সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে উর্দ্ধতন উপ-সহকারি (পথ) প্রকৌশলী রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল নেতা মো. শফিকুল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্ঠা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও মহাপরিচালক রেলপথ মন্ত্রণালয়, সচিব রেলপথ মন্ত্রনালয়, মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) চট্টগ্রাম, প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) চট্টগ্রাম ও ঢাকা দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে অনুলিপি প্রেরণ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে গোডাউন থেকে বিভিন্ন সময় রেলওয়ের পুরাতন ডগেসফ্রাই, ডকপিন, কাটারেলসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও মালামাল বিক্রয় করেন পিডাব্লিউআই রেজাউল করিম। গত ২৫ আগস্ট রেলওয়েমেইট ও ওয়েম্যানদের উস্কানি দিয়ে রেলপথ অচল করে আন্দোলন করার জন্য কর্মচারীদের রেলভবনে পাঠান রেজাউল। সে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে।
পিডাব্লিউআই রেজাউল করিম কিশোরগঞ্জে যোগদানের পর থেকে প্রত্যেক গেইটম্যানের কাছ থেকে প্রতিমাসে বাধ্যতামূলক ১ হাজার টাকা চাঁদা ধার্য্য করেন। কেউ দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুরু হয় অ্যাবসেন্ট, গেইট বদলিসহ চাকরি থেকে অব্যহতি দেওয়ার হুমকি। ই-৩৬, ই-৩৪, ই-২৭, এবং ই-০৭ গেইট প্রকল্পে গেইট কিপার না থাকায় স্থানীয় অস্থায়ী গেইট কিপার দিয়ে কাজ পরিচালনা করতেন কিন্তু স্থানীয়রা মাসিক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রেজাউল করিম তার নিজ এলাকা মানিকগঞ্জ থেকে লোকবল নিয়ে আসেন এবং প্রতিজনের কাছ থেকে তিন লক্ষ নগদ টাকার বিনিময়ে কাজে যোগদান করান।
এছাড়াও গত ২০২৩ সনের ২৪ ডিসেম্বর নতুন যোগদানকৃত রোমান (ওয়েম্যান) নরসিংদী সেকশনে একদিন ডিউটি করার পর আর কর্মস্থলে ফিরেনি। ৩ মাস পর ১ লাখ টাকার বিনিময়ে পিডাব্লিউআই রেজাউল করিম কিশোরগঞ্জ সেকশনে ৭নং গ্যাং-এ অস্থায়ী টাইমকিপার হিসেবে যোগদান করান।
লিখিত অভিযোগে আরোও উল্লেখ করা হয়, প্রকল্প গেইটকিপার মোঃ ইমরান ও মাহবুব সরকারী কাজ না করে পিডাব্লিওআই রেজাউল করিমের ইচ্ছে অনুযায়ি তার নিজ বাসায় কাজ করাচ্ছেন।
পিডাব্লিউআই রেজাউল করিম ও বর্তমান রেলওয়ে শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা (অস্থায়ী হেমারম্যান) এর মাধ্যমে ঠিকাদারের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন। সেই সঙ্গে রেললাইনের আশেপাশের রেলওয়ের ভূমিতে মাটি ভরাট ও গাছ বিক্রয় এবং ফিসারী খননের টাকা আত্মসাৎ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ে প্রকৌশলী রেজাউল করিম কিশোরগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহেদ মালিকের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে। রেলওয়ে স্টাফরা রেজাউল করিমের দৌরাত্মের কাছে অসহায় হয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতেও ভয় পায়।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারি (পথ) প্রকৌশলী রেজাউল করিমের সঙ্গে ফোনে কথা হলে জানান, আমার বিরুদ্ধে তো অনেকেই অভিযোগ দিচ্ছে তদন্ত করে যা করার করতে থাকেন।