এইমাত্র
  • বেনজীরকে ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার
  • বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানাল যুক্তরাষ্ট্র
  • আপনি আমার যা দেখছেন সবটাই স্বাভাবিক: উর্বশী রাউতেলা
  • হার্ট অ্যাটাক হয়ে মাঠেই মারা গেলেন আম্পায়ার
  • বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
  • বাঘায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
  • উইন্ডিজের কাছে হেরে বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের
  • ভারতে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে দুই বাংলাদেশি আটক
  • বিশ্বের জনপ্রিয় সিনেমার তালিকায় শাকিব খানের 'বরবাদ'
  • রাজনীতি ও অভিনয়কে বিদায় সোহেল রানার
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

    ফিচার

    বাংলা নববর্ষে যেভাবে সংযুক্ত হয়েছিল পান্তা-ইলিশ
    বাংলা নববর্ষ—শুধু একটি তারিখ নয়, বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। বাংলা ক্যালেন্ডারে বছরের প্রথম দিনটি হলো পহেলা বৈশাখ। দিনটিকে ঘিরে বর্ণিল আয়োজনের পাশাপাশি থাকে বাহারি খাবারের আয়োজন। পান্তা ইলিশ খাওয়াকে অনেকে আবার বাঙালিয়ানার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও ভাবতে পছন্দ করেন।বাঙালি ঠিক কত বছর আগে থেকে পান্তাভাত খায় তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্য ধারার অন্যতম প্রধান কাব্য চণ্ডীমঙ্গলে পাওয়া যায় পান্তার বর্ণনা। মুকুন্দরাম চক্রবর্তী চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে 'কালকেতুর ভোজন' এ লিখেছেন, 'মোচড়িয়া গোঁফ দুটা বান্ধিলেন ঘাড়ে/এক শ্বাসে সাত হাড়ি আমানি উজাড়ে/চারি হাড়ি মহাবীর খায় খুদ জাউ/ছয় হান্ডি মুসুরি সুপ মিশ্যা তথি লাউ।'বাংলা নববর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন আঞ্চলিক অনুষ্ঠান ছিল আমানি। এখানে 'আমানি' হলো পান্তার জলীয় অংশ। এটি ছিল মূলত নতুন বর্ষে কৃষকের নিজস্ব আয়োজন। চৈত্র সংক্রান্তির শেষ বেলায় কৃষাণী হাঁড়িতে অপরিপক্ক চাল ছড়িয়ে কচি আমপাতার ডাল বসিয়ে দিতেন। নববর্ষের দিনে সূর্যোদয়ের আগে ঘর ঝাড়ু দিয়ে আমপাতা সহযোগে সেই পানি উঠোন ও ঘরে ছড়িয়ে দেন কৃষাণী। এরপর সেই ভেজানো ভাত পরিবারের সবাইকে খেতে দেওয়া হয়।মানি মূলত নববর্ষের আদি উপাদান। গত কয়েক শতবর্ষ ধরে পান্তা খেয়ে থাকে বাঙালি। বাঙালির সংস্কৃতির পুরোভাগই যেহেতু কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত তাই পান্তাই ছিল সবচেয়ে সহজলভ্য। অন্যদিকে পান্তাভাত ছিল কৃষকের শারীরিক শক্তির উৎস। একসময় সূর্যোদয়ের পর পান্তা খেয়েই কৃষক মাঠে যেতেন। আর তাই তো পকেট হারকিউলিস তথা বিশ্বখ্যাত বাঙালি শরীরচর্চাবিদ মনোহর আইচ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন পান্তা ভাতের জল, 'তিন জোয়ানের বল।' একইসঙ্গে নিজের শক্তির উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, আমি দিনে চারবেলা পান্তাভাত খেতাম। বাংলার আবহমান গ্রাম বাংলায় পান্তা ভাত খাওয়া হতো নুন, কাঁচা লঙ্কা কিংবা বড়জোর পেঁয়াজ সহযোগে। পান্তা খাওয়ার বাসন হিসেবে দরিদ্র কৃষকের কাছে মাটির বাসন ব্যবহারের রেওয়াজ ছিল না। কৃষক পান্তা খেত কচু পাতায় কিংবা কলা পাতায়।আর তাই তো ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত মনসামঙ্গল কাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি বিজয়গুপ্ত লিখেছেন 'আনিয়া মানের পাত বাড়ি দিল পান্তাভাত'। 'মান' বলতে এখানে মানকচুর কথা বোঝানো হয়েছে। তথা মানকচুর পাতায় করে পান্তা ভাত বেড়ে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কালের পরিবর্তনে পান্তার সঙ্গে একসময় যুক্ত হয় আলু ভর্তা কিংবা পোড়া বেগুন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরণের সহজলভ্য মাছ। এসব মাছের মধ্যে ছিল পুঁটি, কৈ, টাকি কিংবা ট্যাংরা, যা বিলে কিংবা পুকুরে সহজেই পাওয়া যায়।মাছে ভাতে বাঙালি হলেও ইলিশের সংযোগ তারও ঢের বাকি। কারণ ইলিশের দাম সবসময়ই ছিল খানিকটা চড়া। অন্যদিকে, ইলিশের দাম চড়া হওয়ায় তা গরম ভাতের সঙ্গে খেতেন গ্রামের মানুষ। পান্তার ভাগ্যে তা আর জুটতো না। অন্যদিকে, শহরের বিত্তবানদের কাছে পান্তাই ছিল আদতে গরীবের খাবার। ফলে ইলিশ তাদের কাছে সহজলভ্য হলেও পান্তা হেঁশেল ঘরের গণ্ডি পেরোতে পারতো না।ইলিশের সুখ্যাতি বরাবরই লিখিত হয়েছে বাংলা সাহিত্য থেকে রাজনীতিতে বা আড্ডা মহলেও সেখানে পান্তার সুখ্যাতি ছিল না। ইলিশ যতখানি না সগৌরবে আলোচিত হত, সে তুলনায় পান্তা ছিল অনেকখানি অপাংক্তেয়। ফলে পান্তার সঙ্গে ইলিশের সংযোগ বাংলার ঘরে দেখা মিলেনি। তবে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে গত শতকের আশির দশকে ঢাকায়। ষাটের দশক থেকেই রমনার বটমূলে নববর্ষের প্রথম দিনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে থাকে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। ১৯৬৭ সালে শুরু হয়েছিলো ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। দেশ স্বাধীনের পরও তা অবিচল থাকে।তবে ছায়ানটের মাধ্যমে কিন্তু পান্তা ইলিশ উঠে আসেনি। পান্তা ইলিশের প্রচলন শুরু হয়েছিলো ১৯৮০/৮১ সালের বর্ষবরণে। সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেবারের বর্ষবরণের কিছুদিন আগে সাংবাদিক বোরহানউদ্দিন আহমেদ প্রথম নববর্ষ উদযাপনের বিষয়ে ভাবতে গিয়ে পান্তা ইলিশ আয়োজনের প্রস্তাব দেন। অতঃপর তার বন্ধু, সহকর্মীরা জনপ্রতি চাঁদা তুলে পান্তা ইলিশের আয়োজন করেন। সে আয়োজন নিছক আড্ডাসুলভ হলেও পান্তা ইলিশ আয়োজনের কথা ছড়িয়ে পড়ে। পরের বছর 'ছুটির ফান্দে' খ্যাত গীতিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক শহিদুল হক খান রমনায় পান্তা ইলিশের আয়োজন করেন। একইসঙ্গে তিনি পান্তা ইলিশের পোস্টার এঁকেও পান্তা ইলিশকে জনপ্রিয় করে তুলেন।আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় রমনার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান সবার কাছেই আরাধ্য হয়ে উঠে। ফলে ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের পাশেই জমে উঠে পান্তা ইলিশ ছন্দ। সাংস্কৃতির কাছেই ব্যবসায়িক বুদ্ধি, দুয়ে মিলে পান্তা ইলিশের বিক্রি বাট্টা দেদারসে বাড়তে থাকে। সে বছরগুলোতে মাটির সানকিতে করে পান্তা ইলিশের সঙ্গে যোগ হয় নানা পদের ভর্তাও। এমন সময়ে কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী রমনা বটমূলে পান্তা ইলিশ বিক্রি শুরু করলে তা রীতিমতো তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে পান্তা ইলিশ তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কয়েক বছরের মধ্যে পান্তা ইলিশ দেশব্যাপী রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেয়। অনেকের দৃষ্টিতে তখন পান্তা ইলিশ হয়ে দাঁড়ায় বাঙালিয়ানার অন্যতম অনুষঙ্গ। প্রথম পর্যায়ে ইলিশ মাছ দুর্লভ না হওয়ায় পান্তা ইলিশ অনেকেরই সাধ্যের মধ্যেই ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ইলিশ হয়ে উঠে বহু আরাধ্যের বস্তু।