নাটোরের গুরুদাসপুরে শেষ সম্বল বসতভিটা লিখে নেওয়া ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ এনে ছেলের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন অসহায় মা।
অভিযুক্ত ওই ছেলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. সুজাউদ্দৌলা। সোমবার (৫ মে) ওই চিকিৎসকের মনিরা বেগম এই অভিযোগ দেন।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার মো. খাইরুল ইসলাম ও মনিরা বেগম দম্পতি ছেলে সুজাউদ্দৌলাকে ডাক্তারি পড়াতে সবটুকু জমি বিক্রি করে দেন। বাবা খাইরুল অসুস্থ শরীরেও অটোভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। ছেলে এখন ডাক্তার। তবুও শেষ সম্বল বসতভিটাও মা-বাবার কাছ থেকে লিখে নেন সুজাউদ্দৌলা। শুধু তাই নয়, ভরণপোষণের খরচ চাইলে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। এমনকি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করেন। আর বাড়ি থেকে বেব করে দেওয়ার হুমকি তো রয়েছেই। বাধ্য হয়ে বসতভিটা ফিরে পাওয়া ও ভরণপোষণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন মা মনিরা বেগম।
বাবা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, অসুস্থ শরীরেও ভ্যানগাড়ি চালিয়ে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছি। প্রতিদিন ওষুধ কিনতে হয়। যে ছেলের জন্য এতকিছু করেছি, সেই ছেলেও ভরণপোষণ দিচ্ছেনা।
বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. মো. সুজাউদ্দৌলা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বাবা-মা হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। বাবা স্বেচ্ছায় জমি লিখে দিয়েছিলেন। এছাড়াও জমি-জমা বিক্রি করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা করিয়েছেন, এমন ঘটনাও সত্য নয়। উপরন্তু বাবা-মাকে ভরণপোষণ দিতে চাইলেও তারা আমার সঙ্গে থাকতে চাননা।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এটা পারিবারিক বিষয়। অল্প সময়ের মধ্যেই আশা করি সমাধান হয়ে যাবে।
আরইউ