রাজধানীর বাজারগুলোতে বিগত কয়েকমাস ধরেই বেশ চড়া সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিপ্রতি বিশ থেকে ত্রিশ টাকা পর্যন্ত। অপরদিকে দুই থেকে তিন মাস ধরে মাছ, মুরগি ও চালের দামও বেশ উর্ধ্বমুখী।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির বাড়তি দাম দেখা গেছে। বাজারে শুধু মাত্র পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ এর ঘরে। পাশাপাশি খোলা সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।
আজকের বাজারে প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি (ছোট) প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি পিস ১৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, টানা বৃষ্টি ও দুর্গাপূজার ছুটিতে ভারত থেকে আমদানি কমায় মরিচ ও টমেটোর দাম বেড়ে যায়। পরবর্তীতে সরবরাহ বাড়লে কিছুটা কমে আসে। দুই সপ্তাহ আগে যেখানে কাঁচা মরিচের দাম ছিল দেড় থেকে ২০০ টাকা, সেখানে গত সপ্তাহে তা বেড়ে ৪০০ টাকায় পৌঁছেছিল। এখন খুচরা বাজারে মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে বাজার করতে আসা এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, প্রায় সব সবজির দামই ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আবার কিছু কিছুর দাম তার চেয়েও বেশি। বিগত চার মাস ধরেই অতিরিক্ত দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। আগে যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম এখন অতিরিক্ত বেশি দাম হওয়ার কারণে আধা কেজি সবজি কিনছি। সাধারণ ক্রেতাদের আমার মত একই অবস্থা।
সবজির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে জানতে চাইলে একই বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় কিছুটা দাম বেড়েছে সবজির। বর্তমানে বাজারে চাহিদার তুলনায় সবজি সরবরাহ কম, এছাড়া বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ। যে কারণে সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে নতুন সবজি উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম বেড়ে হয়েছে এক শ বাহাত্তর থেকে এক শ আশি টাকা। দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়ে প্রতি কেজি হয়েছে সত্তর থেকে পঁচাত্তর টাকা।
এদিকে বাজারে দুই থেকে তিন মাস ধরে মাছ, মুরগি ও চালের দামও উর্ধ্বমুখী। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি এক শ আশি টাকায়, সোনালি মুরগি দুই শ আশি থেকে তিন শ টাকায়, আর এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে এক শ চল্লিশ টাকায়।
মাছের বাজারেও চড়া দাম। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে দুই শ বিশ থেকে তিন শ টাকা, পাঙাশ এক শ আশি থেকে দুই শ পঞ্চাশ, কই দুই শ চল্লিশ থেকে দুই শ আশি, আর রুই তিন শ পঞ্চাশ থেকে চার শ টাকায়।
চালের বাজারেও স্থিতিশীলতা ফিরছে না। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি বাহাত্তর থেকে পঁচাশি টাকায়।
এসএম