রাশিয়ান সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে সন্ত্রাসী হামলা এবং বিক্ষোভে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর কন্টেন্ট অপসারণে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামকে ৭ মিলিয়ন রুবেল (৮০ হাজার ডলার) জরিমানা করেছে মস্কোর একটি আদালত। মঙ্গলবার খবর রাশিয়ার সংবাদসংস্থা তাস জানিয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মের কিছু চ্যানেল রাশিয়ার সরকারকে উৎখাতের উদ্দেশ্যে যানবাহনে সন্ত্রাসী হামলা এবং সরকার বিরোধী সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিল।
আদালতের নথির উদ্ধৃতি দিয়ে তাস জানায়, ‘টেলিগ্রাম মেসেঞ্জার তথ্য সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চরমপন্থী কার্যক্রমে আহ্বান জানানো চ্যানেলগুলো অপসারণে ব্যর্থ হয়েছে।’
তাস আরও জানায়, রাশিয়ার সরকারকে উৎখাত করতে বিরোধীদের আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিতে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর সহায়তায় রেলওয়ে পরিবহন লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছিল কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেল। তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি টেলিগ্রাম।
তাস আরও জানিয়েছে যে আদালতের নথিতে তালিকাভুক্ত কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেল রাশিয়ার সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণে অংশ নিতে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহায়তায় রেলওয়ে পরিবহন লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছিল। তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি টেলিগ্রাম।
দুবাই ভিত্তিক এবং রাশিয়ান-বংশোদ্ভূত পাভেল দুরভ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই প্ল্যাটফর্মের প্রায় ১ বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। এটি রাশিয়া, ইউক্রেন এবং অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
গত বছরের আগস্টে ফ্রান্স গ্রেপ্তার হন পাভেল দুরভ তিনি। টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রতারণা, অর্থ পাচার এবং শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি শেয়ার হওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তদন্তের পর তিনি দুবাইয়ে ফেরেন গত মার্চে।
বিগত দশ বছরে রাশিয়ায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর কারণে প্রচুর সাংবাদিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। টেলিভিশন (৯৮ শতাংশ) ও রেডিও (৭৯ শতাংশ) রাশিয়ার প্রধান সংবাদমাধ্যম হলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রতিদিন ৮৪ শতাংশ রুশ নাগরিক সংবাদ জানেন। ২০১২ সাল থেকে রাজনৈতিক তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে রাশিয়া। ২০২৪ সালে এই আইনের অধীনে ২ হাজারেও বেশি প্রশাসনিক মামলা এবং ২৭৩টি অপরাধমূলক মামলা হয়েছে।
২০২২ সালে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার বন্ধ হওয়ার পর লাখ লাখ রুশ নাগরিক টেলিগ্রাম ব্যবহার শুরু করেন। এটি এখন খবর ও রাজনৈতিক আলোচনা কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত ভকন্টাক্টে ও ওডনোক্লাসনিকি প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে।
এবি