অতিরিক্ত গরমে অনেক সময় ঘামে আমাদের মাথা ভিজে যায়, সেই সাথে যদি আপনি ঘরের বাহিরে থাকেন তাহলে সূর্যের প্রখর রোদে মাইগ্রেনের সমস্যা যে কোন সময় হানা দিতে। যদি মাইগ্রেনের যন্ত্রণা একবার শুরু হয় তখন এক জায়গা বসে থাকা দায় হয়ে যায়। অনেক সময় মনে হতে থাকে কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে আপনার মাথায় অনবরত আঘাত করছে। প্রচণ্ড মাথাব্যথা তো থাকেই এছাড়া তীব্র শব্দ সহ্য করতে না পারা, কিংবা বমি বমি ভাব মাইগ্রেনের সাধারণ লক্ষণ।
মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পাওয়ার স্থায়ী কোনও চিকিৎসা বা ওষুধ নেই। তবে মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথার সঙ্গে জীবণাচরণের কিছু সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, গরমের কারণে ঘুম না হওয়া, বা অনিয়মিত ঘুম, মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন আরও গুরুতর করে দেয় মাইগ্রেনের সমস্যাকে। তাছাড়া শরীরে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হলেও মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যায়। কাজেই কিছু বিষয়ে সচেতন হলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনিক অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। অবশ্য গরমে সেই ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তাই একান্তই না পারলে অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুমান। এমনকি, দিনের পর দিন রাত জাগলে ঘুম কম হয়, এতেও মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়বে। কড়া রোদ ও তীব্র ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে।
বেশি সময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করা বা টেলিভিশন দেখা চলবে না। অনেকেই একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে বিরতি না নিলে কিন্তু মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়বে। প্রয়োজনে কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দিন। বারবার বসার জায়গা থেকে একটু উঠে হাঁটুন।
আমরা অনেকেই চিনি খেতে পছন্দ করি, তবে যদি আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তবে চিনি আছে এমন খাবার একটু এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও গরমে আমরা সবাই বাজারজাত ঠান্ডা পানীয় খেয়ে থাকি। যা একেবারেই ভালো নয়। কারণ, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে মাইগ্রেনের যন্ত্রণাও বাড়তে পারে।
মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে । গরমের দিনে এমনিতেই ডিহাইড্রেশন সমস্যা হয়। তাই এই ডিহাইড্রেশনের সমস্যা থেকেও কিন্তু মাইগ্রেন হতে পারে। তাই বাইরে বের হলেই সঙ্গে পানি রাখুন। জল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন ডাবের জল, টাটকা ফলের রস খেতে পারেন। তবে সোডাযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
এর মধ্যে ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি অন্যতম। বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে। সবুজ শাকসবজি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিটে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। দিনে দুবার আদার টুকরা কিংবা রস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। চকোলেট ছোট বড় সকলের পছন্দের। একটি চকোলেট দিয়ে আপনি যেমন কারও মনের ব্যথা কমাতে পারেন ঠিক সেইভাবেই আপনি হয়তো জানেন না একটি চকোলেটের মধ্যে রয়েছে সেই গুণ যা আপনাকে অসহনীয় মাইগ্রেনের ব্যথা থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে।
মাইগ্রেনের সমস্যায় দুগ্ধজাত খাবার, টমেটো, সাইট্রাস ফল (লেবু, কমলালেবু ইত্যাদি), গমজাতীয় খাবার ও চীনাবাদাম এড়িয়ে চলাই ভালো।