জনপ্রিয়তার পালাবদলে নব্বইয়ের দশকে পান্তা ইলিশ হয়ে উঠে নববর্ষে বাংলাদেশিদের কাছে পরম আরাধ্য। কেবল ঢাকা কিংবা বিভাগীয় শহরগুলোই নয়, জেলা শহরের অলিগলিতেও নববর্ষের দিনে পান্তা ইলিশের বিক্রি দেখা যেত। পান্তার জোগান না হয় হলো, কিন্তু ইলিশের জোগান তো সীমিত। প্রথম দিকে ইলিশের দাম বাড়লেও একপর্যায়ে ইলিশের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ইলিশের জোগান দিতে রীতিমতো শুরু হয়ে জাটকা নিধন কর্মসূচী। ফলে সরকারকেও বাধ্য হয়ে দুই মাস নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি নিতে হয়। বর্তমানে ছোট ইলিশ মাছকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে পদ্মা ও মেঘনা, কালাবদর, তেঁতুলিয়া নদীসহ দক্ষিণাঞ্চলে মাছের পাঁচ অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরবরাহ তো আর পুরোপুরি বন্ধ থাকে না। তাই শহুরে পান্তা ইলিশ পরিবেশনে ইলিশের জোগান দিতে মাঘ মাস থেকেই ব্যবসায়ী ও মজুতদারেরা  হিমাগারের বরফে ইলিশ সংরক্ষণ শুরু হয়।এ প্রেক্ষিতে বলা যায় পান্তা ইলিশ যতখানি না বাঙালি সংস্কৃতির দাবীদার তারচেয়েও ব্যবসায়িক বুদ্ধির চমৎকৃত ফসল। তবে ব্যতিক্রম পান্তা। আবহমানকাল ধরে পান্তা বরাবরই ছিল বাঙালির দৈনন্দিন খাবার। এটি কখনোই নববর্ষের প্রথম দিনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিগত শতাব্দীর আশির দশক থেকে পান্তা ইলিশের প্রবর্তন হলেও নববর্ষের প্রথম দিনে আদিকাল থেকেই বাংলার ঘরে ঘরে সাধ্যমতো ভালো খাবার পরিবেশনের চল ছিল। এদিন বাঙালি চিরকালই ভালো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতো।নববর্ষের আগের দিন তথা চৈত্র সংক্রান্তির দিনে বাঙালি খেতো শাক-ভাত তথা শাকান্ন। চৈত্র সংক্রান্তির দিন সকাল বেলাতেই বাড়ির চারপাশের জলা, জংলা, ঝোপঝাড় থেকে শাক তুলে আনতো বাড়ির বউ-ঝিরা। মজার ব্যাপার হলো এই শাক হতে হত অনাবাদী। এমন চৌদ্দ পদের শাক দিয়েই চৈত্র সংক্রান্তির দিনের দুপুরের আহার হত। চৈত্র সংক্রান্তির দিনে শাকান্ন ছাড়া বাড়িতে কোনো মাছ মাংসের পদ রান্না হত না।এইচএ
    বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির এক সম্ভাবনাময় অধ্যায় হোমিওপ্যাথি
    আজ ১০ এপ্রিল, প্রতি বছর এই দিনটিতে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস’। এই দিনটি মূলত আধুনিক হোমিওপ্যাথির জনক জার্মান চিকিৎসক ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডরিখ স্যামুয়েল হ্যানিম্যানের জন্মদিন উপলক্ষে উদযাপন করা হয়।                           জার্মান চিকিৎসক ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডরিখ স্যামুয়েল হ্যানিম্যানহোমিওপ্যাথি হলো এক বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ হোমিওপ্যাথিকে তাদের নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এই দিবসটি শুধু হ্যানিম্যানকে শ্রদ্ধা জানানোর দিন নয়, বরং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার বিস্তার, সাফল্য এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে ভাবারও একটি উপযুক্ত সময়।হ্যানিম্যান ও হোমিওপ্যাথির সূচনা: ড. হ্যানিম্যান ছিলেন একজন অসন্তুষ্ট প্রথাগত চিকিৎসক। তার সময়ের প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সীমাবদ্ধতা তাকে ভাবিয়ে তোলে। তাই তিনি গবেষণা শুরু করেন এবং ১৭৯৬ সালে হোমিওপ্যাথির সূচনা করেন। তার মতে, কোনো রোগের লক্ষণের সঙ্গে মিল রাখা যায় এমন কোনো পদার্থ খুব ক্ষুদ্র মাত্রায় ব্যবহার করলে সেই রোগ নিরাময় হতে পারে। আজকের দিনে এসে হ্যানিম্যানের এই আবিষ্কার বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি রোগী ও হাজার হাজার চিকিৎসকের জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।হোমিওপ্যাথির জনপ্রিয়তা: বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি চালু আছে। ইউরোপ, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশে হোমিও চিকিৎসা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ভারত এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় এবং সরকারি পর্যায়েও হোমিও চিকিৎসকদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা সেবা চালু করেছে। বাংলাদেশেও হোমিও চিকিৎসা স্বীকৃত ও প্রচলিত। বহু মানুষ এখানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার প্রতি আস্থা রাখেন, বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী রোগ, ত্বকের সমস্যা, হাঁপানি, অ্যালার্জি, ও শিশুদের সাধারণ সমস্যায়।হোমিওপ্যাথি দিবসের গুরুত্ব: বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবসে নানা ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়-সেমিনার, আলোচনা সভা, র্যালি, মেডিকেল ক্যাম্প ইত্যাদি। এতে চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এই দিবসটি নতুন প্রজন্মের কাছে হোমিও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে। পাশাপাশি, যারা হোমিওপ্যাথিকে কুসংস্কার কিংবা অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা মনে করেন, তাদের মাঝেও তথ্যভিত্তিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।বাংলাদেশে হোমিও চিকিৎসার অবস্থা: বাংলাদেশে হোমিও চিকিৎসার একটি শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অনেক প্রতিষ্ঠান হোমিও চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবা প্রদান করছে। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধীনে দেশে বহু চিকিৎসক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হয়ে কাজ করছেন। রাজধানীসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে হোমিও চেম্বার দেখা যায়, যেখানে হাজারো মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন।তাই প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি এক নতুন আশার দুয়ার খুলে দিতে পারে, যদি আমরা এটিকে গ্রহণ করি যুক্তিভিত্তিক চিন্তাধারার মাধ্যমে। তথ্যভিত্তিক সচেতনতা, সঠিক শিক্ষা ও বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিকে আরও উন্নত, কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব।এইচএ
    আজ বিশ্ব ভাই বোন দিবস
    ভাই-বোন হলো একই গাছের বর্ণিল ফল ও ফুলের মতো। সম্পর্কে তারা সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং হৃদ্যতায় সবচেয়ে এগিয়ে। শৈশবের জীবনটুকু ভাই-বোনের সঙ্গেই কাটে। ঘর-বাড়ি থকে বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, পড়ার টেবিল ও খাবারের দস্তরখান সব কিছুতেই তারা আমাদের সঙ্গী। কখনো তারা আমাদের খেলার সাথী, আবার কখনো পার্টনার ইন ক্রাইম, বিপদে সুপারম্যানের মতো তো কখনো আবার সুপরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করে আমাদেরকে জীবনে চলার পথে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। আবার কখনো মায়ের কাছে বকুনি খাওয়ানোর জন্য ভাই অথবা বোনের কোন জুড়ি নেই। আমাদের ভাইবোনরা আমাদের পরিবার এবং তারা আমাদের জীবনের একটি বিশাল অংশ। আর তাই প্রতি বছর ১০ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে ভাইবোনদের বন্ধন আরও মজবুত করতে উদযাপিত হয় জাতীয় ভাইবোন দিবস। এই দিনটির লক্ষ্য হল ভাই ও বোনের মধ্যে অবর্ণনীয় সংযোগ এবং ভালবাসাকে সম্মান করা, এটি সারা বিশ্বের পরিবারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত করে তোলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দিনটিকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছুটি পালন করা হয়। তাই সেই দেশে এই দিনটি ‘ছুটির দিন’ নামেও পরিচিত। তবে ইউরোপে ৩১ মে ভাই ও বোন দিবস হিসাবে স্বীকৃত। ১৯৯৮ সাল থেকে, ৪৯টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা তাদের রাজ্যে ভাইবোন দিবসকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা জারি করেছে। ভাইবোনরা প্রকৃত অর্থে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণাদাতা এবং প্রতিযোগী হতে উৎসাহিত করে। ভাইবোনরা হল আমাদের প্রথম সেরা বন্ধু, আত্মবিশ্বাসী এবং জীবনের নানান দুষ্টুমির অংশীদার। তারা ছোটবেলা থেকেই আমাদের দেখেছে, আমাদেরকে ভাইবোনদের চেয়ে ভালো কেউ বোঝে না। এই দিবসটি আনন্দ উদযাপন করার, চ্যালেঞ্জগুলি নেভিগেট করার এবং ভাইবোনদের ভাগ করে নেওয়া অটুট বন্ধনকে লালন করার সময়। সুতরাং, আসুন এই দিনটিকে খোলা হৃদয়ে আলিঙ্গন করি এবং এটিকে আমাদের ভাই ও বোনদের জন্য একটি স্মরণীয় করে তুলি। এবি 
