বগুড়ায় কারাগার থেকে পালানোর পর গ্রেফতারকৃত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত চার আসামির ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক মুমিন হাসান এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সুজন মিঞা।
কয়েদিরা হলেন- কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু, নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন, বগুড়ার কাহালুর মো. জাকারিয়া এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ।
পুলিশ কর্মকর্তা সুজন মিঞা বলেন, কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালানোর পর গ্রেফতারকৃত ৪ কয়েদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুইদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও বলেন, কয়েদিদের এখনও কারাগারে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেল থেকে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৪ কয়েদি পালানোর ঘটনায় জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে প্রত্যাহার করেছে কারা অধিদপ্তর। এর পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলার বিষয় উঠে আসায় বগুড়া কারাগারের ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, প্রধান কারারক্ষী আব্দুল মতিনসহ আরও ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।
গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে বিছানার চাদরকে রশি হিসেবে ব্যবহার করে পালিয়ে যায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি। ওই ৪ কয়েদি একই সেলে থাকার কারণে, দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে তারা কনডেম সেলের ছাদ কেটে কাপড়ের রশি বানিয়ে ছাদ থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে বুধবার (২৬ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জেলখানার অদূরে একটি বাজার থেকে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানায় ৩টা ৫৬ মিনিটে। এরপর পুলিশের সব ফাঁড়ি এবং টহল দলকে অ্যালার্ট করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪টায় সদর ফাঁড়ির সব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পলাতক ৪ আসামিকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষ যেয়ে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। পরে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে আবারও তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনার দিন সকালেই জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, ডিআইজি প্রিজনসহ একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এর পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষসহ মোট ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটির তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে।
এইচএ