪০০ টাকায় খুচরা বাজারে কিনছে সেখানে ভারতে রফতানি মূল্য কীভাবে ১১৮০ টাকা হতে পারে? এর ফলে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই ক্ষেত্রেও নোটিশ প্রাপকরা চরম দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতিসাধন করেছেন।

    বিগত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। কিন্তু নোটিশ প্রাপকবৃন্দদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকান্ডের ফলে বাংলাদেশের জনগণ সুলভে বড় আকারের পদ্মার ইলিশ মাছ খেতে পারার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবার পাশাপাশি ভারতে কম মূল্যে পদ্মার ইলিশ মাছ রফতানির ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

    তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নোটিশ পেয়েছেন কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…