    ঈদের ছুটিতে রাজধানীর কাছে বেড়াতে পারেন যেসব জায়গায়
    বছর ঘুরে চলে এলো ঈদ। আর এবারের ঈদের আনন্দকে আরও দিগুণ করে তুলেছে লম্বা ছুটি। এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে যান্ত্রিক শহরের কোলাহল থেকে বেরিয়ে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির মাঝে। তবে অনেকেই দূরে কোথাও যেতে চান না জার্নি করার ভয়ে। তারা চাইলে ঘুরতে যেতে পারেন রাজধানীর আশপাশের পর্যটক স্পটে। চলুন জেনে নেই এই ছুটিতে রাজধানীর আশপাশে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়।আহসান মঞ্জিল: বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকার নবাবদের আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত স্থান আহসান মঞ্জিল। এই ঈদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নবাবদের আভিজাত্যের ছোঁয়া উপভোগ করার মতো মজা আর হবে না।বাংলার তাজমহল: সোনারগাঁতেই অবস্থিত তাজমহলের প্রতিরূপ। মাত্র ১৫০ টাকার এক টিকিটে দুই মুভির মতো, বাংলার তাজমহলের সঙ্গে বাংলার পিরামিড দর্শন করতে পারবেন। এটি রাজধানী থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্বে সোনারগাঁয়ের পেরাবে নির্মিত হয়।জিন্দা পার্ক: পূর্বাচল হাইওয়ের কাছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত জিন্দা পার্ক। কম সময় ও কম খরচে একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন সেখানে। সারাদিন প্রকৃতির মাঝে ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে গেলে রয়েছে রাত কাটানোর সুযোগও। খাবার নিয়েও চিন্তা করতে হবে না। পার্কের ভেতরেই রয়েছে রেস্টুরেন্ট।গোলাপ গ্রাম: ঢাকার অদূরে অবস্থিত গোলাপ গ্রাম। রাজধানী থেকে গোলাপ গ্রামে যাওয়ার জন্য প্রথমেই মিরপুর মাজার রোড হয়ে বেড়িবাঁধ সড়কে যাবেন। সেখান থেকে বাস, টেম্পো, অটোরিকশা বা রিকশায় চড়তে হবে। এরপর বেড়িবাঁধ তুরাগের তীর তথা শিন্নিরটেক ঘাট থেকে ট্রলারে উঠে পৌঁছে যাবেন সাদুল্যাপুর ঘাটে। শুকনো মৌসুমে নদী পার হয়ে বেশ খানিকটা পথ হাঁটলে দেখা মিলবে গোলাপ গ্রামের।জল জঙ্গলের কাব্য: গাজীপুরের পুবাইলে অবস্থিত জল জঙ্গলের কাব্য। খোলামেলা গ্রামীণ পরিবেশ উপভোগ করতে চাইলে এ জায়গা আপনার জন্য হতে পারে আদর্শ। এখানে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা ও রাতের খাবারসহ সব সুবিধা পেয়ে যাবেন একসঙ্গে।পদ্মা রিসোর্ট: অল্প সময়ে এই ব্যস্ত নগরী থেকে দূরে যেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন সুন্দর ওই স্থানে। কটেজের ভেতরে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, রিভার ক্রুজ ও খেলাধুলা করার বিশাল জায়গা।ড্রিম হলিডে পার্ক: ঢাকা থেকে পরিবার পরিজনদের নিয়ে সময় কাটানোর জন্য যেতে পারেন নরসিংদীতে অবস্থিত ড্রিম হলিডে পার্কে। সারাদিন হৈচৈ আর আনন্দে মাতামাতি করতে অথবা পিকনিক করতে চাইলে এই ছুটিতেই চলে যেতে পারেন ড্রিম হলি যে পার্কে। এখানে রাতে থাকার জন্যও রয়েছে রিসোর্টের সুব্যবস্থা।বালিয়াটি জমিদার বাড়ি: মানিকগঞ্জের বালিয়াটি গ্রামে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এখানের বিশাল সব স্থাপনা আপনাকে মুগ্ধ করবে।যমুনা রিসোর্ট: টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝে যমুনা সেতুর কাছে অবস্থিত যমুনা রিসোর্ট। অল্প সময়ের মধ্যে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন এই রিসোর্টে। এখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে সুইমিং পুল, খেলাধুলার ব্যবস্থা, জিম ও অন্যান্য সুবিধা।বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। দুর্লভ সব দৃশ্য দেখা যায় এই পার্কে। দারুণ সব অভিজ্ঞতার জন্য পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই পার্কে।নিকলী হাওর: কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। ঢাকা থেকে নিকলী হাওরে যেতে খুব বেশি ভোগান্তিতে পরতে হবে না আপনাকে। প্রথমে ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জ শহরে, সেখান থেকে সিএনজিতে যেতে পারেন নিকলী ঘাটে। ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখুন হাওর। মিশে যান প্রকৃতির মাঝে।নকশী পল্লী: পূর্বাচর বালু নদীর পাশে অবস্থিত নকশী পল্লী। এটি মূলত একটি রেস্তোরা। তবে এখানকার পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে আপনাকে। এমনকি বোটে করেও ঘুরে বেড়াতে পারবেন নদীতে।মহেরা জমিদার বাড়ি: এই ঈদের লম্বা ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন টাঙ্গাইলে। এই জেলায় ঘুরার জন্য বেশ কয়েকটি স্থান আছে। তবে সবচেয়ে বেশি সুন্দর মহেরা জমিদার বাড়ি। তিন স্থাপনা বিশিষ্ট এই বাড়ির ভেতরের দিকে বিশাল খাঁচায় বিভিন্ন রকম পাখি পালা হয়। প্রতিটি স্থাপনায় অসাধারণ কারুকার্য করা। এসব কারুকার্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।মৈনট ঘাট: যারা সমুদ্র মিস করছেন তারা অল্প সময়ের জন্য ঘুরে আসতে পারেন মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটে। দোহার উপজেলায় অবস্থিত এই চর আপনাকে সাগরের বেলাভূমির কথা মনে করিয়ে দেবে। এখানকার সূর্যাস্তের সুন্দর দৃশ্য দেখে মনে হবে আপনি সমুদ্রসৈকতে আছেন। এছাড়া পদ্মার ইলিশ কিংবা নৌকায় ঘোরার ইচ্ছা থাকলেও মৈনট ঘাটে যেতে পারেন।এইচএ
    চীনকে আরও বৃহত্তর ভূমিকা পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
    দুই জাতির মধ্যে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় চীনকে বৃহত্তর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এই আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।বক্তৃতার শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ এবং এর জনগণের পক্ষ থেকে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।বাংলাদেশে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, এই আন্দোলন ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করেছে।চীনের সঙ্গে নিজের দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক এবং সামাজিক ব্যবসা চালু করার ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল।বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকটের ওপর আলোকপাত করেন এবং রোহিঙ্গাদের তাদের আদি নিবাস মিয়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবাসনে চীনের জোরালো ভূমিকা কামনা করেন।অধ্যাপক ইউনূস এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং নিজ নিজ পক্ষের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন।প্রধান উপদেষ্টা আজ প্রেসিডেন্সিয়াল বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে ‘বিনিয়োগ সংলাপে’ অংশগ্রহণ করছেন।বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সম্পর্কে চীনা বিনিয়োগকারীদের অবহিত করার জন্য এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।প্রধান উপদেষ্টা একই স্থানে টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ ২.০ উৎপাদন ও বাজার সুযোগ এবং সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা এবং তিনটি শূন্যের বিশ্ব - এই তিনটি বিষয়ের উপর তিনটি গোলটেবিল আলোচনায়ও যোগ দেবেন।বৈঠককালে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সামাজিক ব্যবসা সার্কেলের অভিজ্ঞ ব্যক্তি, বিখ্যাত চীনা কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।অধ্যাপক ইউনূস চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত একটি নৈশভোজে যোগ দেবেন।প্রধান উপদেষ্টা এখন চার দিনের চীন সফরে আছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ; সড়ক পরিবহন ও সেতু; এবং রেলওয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফৌজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের উচ্চ প্রতিনিধি, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং সিএ-এর প্রেস সচিব শফিকুল আলম।এনআই
    পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাজেকসহ রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র
    ঈদের ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে ভ্রমণ করে পাহাড় হ্রদে ঘেরা মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে। ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে বিনোদনকেন্দ্রগুলো। আর পর্যটন বরণে সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা।রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, সুবলং, সাজেক ভ্যালি, পলওয়েল পার্ক ও হ্রদ ভ্রমণে পর্যটকদের পছন্দ বেশি। প্রতিদিনই পর্যটকের আগমন ঘটলেও ছুটির দিনে এই সংখ্যা বেড়ে যায় বহুগুণ। ইটপাথরের শহরের যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে ভ্রমণপিপাসু মানুষ পাহাড় আর হ্রদঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণ করেন রাঙামাটিতে।প্রাকৃতিক নৈসর্গে ঘেরা রাঙামাটি এখন প্রস্তুত পর্যটক বরণে। ঈদের ছুটির কারণে ঢল নামবে পর্যটকদের এমনটাই প্রত্যাশা পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টদের।নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্কসহ শহরের হোটেল-মোটেলগুলো। সাজেকে সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডে বেশকিছু রিসোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাকি রিসোর্টগুলোতে পর্যটক বরণে প্রস্তুতিও শেষ করেছ সাজেক রির্সোট মালিক সমিতি।পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ। হ্রদে ভ্রমণে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট বোট প্রস্তুত রয়েছে। সংস্কার ও রঙ শেষ  করে ঘাটে প্রস্তুত রয়েছে বোটগুলো। টেক্সটাইল মার্কেটগুলোও তাদের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে। পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে বাড়তি প্রস্তুতি নিচ্ছে পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মন বলেন, ‘গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকে ১২৬টি রিসোর্টের মধ্যে ৩৫টি রিসোর্ট পুড়ে যায়। বাকি ৯১টি রিসোর্ট অক্ষত আছে। আশা করছি, ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকরা সাজেক বেড়াতে আসবে। তাদের বরণে আমরা সব প্রস্তুতি সেরে নিয়েছি।’রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘রমজানে ঝুলন্ত সেতু এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা একদমই কম ছিল। এর মধ্যে ঝুলন্ত সেতুসহ আশপাশের এলাকা রঙ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে এবং নতুন করে ছোট্ট একটি পার্ক প্রস্তুত করা হয়েছে। এবারের ঈদের ছুটিতে যারা রাঙামাটি আসবে তাদের সময়টা যাতে ভালো কাটে সেই সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’অন্যদিকে রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক এ কে এম মাহবুবুল আলম বলেন, ঈদের ছুটিতে রাঙামাটির প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরতে পারে তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপশি জেলা পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়ন থাকবে। আশা করছি, ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক সমাগম হতে পারে।’এইচএ
    ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত কুয়াকাটা
    পবিত্র রমজান জুড়েই পর্যটকশূন্য ছিল পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। তবে ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসবেন কুয়াকাটায়। তাদের বরণে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন হোটেল-মোটেল, রিসোর্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এই লম্বা ছুটিকে সামনে রেখে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে অগ্রিম হোটেল বুকিং। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোর ৫০-৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এদিকে, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় স্টেকহোল্ডার, ১৬টি পেশার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে বৈঠক হয়েছে। পর্যটকদের বরণে হোটেল-মোটেলগুলোকে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে যাতায়াতের পথগুলোতে। প্রতিটি আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট নেমেছে পর্যটক আকর্ষণের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায়।কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, ‘ঈদে লম্বা ছুটি থাকার কারণে পর্যটকদের চাপ হবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের সেবায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল কেএম জহির খান জানান, রমজান মাস পর্যটকশূন্য ছিল কুয়াকাটা। সেই সুযোগে হোটেল-মোটেলগুলো পরিপাটি করে প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে। ঈদের টানা ছুটিতে লাখো পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে।কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু বলেন, পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা এবং যেকোনও হয়রানি বন্ধে আমরা প্রস্তুত। প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের ট্যুর গাইডের সদস্যরা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ভ্রমণ সহযোগিতায় কাজ করবে।সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাসের এ জি এম আল-আমিন খান উজ্জ্বল বলেন, আমাদের রিসোর্টে ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র এখন পর্যন্ত বেশ বুকিংয়ের ফোন আসছে। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ অগ্রিম বুকড হয় গেছে। আশা করছি, বাকি দিনগুলোতে আমরা পুরোপুরি বুকিং পাবো। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে ইতোমধ্যে আমরা সুইমিংসহ হোটেলের বাড়তি সৌন্দর্যবর্ধন শেষ করেছি।ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, ঈদের বন্ধে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হবে।এইচএ   
    আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস
