ব্রিজের এক পাশ গেছে ভেঙে! আর অন্যদিকে দুই পাশের র্যালিংও গেছে পুরোটাই ভেঙে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পথচারী ও যাবাহন। প্রায় এক বছর থেকে এভাবেই ব্রিজের ভাঙাটি দিন দিন বড় হচ্ছে, এর পরেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। ব্রিজের এমন বেহাল দশায় আতঙ্কিত পথচারীরা।
কুড়িগ্রামের উলিপুরের দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডাড়ার পাড় এলাকায় ব্রিজটির বেহাল দশা প্রায় এক বছর ধরে। ধারনা করা হচ্ছে পাকিস্তান আমলে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও, করা হয়নি এর কোন সংস্কার। ফলে জনবহুল এই ব্রিজটির উঠানামার অংশ ভেঙে গেছে, এছাড়া র্যালিং দুইটা পুরোটাই ভেঙে গেছে, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডাড়ার পাড় এলাকার এই ব্রিজটির উপর দিয়ে দুর্গাপুর, জানজায়গির, মাঝবিল, কামাল খামার, ধরনীবাড়ী, তালের তল, ইসলামপুর, বাকারা মধুপুরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দশ হাজার মানুষ উপজেলা শহরে আসা-যাওয়া করে এই ভাঙা ব্রিজটি দিয়ে।
এছাড়াও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মিশুক গাড়ী, ভ্যান গাড়ী, সাইকেল, মটর সাইকেলসহ চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। কিন্তু এক বছরের অধিক সময় ধরে ব্রিজটির বেহাল দশা হলেও কোন সংস্কার করেনি কর্তৃপক্ষ!
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত বছর বামনি নদীর খননকাজ শুরু করলে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টিতে পানির প্রবল স্রোতে ব্রিজটি ভেঙে যায়। কোন রকমভাবে পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে কাঠের পাটাতন ও কয়েক টুকরা ইট বিছিয়ে চলাচল করছে। এক পাশে গাড়ী ঢুকলে অন্য পাশের পথচারী বা যানবাহন দাড়িয়ে অবস্থান করতে হয়।
কামাল খামার তেতুল তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনতাহা ও মাছুমা জানান, ভাঙা ব্রিজটির জন্য স্কুল যেতে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। গাড়ীঘোড়া আসলে আমাদের দাড়িয়ে থাকতে হয় অনেক সময়। যেভাবেই হোক ভাঙা ব্রিজটি ঠিক করে আমাদের স্কুল যাওয়ার অসুবিধা দূর করুন।
কামাল খামার তেতুল তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ভাঙা ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এমনকি অনেক সচেতন অভিভাবক তাদের ছোট বাচ্চাদের মাঝে মাঝে স্কুলে পাঠান না।
হোসেন আলী, হায়বর আলী, জামাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, ফরিদ মিয়াসহ অনেক পথচারী জানান, এই রাস্তাটি গ্রামের হলেও প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের হাজারের অধিক গাড়ী যাতায়াত করে। প্রতিদিন ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যানবাহন চলতে অসুবিধা হচ্ছে। একপাশে গাড়ী আসলে অন্য পাশের গাড়ী চলতে পারে না। বৃষ্টির সময় আরো বেশি অসুবিধা হতে পারে। তারা আরো জানান, গত সপ্তাহে একটি মিশুক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাত্রিসহ খাদে পড়ে গিয়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে। যে অবস্থা শুধু এখন দুই-একজন মরাটা বাকী আছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আলম বলেন, ব্রিজটি অতিদ্রুত নির্মাণ করা উচিত। ভাঙা ব্রিজটির ছবিসহ পিআইও অফিস ও উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, আমি নতুন এসেছি। ব্রিজটি সম্পর্কে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।