শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিরল প্রজাতির প্রাণী গন্ধগোকুল ধরা পড়েছে।
মঙ্গলবার ( ১৮ ফেব্রয়ারি) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাগিচাপুর এলাকার কৃষকরা এটি আটক করেন। প্রাণীটির শরীর থেকে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে সেটি দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা।
বনবিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, বিরল এই প্রাণীটি মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের একটি তালগাছ থেকে নিচে নামছিল। এসময় স্থানীয় কৃষক সামছুদ্দিন অচেনা এই প্রাণীটিকে প্রথমে মেছো বাঘ ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা মিলে এটিকে আটক করে কবুতরের খাচায় বন্ধি করেন।
খবর পেয়ে এলাকার মানুষজন প্রাণীটিকে এক নজর দেখার জন্য ভির করেন। বিলুপ্ত প্রাণীটিকে কেউ বলেন তাল খাটাশ, কেউ ভোন্দর, আবার কেউ সাইরেল বলে অভিহিত করেন।
এদিকে, দুপুরের দিকে আটকের খবর পেয়ে বনবিভাগের লোকজন প্রাণীটিকে উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় বনবিভাগের লোকজন এসে দেখেন খাচায় এটি মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এলাকাবাসি ও বনবিভাগের লোকজনের ধারণা করছেন, খাচায় বন্ধি অবস্থায় উত্যক্ত করার কারণে গন্ধগোকুলটি স্ট্রোক করে মারা যেতে পারে। পরে এলাকাবাসির উপস্থিতিতে প্রাণীটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয।
বনবিভাগের এক কর্মী জানান, মূলত বনজঙ্গল ও পুরাতন এলাকার গাছপালায় প্রাণীটির আবাসস্থল। এর শরীর থেকে পোলাও চালের সুগন্ধ বের হয়। তাই এটিকে গন্ধগোকুল নামে ডাকা হয়।
স্থানীয় যুবক সাগর বলেন, আমরা এক কৃষকের মাধ্যমে খবর পেয়ে গন্ধগোকুলটি আটক করি। আটকের পর খাচায় বন্ধি করে রাখা হয়। বিরল প্রাণীটি এর আগে আমরা কখনই দেখি নাই। পরে ইউটিউবে সার্চ করে দেখলাম এটি গন্ধগোকুল নামে পরিচিত। দুপুরে বনবিভাগের লোকজন খবর শুনে প্রাণীটিকে নিতে আসার আগেই খাচায় ভিতরে মারা যায়।
বনবিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জকর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী বলেন, প্রাণীটিকে জীবিত উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে বনকর্মীদের পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমাদের লোকজন পৌছানোর আগেই গন্ধগোকুলটি মারা যায়। পরে সেটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
শেরপুর জেলার ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, এই প্রাণীটি যেহেতু নিশাচর প্রাণী তাই, হঠাৎ করে দেখলে অচেনা প্রাণী মনে করে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের সাথে এসব বন্যপ্রাণী সহ অবস্থান বিরাজমান রয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনে এ সকল প্রাণীকুলকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
এমআর