এইমাত্র
  • ঈদ সিনেমায় পাঁচ নায়িকার অভিষেক
  • 'অনুশোচনার মতো কিছুই নেই' শেখ হাসিনা চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে নুসরাত ফারিয়া
  • এবার ইসরায়েলের সঙ্গে পুনরায় যুদ্ধের ঘোষণা দিলো লেবানন
  • এক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবে না
  • পহেলা বৈশাখে নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ : রিজওয়ান হাসান
  • ১৫ বছরের নিচে হজে যেতে বারণ, যা বলছে ধর্ম মন্ত্রণালয়
  • সাংবাদিকদের নবম গ্রেডে বেতন ও যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাব
  • এবার লেবানন থেকে ইসরাইলে দফায় দফায় রকেট হামলা
  • ভিয়েতনাম থেকে তৃতীয় চালানে এলো ২৯ হাজার টন চাল
  • অনলাইন পোর্টালের জন্য গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের ৭ সুপারিশ
  • আজ রবিবার, ৮ চৈত্র, ১৪৩১ | ২৩ মার্চ, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    পুলিশের ‘কেরামতিতে’ নিরপরাধ বেশে মুক্ত ছাত্রলীগ নেতা

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪২ পিএম
    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪২ পিএম

    পুলিশের ‘কেরামতিতে’ নিরপরাধ বেশে মুক্ত ছাত্রলীগ নেতা

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪২ পিএম

    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টে ধরা পড়ছেন অপরাধীরা। তেমনি বিশেষ অভিযানে গত শনিবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ২ নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে ছাত্রলীগ নেতা মো. এনামুল হক এনাম (৩২) ও পরদিন (রোববার) উপজেলার কেরানীহাট এলাকা থেকে জহির আহমদ নামে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

    গ্রেফতার দুজনই ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম—১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক) আসনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছাতা প্রতীকের পক্ষে তার ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক সানির নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

    গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হলে ২০১৮ সালের ওই ঘটনায় আহত ভুক্তভোগী ও কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা সরওয়ার জামাল বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ২০ আগস্ট মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়। এতে ৩৪ নম্বর আসামি করা হয় কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কেঁওচিয়া আহমদ হোসেন সিকদার ছেলে মো. এনামুল হক এনামকে এবং ৩৬ নম্বর আসামি করা হয় একই ইউনিয়নের মাইজ পাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহির আহমদকে।

    গ্রেফতারের পর আইনের বিধান মেনে আদালতে সোপর্দ করা হয় দুজনকে। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা মো. এনামুল হক এনাম অস্বাভাবিক ‘দরদ’ পেলেন পুলিশের কাছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো ছাড়াই। অথচ তিনি থানায় বিস্ফোরক ও দণ্ডবিধি আইনে দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তবে একই মামলার আরেক আসামি জহির আহমদকে একই দিন যথাযথ প্রক্রিয়ায় ফরোয়ার্ডিং দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আদালত মামলা ছাড়া সোপর্দ করা আসামি এনামুলকে সঙ্গে সঙ্গে জামিন দিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া আরেক আসামি জহিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

    অভিযোগ উঠেছে, অনৈতিক লেনদেন করায় আসামি এনামুলকে বেআইনি প্রক্রিয়ায় চালান দেওয়া হয়েছে। আর অনৈতিক লেনদেন না করায় আসামি জহিরকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

    স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতারের পর থেকে দুজনের বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় দেনদরবার চলে। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় আসামি এনামকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো ছাড়াই ফৌজদারি কার্যবিধি ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হবে। যেন তার সঙ্গে সঙ্গে জামিন হয়ে যায়। আরেক আসামি জহিরকে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুজনকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে প্রেরণ করা হয়। এদিন জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি এনামকে সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেওয়া হয়। এ ছাড়া জহিরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

    আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পুলিশের হাতে গ্রেফতার এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দের সুযোগ নেই। তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেফতার দেখাতে হবে। কোনো মামলা না থাকলে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়, এটিই নিয়ম।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, ফৌজদারি মামলা বা অভিযোগে একজন ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়া মাত্র পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রথম কাজ তার নাম—ঠিকানা যাচাই করা। এরপর সেই তথ্য দিয়ে সিডিএমএস (ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ওয়েবসাইটে সার্চ দেওয়া। যেখানে আসামিদের মামলা ও গ্রেফতার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা থাকে। আসামি এনামুলের ক্ষেত্রে সাতকানিয়া থানার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ, সিডিএমএস যাচাই করলেই এনামুলের মামলাটি পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আসামি এনামুলের ফরোয়ার্ডিংয়ে মামলার বিষয়টি উল্লেখ করা দরকার ছিল।

    জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন যোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে জানতে পারেন।

    মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মুন্নাফ অনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এমনটি করা হয়েছে।

    তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…