    মাত্র তো শীত গেল এরই ভিতর প্রকৃতিতে আগাম তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গতবছরের তুলনায় এবার কিছুটা আগেই তাপপ্রবাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, চলতি মাসে তাপপ্রবাহ সহনীয় থাকলেও এপ্রিল-মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হবে। আবহাওয়া ও জলবায়ুর গুরুত্ব তুলে ধরতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস’। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সম্মিলিতভাবে আবহাওয়ার সতর্কবার্তার বাধা দূরীকরণ’। এই প্রতিপাদ্য জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ওপর এবং প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।১৯৫১ সাল থেকে বিশ্বে ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালিত হয়ে আসছে।এই দিনটি আবহাওয়াবিদদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি দেয় এবং আবহাওয়া, জলবায়ু এবং পানি ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার গুরুত্বকে তুলে ধরে। এটি বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া পূর্বাভাস এবং জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডব্লিউএমও -এর প্রচেষ্টাকেও তুলে ধরে।১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ জাতিসংঘের একটি সংস্থা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থার পরিবর্তে গঠিত হয়। এটি ১৯৫১ সালে তাদের জনসংখ্যার সুরক্ষার জন্য আবহাওয়াবিজ্ঞান, অপারেশনাল জলবিজ্ঞান এবং পৃথিবী বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলোকে সমন্বয় করার জন্য কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৬১ সালের ২৩ মার্চ প্রথম বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালিত হয়।এবি 
    বিশ্ব পানি দিবস আজ
    পানি বিষয়ে সচেতনতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরার জন্য সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২২ মার্চ ‘বিশ্ব পানি দিবস’ পালন হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশেও বিশ্ব পানি দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এ বছর বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘হিমবাহ সংরক্ষণ, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও নিরাপদ পানির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে’। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতিবছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেখানে পানিসম্পদের জন্য একটি বিশেষ দিন ঘোষণার দাবি তোলা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।এ দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা প্রদানসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও পানিদূষণ কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তা যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ সংস্থাসমূহ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।দূষিত পানিতে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে মুখে পড়ে। বিশ্বে প্রতি চার জন মানুষের মধ্যে এক জন নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অথচ দেশে নিরাপদ পানি পৌঁছানো গেছে ৫৯ শতাংশ মানুষের কাছে। দুর্গম এলাকা, গ্রামাঞ্চল ও শহরের বস্তি এলাকায় নিরাপদ পানি সহজে পাওয়া যায় না। পানিতে জীবাণু, আর্সেনিক ও লবণাক্ততা রয়েছে। এসডিজি লক্ষ্য পূরণ করতে হলে নিরাপদ পানির জন্য এখন কমপক্ষে চার গুণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নদীমাতৃক বাংলাদেশে পানি এবং টেকসই উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পানি ছাড়া যেমন আমাদের জীবন অচল, তেমনি জলবায়ু ও প্রকৃতি যা আমাদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত তার স্বাভাবিক প্রবাহের জন্যও পানি অপরিহার্য। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পরিণত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘সবার জন্য নিরাপদ পানির নিশ্চিয়তা চাই’ -এ দাবিতে আজ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বারসিক, বাংলাদেশ স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপ, ছায়াতল বাংলাদেশ, লাইফ সার্ভবাংলাদেশ, গ্রিন ফোর্সের সমন্বিত উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।এবি 
    ১০০ বছর কোনও শিশু জন্ম নেয়নি, নেই কোনও হাসপাতালও
    জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশে প্রতি মিনিটে জন্ম নেয় ৯ শিশু। দিন দিন বেড়েই চলেছে এই সংখ্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা কোনোভাবেই থেকেমে নেই। মৃত্যুর চেয়ে জন্মহার বেশি।এমন এক পরিস্থিতিতে যদি বলা হয় এমন এক দেশ আছে যেখানে ১০০ বছরের মধ্যে কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। এমনকি একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে দেশে একটিও হাসপাতাল নেই। ব্যাপারটা বিশ্বাস করাও বেশ কঠিন বৈকি!বলছিলাম পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটির, রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধানের আবাসস্থল। ভ্যাটিকান সিটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ। ভ্যাটিকান সিটি বা ভ্যাটিকান সিটি স্টেট একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। অতীতে দেশটি ইতালির রোমের অংশ ছিল।১৯২৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘ল্যাটেরান চুক্তি’র মাধ্যমে ইতালি থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভ্যাটিকান সিটি। বিশ্বব্যাপী সমস্ত ক্যাথলিক গির্জা এবং ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ভ্যাটিকান সিটিতেই তাদের শিকড় লুকিয়ে। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর আজ পর্যন্ত ভ্যাটিকান সিটিতে একটিও শিশু জন্মগ্রহণ করেনি। অর্থাৎ ১৯২৯ সালের পর সে দেশে কোনো শিশু জন্ম নেয়নি। দেশ গঠনের পর থেকে কোনো হাসপাতালও তৈরি হয়নি ভ্যাটিকান সিটিতে। অসংখ্য আর্জি জানানো সত্ত্বেও নাকি সে দেশে হাসপাতাল নির্মাণের অনুমতি মেলে না। ফলস্বরূপ গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তি বা অন্তঃসত্ত্বাদের চিকিৎসার জন্য রোমে যেতে হয়।মনে করা হয়, সীমিত ভৌগোলিক আকার এবং প্রতিবেশী রোমে উচ্চমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকার কারণেই নাকি দেশের মধ্যে হাসপাতাল তৈরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। ভ্যাটিকান সিটি মাত্র ১১৮ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। এর ফলে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব রোগীকে রোমের হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে কোনো প্রসূতিবিভাগ না থাকার কারণেও সে দেশের সীমানার মধ্যে কোনো শিশু জন্ম নেয় না। এর থেকেই স্পষ্ট যে, কেন বিগত প্রায় ১০০ বছরে ভ্যাটিকান সিটিতে কোনো শিশুর জন্ম রেকর্ড করা হয়নি। ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা সর্বসাকুল্যে ৮০০-৯০০ জন। এদের মধ্যে অনেকেই বর্ষীয়ান ক্যাথলিক ধর্মযাজক। ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা কম হলেও অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সেই সব অপরাধের মধ্যে বেশির ভাগই দোকান লুট, ব্যাগ ছিনতাই এবং পকেটমারির মতো ঘটনা। তবে এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য বিদেশি পর্যটকদেরই দায়ী করেন স্থানীয়েরা।ভ্যাটিকান সিটিতে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রেলওয়ে স্টেশনও রয়েছে। ‘সিটা ভ্যাটিকানো’ নামে ওই স্টেশনে দু’টি রেললাইন রয়েছে। প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। পোপ পিয়াস একাদশের শাসনকালে নির্মিত রেললাইন এবং স্টেশনটি কেবল পণ্য পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যাত্রিবাহী ট্রেন ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে চলাচল করে না।ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত দ্বীপপুঞ্জ পিটকেয়ার্নের জনসংখ্যা ৫০ জনেরও কম। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানেও কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। যদিও পিটকেয়ার্ন কোনো দেশ নয়।এইচএ
