বিশ্ববাজারে বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আরও বেশি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট সি পি রাধাকৃষ্ণন।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে অ্যাপারেল এক্সপোর্টস প্রোমোশন কাউন্সিলের (এএইপিসি) পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, একসময় বিশ্ব বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ভারতের প্রতিযোগী দেশ খুব বেশি ছিল না। কিন্তু এখন বাংলাদেশ, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ভারতের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। সি পি রাধাকৃষ্ণন বলেন, ‘এই কারণেই এফটিএ অপরিহার্য। এখন এই চুক্তিগুলোই প্রতিযোগী দেশগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা’। খবর দ্য হিন্দু
তিনি জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের বস্ত্র শিল্পের বাজারমূল্য ৩৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার হবে রপ্তানি আয়। এ লক্ষ্য অর্জনে পোশাক শিল্পকে নতুন বাজার খোঁজা, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন পদ্ধতি গ্রহণ, দায়িত্বশীল কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অপচয় কমানোর ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রাধাকৃষ্ণন বলেন, ‘এই মুহূর্তে একমাত্র অনিশ্চয়তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এফটিএ। তবে এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় বস্ত্র ও পোশাক শিল্প নানা সীমাবদ্ধতার মুখে পড়েছে বলেও স্বীকার করেন ভারতের এই ভাইস প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি বলেন, বিশ্বে বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিতে ভারত বর্তমানে ষষ্ঠ বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ। আর এটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এই খাতের বড় অবদানের কথাই প্রমাণ করে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যেই ভারতের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানি দ্বিগুণ হবে। তার ভাষায়, ‘ভারতে বস্ত্র শিল্পকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। এই খাত আরও এগিয়ে যাবে এবং আমি নিশ্চিত, আগামী তিন বছরে আপনারা রপ্তানি দ্বিগুণ করবেন।’
সর্বশেষ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ভারতের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৭.৭৫ বিলিয়ন ডলার।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এএইপিসির চেয়ারম্যান সুধীর শেখরি বলেন, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ভারতীয় পোশাক রপ্তানি ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। শুধু ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসেই রপ্তানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৩ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরের তুলনায় ২২.১ শতাংশ।
তিনি জানান, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়কালে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১০.০৮ বিলিয়ন ডলারে, যা বৈশ্বিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ধারাবাহিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার প্রমাণ।
এবি