এইমাত্র
  • ৪৬ আসনে এনসিপির প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত
  • নারীরা ঘরে সময় দিলে, সম্মানিত করবে সরকার: শফিকুর রহমান
  • যে কারণে ঝুলে গেল পে স্কেল
  • দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: রাস্তায় পড়ে আছে ছিন্ন-ভিন্ন মরদেহ
  • সিরিয়ায় আল-শারাকে আইএসের হত্যাচেষ্টা
  • বিবিসির বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
  • দিল্লিতে বিস্ফোরণের পর মুম্বাই, উত্তরপ্রদেশে হাই অ্যালার্ট জারি
  • নৈরাজ্য করলে রাজপথেই আ. লীগকে ধোলাই দেয়া হবে: রাশেদ খাঁন
  • প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার
  • সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন কমলো ২৮০টি
  • আজ মঙ্গলবার, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২ | ১১ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বনে কমছে শকুন, ‘বিশেষ রেস্তোরাঁতেও’ নেই খাবার

    মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪১ এএম
    মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪১ এএম

    হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বনে কমছে শকুন, ‘বিশেষ রেস্তোরাঁতেও’ নেই খাবার

    মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪১ এএম

    রেমা বনে কমছে শকুন, ‘বিশেষ রেস্তোরাঁতেও’ খাবার নেই। রেমা বনে শকুনের রেস্তোরাঁ বা ফিডিং স্টেশনে খাবার খাচ্ছে ৩টি শকুনের একটি দল। ক্যামেরা ট্র্যাপের মাধ্যমে ছবিটি তোলা। রেমা-কালেঙ্গা বন, যে বনকে বলা হয় বন্যপ্রাণের অভয়ারণ্য। সেই বনেই অস্তিত্ব সংকটে পড়তে যাচ্ছে শকুন। ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’ এই প্রাণীর সংখ্যা রেমা-কালেঙ্গা বনে দিন দিন কমছে। শকুন সংরক্ষণে করা হয়েছিল ‘বিশেষ রেস্তোরাঁ’। সেই রেস্তোরাঁতেও এখন খাবার নেই, কমে গেছে শকুনের খাবার।

    রেমা-কালেঙ্গায় শকুন কমার কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, এখানে শকুনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। এ ছাড়া খাদ্য সংকট, বন উজারের ফলে আশ্রয়স্থল বিনষ্ট, প্রাণীর ওষুধে ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেন ব্যবহার ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) সূত্র জানায়, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে মহাবিপন্ন বাংলা শকুনের ৩৮টি পরিবারে ৬০টি শকুন ছিল। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যা কমে গেছে। এখন ৩০ থেকে ৩৪টি শকুন দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন, মাঝেমধ্যে এখানে ৬টি শকুনের একটি দল দেখা যায়।

    আইইউসিএন-এর সিনিয়র অফিসার সুলতান আহমেদ জানান, শকুনের প্রজননের সময় সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এ সময় প্রতিমাসেই শকুনের খাবারের জন্য একটি করে গরু দেওয়া হতো। একটি শকুন বছরে একটি ডিম দেয়। মোট ডিমের ৪০ শতাংশ থেকে বাচ্চা হয়। এতে শকুন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা থাকলেও প্রতি বছর শকুনের সংখ্যা কমছে।

    শকুন রক্ষার জন্য ময়না বিলে ২০০ ফুট উঁচু শতাধিক গাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে শকুন নিজেদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করে। শকুন রক্ষায় গত ৭ বছরে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বন বিভাগ ও আইইউসিএন, যা চলমান। সুলতান আহমেদ জানান, এই বনে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি কাজ করছে। কমিটির কাজ হলো এখানে যাতে রোগাক্রান্ত অসুস্থ কোনো গরু জবাই না করা হয়। অক্টোবর মাস থেকে এখন পর্যন্ত এখানে কোনো গরু জবাই করা হয়নি। তিনি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

    শকুনের নিরাপদ খাবারের জন্য ‘বিশেষ রেস্তোরাঁ’ করা হয়েছে। আইইউসিএন ও বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এই রেস্তোরাঁ চালু হয় ২০১৪ সালে। ১১ বছরে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে রেস্তোরাঁ। এখানে দেওয়া হচ্ছে না খাবার। প্রাণী গবেষক সীমান্ত দিপু জানান, রেমা বনে শকুনের রেস্তোরাঁর পাশাপাশি একটি শকুন মনিটরিং সেন্টারও আছে। সেই ঘরের ভেতর থেকে ছোট্ট একটি ছিদ্র দিয়ে শকুনের জন্য রেস্তোরাঁটির সবকিছু দেখা যেত। এ ব্যবস্থাটি শকুন সংরক্ষণের দারুণ পদক্ষেপ ছিল।

    রেমা বনবিটের বিট কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমি রেমা বিটে ছয় মাস হয়েছে যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত শকুনের রেস্তোরাঁয় কোনো খাবার দিতে দেখিনি। তবে শুনেছি এখানে একটি শকুনের রেস্তোরাঁ আছে। ১০-১২টি শকুন এখানে দেখা যায়। এদের নিয়ে বন বিভাগ ও আইইউসিএন কাজ করছে।’ বাংলাদেশে শকুনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সরকারি নির্দেশনা মতো তারা কাজ করছেন বলে জানান আব্দুর রউফ। তিনি এ ব্যাপারে বন বিভাগকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

    হবিগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি এ মাসেই এখানে যোগদান করেছি। শুনেছি এখানে শকুনের জন্য একটি রেস্তোরাঁ আছে। শকুন সংরক্ষণে আমি কাজ করব।’

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…