    আজ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস
    আজ ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস। মানুষকে সহজ, দৈনন্দিন সুখের অভ্যাস অনুশীলন করতে উৎসাহিত করে বিশ্বকে একটি মানবিক এবং সুখী জায়গা করে তোলাই এ দিবসের লক্ষ্য। ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর বিশ্বের একাধিক দেশ নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে আসছে।অন্যরকম এ দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা জাতিসংঘের উপদেষ্টা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি জেম এলিয়েন। ২০১১ সালে জাতিসংঘে সুখ দিবসের ধারণাটি উপস্থাপন করেন এলিয়েন। তবে এই দিবস প্রচলনের প্রচার শুরু হয় ভুটানের হাত ধরে। দেশটিতে এরই মধ্যে সুখ-সূচকের ভিত্তিতে জাতীয় সমৃদ্ধির পরিমাপের প্রচলন করা হয়েছে। তারা জাতিসংঘের কাছে বছরের একটি দিন সুখ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানায়। মূলত এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তখন সেই অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিরা দিবসটিকে স্বীকৃতি দেন। দিবসটি প্রথম ২০১৩ সালে পালিত হয়।জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয়, ‘মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দিবসটি পালন করা হবে। সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এই দিবসে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে থাকে জাতিসংঘ।’‘অ্যাকশন ফর হ্যাপিনেস’, ‘হ্যাপিনেসডে ডট ওআরজি’ এবং ‘জাতিসংঘ’সহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উদযাপন ও আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক সুখ দিবস মানুষকে এই বিষয়টি বিবেচনা করতে উৎসাহিত করে যে, সুখ খোঁজার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, যার মধ্যে অন্যদের সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক, মানসিক সুস্বাস্থ্য এবং আত্মতৃপ্তির বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০২৪’-এর হিসাব অনুযায়ী সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে আছে ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, ইসরাইল, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।সুখ মানুষের মৌলিক অধিকার, এই বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালিত হয়। একইসঙ্গে মনে করা হয় যে, সুখ ও কল্যাণের প্রচার একটি আরও শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই বিশ্বের দিকে পরিচালিত করতে পারে। জীবনে রূপান্তর ঘটাতে এবং পৃথিবীকে সবার জন্য একটি উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে সুখের শক্তি উদযাপনের দিন এটি। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আরও সুখী, কল্যাণময় ও সহানুভূতিশীল বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে দিবসটি পালন করা হয়। এটি মানুষের জীবনে সুখের গুরুত্ব উদযাপন এবং স্বীকৃতি দেয়ার একটি দিন। এই দিনে ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও সংস্থা পর্যায়ে সুখ ও কল্যাণ বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা হয়।এবি 
    ধামইরহাটে পর্যটকদের সুবিধায় বাশেঁর তৈরী কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্ট
    নওগাঁর ধামইরহাটে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য পর্যটকের মনে বেশ যায়গা করে তুলেছে প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান। প্রতিবছরের ন্যায় এবারে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানের পরিবেশ থাকছে অনেকটা ভিন্নরকম। প্রকৃতির নিদারুণ সৌন্দর্যে ঘেরা আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানে গড়ে তোলা হয়েছে ৭২০ ফিট উচ্চতায় একটি ওয়াচ টাওয়ার। যে ওয়াচ টাওয়ারে উঠে পর্যটকরা পুরো শালবন ও দিঘীর সৌন্দর্য বেশ কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন।উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদে পরিপূর্ণ ২৬৪.১২ হেক্টর জমিতে গড়ে উঠা বনভূমির ঠিক মাঝ খানে অবস্থিত প্রায় ৪৩ একর জমি নিয়ে সুবিশাল এই আলাতাদিঘী। দিঘীর পার্শ্বে পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে ৩জন বন্ধু মিলে তৈরী করেছেন আলতাদিঘী কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্ট। যা ইতিমধ্যে দর্শনার্থীদের মাঝে আলতাদিঘী ও শালবনের সৌন্দর্য আরো দি¦গুন ভাবে বাড়িয়ে তুলেছে। কুঁড়েঘর নির্মাণে বাহিরের অংশ তৈরীতে পুরোটায় ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ এবং উপরের ছাউনিতে টিনের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে খড়ের চাল। ইট পাথরের নগরে এবার ঈদে সকল শ্রেনীপেশার পর্যটকদের মনে বাঁশ খড় ও বেতসহ নানান দেশীয় সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরী রেষ্টুরেন্ট নতুন করে সাড়া ফেলাবে এমন প্রত্যাশার দিন গুনছেন উদ্যোক্তারা। রমজানে কুঁড়েঘরের উদ্বোধন করা হয়েছে আগামী ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন রকম ডেকুরেশনের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। পুরোপুরি ঈদের পূর্বে রেষ্টুরেন্টের বেশিরভাগ কাজ সমাপ্ত করা হবে। এখানে বার্গার, পিজ্জা, চাওমিন, পাস্তাসহ নানান রকমের খাবার পাওয়া যায়। পরিবার পরিজন নিয়ে দর্শনার্থীরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানোর পাশাপাশি স্বল্প মূল্যে দেশী-বিদেশী খাবারের সুবিধা পাবেন তরুণদের তৈরী কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্ট থেকে। ইতিমধ্যে রমজান মাসেও কুঁেড়ঘর বেশ সাড়া ফেলেছেন পর্যটকদের নজরে। কুঁড়েঘর নির্মাণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭লক্ষ টাকা ব্যায় করা হয়েছে। আরো বেশকিছু ডিজাইন এর কাজ চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে।এবিষয়ে কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্টের উদ্যোক্তা আনিসুর রহমান জানান, বেকার জীবনের অভিশাপ থেকে বেড়িয়ে ৩জন বন্ধুর ঐক্য সীদ্ধান্তের উপরে আলতাদিঘীতে আসা বিভিন্ন পর্যটকের সুবিধার কথা চিন্তা করে গ্রামীণ পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে কুঁড়েঘর। আশা করছি দর্শনার্থীদের কাছে কুঁড়েঘরের সৌন্দর্য এবং খাবারের গুনগত মান খুবই ভালো লাগবে। গ্রামীণ সৌন্দর্য নিয়ে গড়ে তোলা কুঁড়েঘরের জন্য এলাকাবাসী ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সকল মানুষের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন এই তুরণ উদ্যোক্তারা।রেষ্টুরেন্টে আসা পর্যটক ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে কুঁড়েঘরের খাবার ও পরিবেশের অনেকটা মিল রয়েছে। আশা করছি দ্রুত এই রেষ্টুরেন্ট আলতাদিঘীতে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলবেন।এবিষয়ে বন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, সীমান্তের কোল ঘেঁষা শলবন ও আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা প্রতিটি পর্যটকদের জন্য কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্ট আগামীতে মাইলফলক হয়ে থাকবেন বলে জানান তিনি।এনআই
