এইমাত্র
  • যে কুমির ডেকে আনছেন তা আপনাদেরকেই খাবে: আসিফ মাহমুদ
  • ড. ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’, বিবিসিকে নাহিদ
  • দায়িত্ব ছাড়লেন জসীম উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম
  • সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলেন নাহিদ ইসলাম
  • ঢাকার মেয়র পদে লড়বেন হাসানাত-সাদিক কায়েম
  • ভারতের নিয়ন্ত্রিত নদীর পানি পাকিস্তান পাবে না: মোদি
  • দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে ঝড়ের কবলে বিমান
  • চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল: আইসিইউ অচল, জীবন ঝুঁকিতে রোগীরা
  • ওভাল অফিসে দ. আফ্রিকার প্রেসিডেন্টকে হেনস্তা করলেন ট্রাম্প
  • আজ শুক্রবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ | ২৩ মে, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    নোয়াখালীতে মসজিদের গেইট দখল করে বাণিজ্য!

    শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ পিএম
    শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

    নোয়াখালীতে মসজিদের গেইট দখল করে বাণিজ্য!

    শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

    নোয়াখালীর সদরে ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদের মূল গেইটের স্থানে অবৈধভাবে টং দোকান বসিয়ে মসজিদের উন্নয়ন কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

    নোয়াখালী সদরের সোনাপুরের পশ্চিমে পাক-কিশোরগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত চান্দ মিয়া হাজি জামে মসজিদের মূল ফটকের স্থানে টং দোকান দেয়া জবরদখলকারী আলমগীর হোসেন স্থানীয় ৬নং নোয়াখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি তার পেশিশক্তি দিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় দখলদারিত্ব করে মসজিদের উন্নয়ন কাজে বাধা দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।

    ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এই মসজিদের মুসল্লিরা ও এলাকাবাসীরা আলমগীরের এই জবরদখলের বিরুদ্ধে মৌন প্রতিবাদ জানালেও আলমগীর গং দের ভয়ে কেউ জোরালো প্রতিবাদ বা পদক্ষেপ নেয়ার সাহস করছে না। পুরো সমাজ এই আলমগীর গং দের ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে, অথচ দিবালোকের মতো সত্য যে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে মসজিদের নির্মাণ কাজে বাধা প্রদানের জন্য মসজিদের মূল ফটকের সামনে একটি টং দোকান বসিয়ে সবজি বিক্রির লেবাসে মসজিদ কমিটির কাছে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এই বিএনপি নেতা।

    এছাড়াও এলাকায় মানুষের সাথে অশালীন বাক্য বিনিময় দুর্ব্যবহারে পটু এই ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আলমগীর বিএনপি'র প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তার দাপটে সমাজের গণ্যমান্য সম্মানী ব্যক্তিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য আর গালিগালাজ করে গায়ের দিকে তেড়ে গিয়ে সম্মানহানি করতে দ্বিধাবোধ করেন না। সাধারণ মানুষের এমন অভিযোগের পরে বিএনপি'র শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা তাকে সতর্ক করলেও সে খোদ বিএনপি'র জেলা পর্যায়ের নেতাদের কথাও তোয়াক্কা করেন না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

    এদিকে মসজিদের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়ায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তিন মুখী রাস্তার মোড় কালীতারা টু সাহেবেরহাট রাস্তায় যান চলাচল ব্যবস্থা। ত্রিমুখী রাস্তা হওয়ার কারণে যানবাহন চলাচলে দারুন বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এই অবৈধ দোকান। যার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট ও ঘটছে হুটহাট দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে দ্রুত প্রতিকার চায় এলাকাবাসী।

    মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলমান থাকায় এ বিষয়ে অভিযোগ দাখিলকারী হিসেবে সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছি। অথচ এই একটি মাত্র লোক এই মসজিদের উন্নয়নের পথে অন্তরায়। অনেকের কাছে অভিযোগ করেছি বিষয়টি সুরাহার জন্য। কিন্তু কিছুতেই প্রতিকার মিলছে না। লোকটি অসভ্য প্রকৃতির হওয়ায় ভয়ে কেউ তাকে কিছু করার সাহস করে না। কিন্তু প্রশাসন তো আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি প্রশাসনের কাছেও তেমন সহযোগিতা মিলছে না।

    এদিকে অভিযুক্ত আলমগীরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কোন মসজিদের জায়গা দখল করিনি, আমি দোকান দিয়েছি জেলা পরিষদের সরকারি জায়গার উপর। আমাকে যদি জেলা পরিষদ উচ্ছেদ করে তবেই আমি সরে যাব।

    এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে সদ্য বিদায়ী মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। অভিযোগ করার পর দুই মাস ব্যাপী জেলা পরিষদের কার্যালয়ে ঘুরাঘুরির পর ১৬ এপ্রিল দোকানটি উচ্ছেদের জন্য আলমগীর হোসেনকে সাত দিনের সময় দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। কিন্তু এর আগে এ বিষয়ে একটি খসড়া চিঠি তৈরি করলেও হঠাৎ অজ্ঞাত কারণে নির্বাহী কর্মকর্তা তাতে স্বাক্ষর না করে স্থবির করে রাখা হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। অবশেষে আলমগীর হোসেনকে নিজ উদ্যোগে সাত দিনের মধ্যে দোকানটি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে যে আদেশ জারি করা হয়েছে সেই আদেশ অমান্য করে সাত দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সে দোকানটি সরিয়ে নেয়নি। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে জেলা পরিষদ তার আদেশ বাস্তবায়নে কি পদক্ষেপ নেবেন ? এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদ এর মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    অভিযুক্ত আলমগীর বিএনপি'র স্থানীয় পর্যায়ের নেতা হওয়ায় মসজিদের গেইট দখল করে দোকান ঘর বসানোর অভিযোগটি মসজিদ কমিটি তার বিরুদ্ধে নোয়াখালী সদরের নোয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুর নবী বাবুলকে অবগত করেন। এমন অভিযোগের পর নূর নবী বাবুল বলেন, তিনি এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন কিনা এমন প্রশ্নে স্পষ্ট কোন উত্তর দেননি তিনি।

    এ বিষয়ে দলীয় হাই কমান্ড জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলোর কাছে অভিযোগ করা হলেও প্রতিকার মেলেনি কিছুই। ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর তাকে মসজিদের সামনে থেকে দোকান সরিয়ে নিতে বলেছি তবে সে কারো কথা শোনেনি। এ বিষয়ে ঘটনার আলোকে ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

    পিএম

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…