পঞ্চগড়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পপুলার টি ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে চা পাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পেয়েছে কাস্টমস। কাস্টমসের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আট হাজার ৬০০ কেজি চায়ের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার তথ্য মিলেছে। টাকার অংকে যা ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা। যার তদন্ত শুরু হয়েছিল ১২ বস্তা চা সুন্দরবন কুরিয়ারে বুকিং দেওয়াকে কেন্দ্র করে। এর প্রতিটি বস্তায় ছিল ৫০ কেজি চা।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) পপুলার টি ফ্যাক্টরি মালিকপক্ষকে পঞ্চগড় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সার্কেল থেকে চিঠি ইস্যু করা হয়। শুনানিতে অংশ নেওয়ার দিন ধার্য করা হয় ১৮ নভেম্বর। এছাড়া লিখিত জবাব দাখিলের সময় বেঁধে দেওয়া হয় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
কারখানা কর্তৃপক্ষ শুনানিতে অংশগ্রহণ বা লিখিত জবাবসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা পর্যালোচনা করে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর কুরিয়ারে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস না নিয়ে চা বুকিং ও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পপুলার টি ফ্যাক্টরির চা পাচারের অভিযোগে সময়ের কণ্ঠস্বরে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি আমলে নিয়ে পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের একটি দল সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের দেবীগঞ্জ এজেন্সী ও পপুলার টি ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে জানা যায়, কুরিয়ার এজেন্সী যে কাগজপত্র দেখিয়েছে তা বৈধ ডকুমেন্ট নয়। ফ্যাক্টরীতে যাওয়ার পর ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ কুরিয়ারে বুকিং দেওয়া চায়ের বিপরীতে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এরমধ্যে মূসকের ৬.৩ চালান না থাকাসহ ক্রয়-বিক্রয় রেজিস্টারে অসঙ্গতি দেখা গেছে। পরবর্তীতে বিষয়টি লিখিতভাবে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগকে জানান তারা। এরপরই তদন্ত শুরু করে কাস্টমস।
পঞ্চগড় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সার্কেলের সহকারী কমিশনার খন্দকার সোলায়মান বলেন, যদিও প্রাথমিক ভাবে ১২ বস্তা চায়ের রাজস্ব ফাঁকির ধারণা করা হচ্ছিল তদন্তে আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর কাস্টমস অভিযান চালিয়ে কারখানার বাইরে পরিবহনরত অবস্থায় ১৩ হাজার কেজি চা জব্দ করে এবং জাল নথি ব্যবহারের প্রমাণে ৫ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করে। পরবর্তীতে ২০ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ চা বোর্ড অবৈধভাবে চা স্থানান্তরের অভিযোগে পপুলার টি ফ্যাক্টরির অনুমোদন ও নিবন্ধন স্থগিত করে কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। পরে মালিকপক্ষের আবেদন ও চাষীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় নিয়ে কারখানার কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দেয় চা বোর্ড।
এসআর