    দেশে দেশে রমজান সংস্কৃতি
    রমজান এক গভীর আধ্যাত্মিক মাস, যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আচার ও রীতি-নীতি পালন করার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। আজকের প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রমজান মাস উদযাপনের অনন্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর।মধ্যপ্রাচ্যের রমজান ঐতিহ্য১. মিসর : ‘ফানুস’ উৎসব—মিসরের রমজান অত্যন্ত জনপ্রিয়, বিশেষ করে ‘ফানুস’ উৎসবের জন্য। এটি বহু শতাব্দী ধরে রমজানের অন্যতম চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।মিসরের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, দোকান এবং রাস্তাঘাট ফানুস দিয়ে সাজায়, যা রমজানের শুভ্রতা ও আনন্দের প্রতীক, বিশেষ করে মিসরের রাজধানী কায়রোতে রমজান মাসের শুরুর দিকে ঐতিহ্যবাহী রঙিন ফানুসের মেলা বসে।২. সৌদি আরব : মসজিদভিত্তিক ইফতার ও ঐতিহ্যবাহী খাবার—সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনার পবিত্র মসজিদগুলোতে রমজান মাসে ইফতার একটি বিশেষ সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হাজার হাজার মুসল্লি একত্রে ইফতার করেন, যা রমজানের সৌন্দর্যকে আরো জাঁকজমকপূর্ণ করে তোলে। সৌদি আরবে রমজান মাসের খাবারের মধ্যে খেজুর, স্যুপ, সাম্বুসা এবং আরবি কফি অন্যতম। এর মধ্যে সাম্বুসা বিশেষভাবে জনপ্রিয়, যা মূলত মাংস বা সবজি দিয়ে তৈরি একটি স্ন্যাকস।৩. লেবানন : কামানের শব্দে ইফতার ঘোষণা—লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে রমজান মাসে কামান দাগানো হয়, যা ইফতার এবং সাহরি সময়সূচি ঘোষণা করে। মূলত, এটি মিসরের ঐতিহ্য থেকে শুরু হয়ে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। কামানের শব্দের মাধ্যমে রমজান মাসের প্রতিদিনের ইফতার ঘোষণা করা হয় এবং এটি মুসলিমদের জন্য এক আবেগপূর্ণ সময় হয়ে ওঠে।৪. সংযুক্ত আরব আমিরাত : ‘হক আল লায়লা’ উৎসব—সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশেষভাবে ‘হক আল লায়লা’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয় শাবান মাসের ১৫ তারিখে। এই উৎসবে শিশুরা বিশেষভাবে অংশ নেয়। তারা উজ্জ্বল পোশাক পরে প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে মিষ্টি ও বাদাম সংগ্রহ করে। এটি একটি ঐতিহ্যগত উৎসব, যা রমজানের আগমনের প্রতি আনন্দ প্রকাশ করে।দক্ষিণ এশিয়ার রমজান সংস্কৃতি৫. বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান : বাহারি ইফতার আয়োজন—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে রমজানের সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার দিয়ে ইফতার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের রাস্তা, মসজিদ ও বাসাবাড়িতে ইফতার বিতরণ একটি ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, জিলাপি, শরবত, খেজুর, হালিম—সবই এই অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার। ইফতারের মাধ্যমে মুসলিমরা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখে।৬. পাকিস্তান : সাহরি ডাক—পাকিস্তানে, বিশেষত পেশাওয়ার ও কাশ্মীর অঞ্চলে সাহরির জন্য ‘সাহরি ডাক’ নামের একটি ঐতিহ্য প্রচলিত রয়েছে। যেখানে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত একদল ড্রাম বাজিয়ে সাহরি খাবারের জন্য মুসলিমদের ডেকে তোলে। এটি শুধু একটি রীতিই নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক সেলিব্রেশন হিসেবে পবিত্র রমজানকে স্বাগত জানানো হয়।দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রমজান সংস্কৃতি৭. ইন্দোনেশিয়া : ‘পাডুসান’ (Padusan) প্রথা—ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে, রমজানের আগে বিশেষভাবে ‘পাডুসান’ নামের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। পাডুসান অর্থ গোসল করা। জাভানিজ মুসলিমরা ঝরনার পানিতে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর ডুবিয়ে রেখে এটি পালন করে। এই ঐতিহ্য অনুযায়ী, স্থানীয় মুসলমানরা নদী, ঝরনা বা সমুদ্রে স্নান করে নিজেদের পবিত্র করেন। এটি শুধু শারীরিক পরিচ্ছন্নতা নয়, আত্মিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়।৮. মালয়েশিয়া : ‘পাসার রমাদান’ (Pasar Ramadhan) বাজার—মালয়েশিয়া রমজান মাসে ‘পাসার রমাদান’ নামের বিশেষ বাজার আয়োজন করে। এখানে ইফতারের জন্য বিভিন্ন ধরনের মালয় খাবার, মিষ্টি, রুটি ও ফলমূল পাওয়া যায়। এই বাজারগুলো শুধু খাওয়ার জন্য নয়, বরং একটি সামাজিক জমায়েত হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, যেখানে মানুষ একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়।আফ্রিকার রমজান ঐতিহ্য৯. সেনেগাল : ‘নডগু’ (Ndogou) ইফতার—সেনেগালে, ইফতারের সময় ‘নডগু’ নামে পরিচিত একটি প্রথা রয়েছে, যেখানে সমাজের সবাই একত্র হয়ে খেজুর, ফলমূল ও দুগ্ধজাত খাবার খেয়ে ইফতার করে। এটি সামাজিকতা ও সম্প্রদায়ের ঐক্য দৃঢ় করে এবং মুসলিমদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে।১০. মরক্কো : ‘নাফার’ দ্বারা সাহরির সময় ঘোষণা—মরক্কোতে ‘নাফার’ নামের বিশেষ একদল শিঙাবাজ সাহরির সময় মুসলমানদের জাগিয়ে তোলে। সাহরির জন্য প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে শিঙা বাজানো হয় এবং এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে।ইউরোপ ও আমেরিকার রমজান সংস্কৃতি১১. তুরস্ক : ঐতিহ্যবাহী ড্রাম বাজিয়ে সাহরি ঘোষণা—তুরস্কে রমজান মাসের প্রথম দিকে বিশেষ ড্রাম বাজানো হয়, যা সাহরির সময়সূচি ঘোষণা করে। ড্রামাররা বিশেষ পোশাক পরে এই ড্রাম বাজিয়ে সাহরি সময়ের কথা ঘোষণা করেন এবং এটি এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।তুরস্কের আরেকটি বিশেষ ঐতিহ্য হলো, রমজান মাসের প্রথম দিন, ইফতারের সময় কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়। কামানের শব্দ শোনা মাত্রই ইফতার শুরু করা হয়, যা একটি অত্যন্ত পুরনো এবং সাংস্কৃতিক প্রথা। তুরস্কে এই রীতি সাধারণত ইস্তাম্বুলে পালন করা হয় এবং এটি একটি আধ্যাত্মিক এবং উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে১২. যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র, বহুজাতিক ইফতার : পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে ইফতার আয়োজনে কিছুটা ভিন্নতা দেখা যায়। এখানে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারগুলোতে মুসলিমরা একত্রে ইফতার করে, যেখানে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য অনুযায়ী খাবার ভাগাভাগি করে থাকে। এটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে একত্র করে এবং মুসলিম সমাজের ঐক্য প্রদর্শন করে।বিশ্বব্যাপী রমজান উদযাপনের সময় নানা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যা শুধু পার্থক্যই তুলে ধরে না, বরং মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সহানুভূতির প্রতীকও। বিভিন্ন দেশের প্রতিটি সমাজে রমজান ভিন্ন রীতিতে পালিত হলেও মূল উদ্দেশ্য আত্মশুদ্ধি, সহানুভূতি এবং মানবতার কল্যাণ। (আল-জাজিরা, আল-আরাবিয়া, আল-কুদস আল-আরাবি ইত্যাদি)এবি 
