কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি) থেকে ২৪ জাপানি সৈনিকের সমাধি সরিয়ে নেওয়ার খনন কাজ শেষ হয়েছে। ২৪টি সমাধির মধ্যে ২৩টিতে সৈনিকদের কিছু কঙ্কাল, মাথার খুলি ও দেহাবশেষের আলামত মিলেছে। তবে অপর একটি সমাধি থেকে কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত প্রায় ছয় একর জমিতে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি। এখানে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বার্মায় ব্রিটিশদের সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ১৩টি দেশের ৭৩৮ সেনাকে সমাহিত করা হয়।
৮১ বছর পর সম্প্রতি ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি) থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জন জাপানি সেনার দেহাবশেষ সরিয়ে নিজ দেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাপান। গত ১৩ নভেম্বর ওই ওয়ার সিমেট্রিতে খনন কাজ শুরু হয়। যা আগামী ২৪ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে খনন কাজ শেষ করা হয়।
জাপান থেকে ৭ সদস্যের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ওই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নিতে আসেন। বিশেষজ্ঞ দলটির ৭ জনের মধ্যে ছয়জন জাপানের ও একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের সহায়তা করছে বাংলাদেশ সরকার।
জাপানের ফরেনসিক দলকে সহায়তাকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক বলেন, ৮১ বছর পরও সৈনিকদের কিছু কঙ্কাল, মাথার খুলি ও শরীরের বিভিন্ন অংশের বেশ কিছু হাড় আমরা পেয়েছি। প্রতিটি সমাধি কখনো যন্ত্রপাতি, কখনো হাতে সাবধানতার সঙ্গে খনন করতে হয়েছে। তবে একজনের সমাধিতে কিছু পাওয়া যায়নি।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, যে সমাধিতে কোনো আলামত মেলেনি ওই সৈনিকের বয়স খুব কম ছিল। ২৩ জনের সমাধিতে যতটুকু দেহাবশেষের মিলেছে আশা করা হচ্ছে, জাপানে নিয়ে গিয়ে ফরেনসিক টিম পরীক্ষাগারে একটি ইতিবাচক ফল পাবেন। তারাও এ বিষয়ে আশাবাদী।
এর আগে ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গিয়েছিলেন তার স্বজনরা। ফলে ৭৩৭ সৈনিকের দেহাবশেষ থেকে যায়। এই যুদ্ধসমাধি ক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন। প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনারসহ তাদের প্রতিনিধিরা এই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করেন।
এবি