কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রাসযাত্রা উৎসবে হাজারও ভক্তদের মাতিয়ে তুললেন লীলা শিল্পীরা। গভীর রাতে শীতকে উপেক্ষা করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তগণ লীলা শিল্পীদের অসাধারণ লীলা কীর্তন উপভোগ করেন।
লীলা কীর্তনের মধ্য দিয়ে সাতদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসযাত্রা উৎসব বর্ণাঢ্য আয়োজনে বুধবার দুপুরে মোহন্ত বিদায় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে।
এর আগে গেল বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত ৯টায় উপজেলার গোরকমণ্ডল এলাকায় রাধাগোবিন্দ সার্বজনীন মন্দির প্রাঙ্গনে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন জ্বালানি সাতদিন ব্যাপী রাসযাত্রা অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন অনুষ্ঠানটির উদ্বোধক প্রধান শিক্ষক ও পুজা পরিষদের নেতা সৌরেন্দ্র চন্দ্র গোস্বামী ও প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি কার্তিক চন্দ্র রায়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি গৌরাঙ্গ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক তপন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘সাতদিন ব্যাপী রাসযাত্রা উপলক্ষ্যে ভাগবত আলোচনা, ভজন কীর্ত্তণ ও মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান ও লীলা কীর্তন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সাতদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ বিজিবি সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে। এ ছাড়াও প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরাও অনুষ্ঠানস্থলে এসেছেন এবং খোঁজ খবর নিয়েছেন। এ জন্য কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সাতদিন ব্যাপী রাসযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক গোরকমন্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল জানান, গত দুই বারের চেয়ে এ বছর অনুষ্ঠানটি অনেকগুন ভালো হয়েছে। শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবি সদস্যরা সার্বক্ষণিক অনুষ্ঠানস্থলে ছিলেন। ফলে সাতদিন ব্যাপী রাসযাত্রা উৎসব ফুলবাড়ী উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম, রাজারহাটসহ পাশের জেলা লালমনিরহাট থেকেও বহুভক্ত এসেছেন। কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিদিন ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদেন অনুষ্ঠানটি অনেক ব্যয়বহুল। ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়। স্থানীয়ভাবে সবাই মিলে যার যতটুকু সামর্থ্য ততটুকু নিয়েই অনুষ্ঠানটি করা হয়। এ বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এক মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেন। এ জন্য কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে অনেক অনেক অভিনন্দন রইলো। সব মিলিয়ে এবারের অনুষ্ঠানটি অত্যান্ত সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, ‘সাতদিন ব্যাপী রাসযাত্রা উৎসবের প্রথম দিন থেকে আমাদের পুলিশ বাহিনী সদস্য ও গ্রাম পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে। আমি কয়েক দিনে গিয়ে দেখেছি অনুষ্ঠানটি অনেক বড়। সেখানে বিজিবির সদস্যরা সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করেছে। তবে সবার প্রচেষ্টায় এতোবড় অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে সমাপ্তি হয়েছে।’
ইখা