    প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস আজ
    আজ ঐতিহাসিক ১৯ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজীপুরের (তৎকালীন জয়দেবপুর) বীর বাঙালিরা গর্জে উঠেছিল এবং সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল।শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে দেওয়া ভাষণে ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে,’ এই মন্ত্রবলে বলিয়ান হয়ে ১৯ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই জয়দেবপুরে অকুতোভয় মুক্তিকামী বাঙালিরা সশস্ত্র সেনাবাহিনীর সামনে প্রথমবার রুখে দাঁড়িয়েছিল। হাজার-হাজার জনগণ অবতীর্ণ হয়েছিল সেই সম্মুখযুদ্ধে।১৯৭১ সালের ১৯ মার্চে ঢাকা ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার থেকে হঠাৎ পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের নেতৃত্বে পাকিস্তানি রেজিমেন্ট জয়দেবপুরের (গাজীপুর) দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করার জন্য পৌঁছে যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা জয়দেবপুরে এক প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন অনেকে। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ।শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে নিজ হাতে লিখে একটি বাণী দিয়েছিলেন। বাণীতে তিনি লিখেছিলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৯ শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে আরও একটি স্মরণীয় দিন। ওইদিন পাক মিলিটারি বাহিনী জয়দেবপুরে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ানদের নিরস্ত্র করার প্রয়াস পেলে জয়দেবপুর থানা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের যৌথ নেতৃত্বে কৃষক, ছাত্র, জনতা সবাই বিরাট প্রতিরোধের সৃষ্টি করে। ফলে, মিলিটারির গুলিতে তিনটি অমূল্য প্রাণ নষ্ট হয় এবং বহু লোক আহত হয়। আমি তার কয়েকদিন মাত্র পূর্বে ৭ই মার্চ তারিখে ডাক দিয়েছিলাম, যার কাছে যা আছে, তাই দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোল। জয়দেবপুরবাসীরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। আমি তাদের মোবারকবাদ জানাই।’তিনি আরও বলেন, ‘কোন মহৎ কাজই ত্যাগ ব্যতীত হয় না। জয়দেবপুরের নিয়ামত, মনু, খলিফা ও চান্দনা চৌরাস্তায় হুরমতের আত্মত্যাগও বৃথা যায় নাই। শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। তাই আজ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের ফলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশকে স্বাধীন করার সংগ্রাম শেষ হয়েছে। আসুন আজ আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার সংগ্রামে লিপ্ত হই।’ তিনি জয় বাংলা বলে বাণীটি শেষ করেন।এবি 
    ১৬ স্ত্রীর ১০৪ সন্তান, বাড়ি যেন আস্ত এক গ্রাম
    আর্নেস্তোর বাড়িটি যেন আস্ত একটি গ্রাম। আর সেই গ্রামে গোটা পরিবারই তাঁর। যেখানে মানুষ একজন স্ত্রী, ২-৩ সন্তান নিয়েই সংসার করতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে বহু বিবাহ তাও আবার দুটি বা চারটি নয় ২০টি বিয়ে করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪ জন স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে এবং তবে তাঁর সঙ্গে ঘর করছেন ১৬ জন। সবাই একই সঙ্গে থাকেন। শুধু তাই-ই নয় সন্তান ১০৪ জন এবং নাতি-নাতনির সংখ্যা ১৪৪ জন। তানজানিয়ার একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা মেজি আর্নেস্তো মুইনুচি কাপিংগার পরিবারের সদস্য সংখ্যা তিনি সহ ২৬৫ জন। যেখানে তার প্রতিটি স্ত্রীর জন্য একটি করে ঘর রয়েছে। বাড়ির কাজের জন্য অনেক লোক আছে এবং কয়েকজন আছেন বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য।এক সাক্ষাৎকারে মেজি আর্নেস্তো কাপিংগা বলেছেন যে তিনি তার বাবার অনুরোধে তার পরিবারকে বড় করতে শুরু করেছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালে তার প্রথম স্ত্রীকে বিয়ে করেন এবং তার এক বছর পরে তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু তার বাবা তাকে বলেছিলেন যে একজন স্ত্রী যথেষ্ট নয়। তিনি আর্নেস্তাকে অর্থ সম্পদ দেওয়ার প্রস্তাব দেন, যদি তিনি আরও স্ত্রী গ্রহণ করতে এবং আরও সন্তান ধারণ করতে রাজি হন ।আর্নেস্তো জানান, তাদের বংশ খুবই ছোট ছিল, তাই তার বাবা চাইতেন তিনি যেন তাদের বংশ বড় করেন। তিনি এই মিশনে রাজি হন। তার বাবা তার প্রথম পাঁচ স্ত্রীকে যৌতুক হিসেবে অর্থ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেখানেই থেমে থাকেননি। আর্নেস্তোর ২০ জন স্ত্রী ছিল। কেউ কেউ এক পর্যায়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অন্যরা মারা গেছেন কিন্তু আজও তিনি ১৬ জন স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন, যাদের মধ্যে সাতজন আপন বোন।সাধারণত একজন নারী কখনোই তার স্বামীকে স্বেচ্ছায় অন্য কারো সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান না। কিন্তু মিজি আর্নেস্তো মুইনুচি কাপিংগার স্ত্রীরা এর ঠিক উল্টো। তাদের দাবি, স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকা ভালো, এতে তিনি একজন ভালো, শ্রদ্ধাশীল স্বামী হিসেবে খ্যাতি পাবেন।আর্নেস্তার একজন স্ত্রী তার বোনেদের কাছে তার সম্পর্কে এবং তার সঙ্গে কাটানো সুন্দর জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেছিলেন। তিনি চেয়েছেন একই অভিজ্ঞতা তার বোনদের হোক, তারাও ভালো একজন স্বামীর সঙ্গে জীবন কাটাক। তাই তিনি তার বোনদের একেক করে আর্নেস্তার সঙ্গে বিয়ে দেন।শেষ পর্যন্ত সাত বোন আর্নেস্তাকে বিয়ে করেন। তারা এখন সম্প্রীতির সঙ্গে বাস করে এবং দাবি করে যে তাদের মধ্যে কোনো ঈর্ষা নেই। সবার সন্তান আছে, আলাদা ঘর আছে। যে যার নিজের মতো করেই মিলেমিশে সংসার করেন।আর্নেস্তার প্রতিটি স্ত্রীর নিজস্ব ঘর আছে, নিজস্ব রান্নাঘর আছে, কোনো প্রতিযোগিতা নেই। সবাই তাদের জায়গা জানে। তারা সবাই একসঙ্গে কৃষিকাজ করেন, একসঙ্গে খাবার খান, একসঙ্গে বাড়ির কাজ করেন।পুরো পরিবার জীবিকা নির্বাহের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। তারা খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণরূপে তাদের ফসল এবং গবাদি পশুর উপর নির্ভর করে। তারা মূলত ভুট্টা, শিম, কাসাভা এবং কলা চাষ করে এবং যা তারা নিজেরা খায় এবং কিছু বিক্রি করে বাজারে। সেই অর্থ দিয়ে অন্যান্য পণ্য কেনেন।স্ত্রীরা সবাই দাবি করেন যে তারা সর্বদা তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে খোলামেলাভাবে কথা বলেন এবং পরিবারের ঐক্যের জন্য ক্ষোভকে প্রশ্রয় দেন না। যদি তারা নিজেদের মধ্যে সমস্যা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে তারা সমস্যাগুলো আর্নেস্তোর কাছে নিয়ে যান এবং তিনি তাদের কথা শোনেন, কোনো পক্ষ নেন না, বরং কেবল তাদের পরামর্শ দেন।মজার ব্যাপার হলো, মিজি আর্নেস্তো মুইনুচি কাপিংগা স্বীকার করেছেন যে মাঝে মাঝে তার সব সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের নাম নিয়ে তার সমস্যা হয়। তিনি তাদের প্রায় ৫০টি নাম তিনি মনে রাখতে পারেন। তবে তিনি দাবি করেন যে অন্যদের মুখ দেখলে তাদের নাম মনে পড়ে যায় তার। অসুস্থতা এবং দুর্ঘটনায় তার আরও ৪০টি সন্তান মারা গেছে। তাই তিনি সব সন্তানের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেন সব সময়।এবি 
    Loading…