এইমাত্র
  • ভারতের পর্যটনরাজ্য গোয়ার নাইটক্লাবে বড় অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২৩
  • রায়েরবাজারে অজ্ঞাত ১১৪ জুলাই শহীদের মরদেহ উত্তোলন শুরু আজ
  • আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে ইনুর মামলায় আজ তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য
  • ২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা, কবে-কখন কার সঙ্গে কার ম্যাচ
  • যারা এতদিন নির্বাচনের জন্য পাগল ছিলেন, তাদের এখন ভিন্ন সুর: জামায়াত আমির
  • খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করছে সরকার : প্রেসসচিব
  • নীলফামারীতে বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল
  • ভারত-সমর্থিত গোষ্ঠীর ৯ সন্ত্রাসীকে হত্যার দাবি পাকিস্তানে
  • ট্রাম্পের ‌‌চরম অযোগ্যতায় এবার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত-রাশিয়া
  • আজ রবিবার, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
    বিনোদন

    মুকুটহীন নবাবের ৯৪তম জন্মদিন আজ

    বিনোদন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
    বিনোদন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯ এএম

    মুকুটহীন নবাবের ৯৪তম জন্মদিন আজ

    বিনোদন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
    ছবি: সংগৃহীত

    বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ-দৌলার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত চরিত্রে তার অভিনয় এমন গভীর ছাপ ফেলেছিল যে দর্শক তাকে ডাকতেন ‘মুকুটহীন নবাব’ বলে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কিংবদন্তি কালজয়ী অভিনেতার আনোয়ার হোসেনের ৯৪তম জন্মদিন আজ।

    ‘বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার মহান অধিপতি, তোমার শেষ উপদেশ আমি ভুলিনি জনাব…’ - বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এ সংলাপটি এক অনন্য প্রতীক। এই এক সংলাপেই যাকে চেনেন বাংলাদেশের কোটি দর্শক, তিনি আর কেউ নন, চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কিংবদন্তি অভিনেতা আনোয়ার হোসেন।

    ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলার সারুলিয়া গ্রামে জন্ম আনোয়ার হোসেনের। পিতা এ কে এম নাজির হোসেন ও মাতা সাঈদা খাতুনের তৃতীয় সন্তান তিনি। তার বাবা ছিলেন পেশায় জেলা সাব-রেজিস্ট্রার।

    ১৯৪০ সালে দেওয়ানগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন এবং স্কুলের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হন তিনি। স্কুলজীবন থেকেই থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষকে মুগ্ধ করেন। আসকার ইবনে শাইখের ‘পদক্ষেপ’ নাটক দিয়ে তার অভিনয়ে হাতেখড়ি।

    ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিক পাসের পর ভর্তি হন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে। পরে ১৯৫৭ সালে ঢাকায় আসেন বড় পরিসরে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে।

    রূপালী পর্দায় তার অভিষেক ঘটে ১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। শুরুতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও অল্প সময়েই তিনি হয়ে ওঠেন শক্তিশালী চরিত্রাভিনেতা। তার অসাধারণ সংলাপপ্রবাহ, চোখের অভিব্যক্তি ও কণ্ঠস্বরের গভীরতা তাঁকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করেছে।

    প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে বাবার বন্ধু আবদুল্লাহ খানের ‘সেলকন ইঞ্জিনিয়ারিং’ ফার্মে সুপারভাইজারের চাকরি নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ১৯৫৯ সালে ননী দাসের পরিচালনায় ‘এক টুকরো জমি’ নাটকে অভিনয় করেন। ঢাকা বেতারে অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হয়ে ‘হাতেম তাই’ নাটকে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয় করতে গিয়ে পরিচয় হয় আব্দুল জব্বার খান, মোহাম্মদ আনিস ও হাবিবুর রহমানের সঙ্গে।

    ১৯৬১ সালে আনোয়ার হোসেন মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ ছবিতে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৮টি ছবিতে কাজ করেন তিনি।

    ১৯৬৭ সালে খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ছবিতে নবাবের চরিত্রে অভিনয় করে পান ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি। সিরাজের দেশপ্রেমের যন্ত্রণা দর্শকদের মনে জাগিয়ে দিতে পেরেছেন বলে ছবিটি প্রশংসিত হয়।

    আনোয়ার হোসেন ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সাহিত্যনির্ভর, শিশুতোষ, লোককাহিনিভিত্তিক, পোশাকি ফ্যান্টাসি, পরিচ্ছন্ন সামাজিক, পারিবারিক মেলোড্রামা, বক্তব্যধর্মী—সব ধরনের ছবিতে অভিনয় করেছেন।

    দীর্ঘ অভিনয়জীবনে আনোয়ার হোসেন প্রায় ৩৫০ ছবিতে অভিনয় করেছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন নিগার পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে তিনি একুশে পদক ও দুবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পাশাপাশি আনোয়ার হোসেনকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে।

    ৫২ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আনোয়ার হোসেন অভিনয় করেছেন প্রায় ৫০০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে। কখনও মুক্তিযোদ্ধা, কখনও ছাত্রনেতা, কখনও আবার দুঃখী পিতা হয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন জীবনের গভীর সত্য। তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে তোমার আমার, সূর্যস্নান, কাচের দেয়াল, বন্ধন, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, অপরাজেয়, সাত ভাই চম্পা, জীবন থেকে নেয়া, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, রংবাজ, ধীরে বহে মেঘনা, লাঠিয়াল, পালঙ্ক, রূপালী সৈকতে, নয়নমনি, কুয়াশা, নাগরদোলা প্রভৃতি অন্যতম।

    ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে সহ-অভিনেতার ভূমিকায় ১৯৭৮ সালে অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে পান একুশে পদক। ২০১০ সালে সম্মানিত হন আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে।

    বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন এক অন্য উচ্চতায়। কলকাতা, মুম্বাই বা লাহোরের সিনেমার প্রতিযোগিতায় থেকেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কেবল।

    ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ১৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ৮২ বছর বয়সে ঢাকার চলচ্চিত্রের ‘নবাব’খ্যাত অভিনেতা আনোয়ার হোসেন মারা যান।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…