বাংলাদেশের নারী ফুটবলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। প্রথম ফুটবলার হিসেবে ‘রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন এই ফুটবলার। নারী জাগরণে বিশেষ অবদান, বিশেষত ক্রীড়াঙ্গনে উজ্জ্বল ভূমিকার জন্য তাঁকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রোকেয়া দিবসে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর হাতে পদক তুলে দেন। এবারের আসরে মোট চারজন পেয়েছেন রোকেয়া পদক।
গত বছর নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতে। আর চলতি বছর মেয়েদের দল প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় এএফসি এশিয়ান কাপে। দুই মঞ্চেই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে আলোচনায় থাকেন ঋতুপর্ণা।
ঋতুপর্ণার অর্জনে আনন্দ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারী ফুটবলে ইতিহাস গড়া ঋতুপর্ণাকে অভিনন্দন। বাফুফে জানায়, ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিই রোকেয়া পদক ২০২৫। স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথে ঋতুপর্ণার এই যাত্রায় তারা সবসময় তাঁর পাশে থাকবে।
২০২১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলে অভিষেক হয় ঋতুপর্ণার। লাল–সবুজ জার্সিতে ৩৩ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। এ বছর জুন-জুলাইয়ে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান বাছাইয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ গোল করেন।
পাহাড় থেকে উঠে আসা এক তরুণীর ফুটবল–যাত্রা যতটা কঠিন ছিল, তার সাফল্য ততটাই অনুপ্রেরণাদায়ী। ২০১৫ সালে ঋতু’র বয়সযখন মাত্র ১১ বছর তখন তার বাবা বরজ বাঁশি চাকমা মারা যান। তাঁর মা ভূজোপতি চাকমা দীর্ঘদিন ধরে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। ০২২ সালের জুনে বিদ্যুৎস্পর্শে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ঋতুপর্ণার ভাই পার্বণ চাকমার। একের পর এক স্বজন হারানোর কষ্ট বুকে চেপে গ্যালারিভরা দর্শকদের মাতাচ্ছেন ঋতুপর্ণা।
এমন খুশির দিনে কিছুটা আবেগাপ্লুত ঋতুপর্ণা। তিনি বলেন, ‘আজ বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। ভাইটাকেও মিস করছি। আমার মা অনেক সংগ্রাম করছেন। আমার এত দূর আসার পেছনে পুরো পরিবার, আমার টিমমেটদের অবদান অনেক।’
আরডি