এইমাত্র
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক বার্তা
  • দুর্গাপূজার ছুটিতে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলবে বিশেষ ৭ ট্রেন
  • বকশীগঞ্জে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
  • ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্য করে নৌ ও বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৪ বাংলাদেশি আটক
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ, প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়
  • সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী আর নেই
  • আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস
  • ওবায়দুল কাদেরের ভগ্নিপতিকে কুপিয়ে জখম
  • শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়ার আহ্বান খামেনির
  • আজ শনিবার, ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৫ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    কিশোরগঞ্জে বেড়েছে কাঠের আসবাবপত্রের চাহিদা

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম

    কিশোরগঞ্জে বেড়েছে কাঠের আসবাবপত্রের চাহিদা

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম

    কিশোরগঞ্জে যুগ যুগ ধরে মানুষদের ঘরে শোভা পাচ্ছে কাঠের তৈরি আসবাবপত্র। কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র। মানসম্মত কাঠ, বাহারি কারুকাজ ও নিত্য নতুন নকশার কারণে চাহিদা বাড়ছে কিশোরগঞ্জের তৈরি আসবাবপত্রের।

    জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা ও দোকান। এসব কারখানায় খাট, সোফা সেট, ডাইনিং ও ড্রেসিং টেবিল, আলমারি, ওয়ারড্রব, কেবিনেট, আলনা, চেয়ার, টেবিলসহ বিভিন্ন ধরনের কাঠের আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মানুষের। ভাগ্য বদলে এখন অনেকেই স্বাবলম্বী ও সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন।

    শনিবার (৬ জুলাই) সরেজমিনে জেলা শহরের শোলাকিয়া গাছ বাজার এলাকা গিয়ে দেখা যায়, কাঠের আসবাবপত্র ও বাহারি নকশার কাজ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। কেউ সেগুলো বার্নিশ করছেন, কেউ বা রোদে শুকাচ্ছেন। কেউ কাঠ কাটছেন, কেউ জোড়া দিচ্ছেন, কেউবা এগুলোতে ফুটিয়ে তুলছেন দৃষ্টিনন্দন নকশা।

    শোলাকিয়া গাছ বাজার এলাকার রতন ফার্নিচার এর মালিক মোঃ রতন মিয়া জানান, তিনি পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি আগে এই পেশাটি অবশ্য শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ বংশ পরম্পরায় তাঁরাই এই পেশাটি ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই পেশাটি এখন সকল সম্প্রদায়ের মধ্যেও ছড়িয়ে গেছে। একদিকে কাজের পরিসর কম থাকায় অনেকেই বিভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে যারা কাঠমিস্ত্রিদের সহযোগি হিসেবে একসময় কাজ করতেন, তারাই পরে সুদক্ষ কারিগর তৈরি হয়ে গেছেন। এভাবেই কাঠমিস্ত্রিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে বেঁচে আছেন।

    মেসার্স আরমান ফার্নিচারের কাঠমিস্ত্রি রফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি আসবাবপত্র বিক্রির দোকান ছিল জেলায়। সময়ের ব্যবধানে এখন জেলার বিভিন্ন উপজেলার আশপাশে শতশত দোকান গড়ে উঠেছে। আমরা ব্যবসায়ীরা দক্ষ কারিগর দিয়ে নতুন নতুন নকশার আসবাব তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক নকশার প্রায় সব ধরনের আসবাব তৈরি করি, যা গৃহস্থালিতে মানানসই হয়। আমরা ভালো মানের কাঠ ও নজরকাড়া ডিজাইনে আসবাবপত্র তৈরি করি, তাই এর চাহিদা রয়েছে।

    কাঠমিস্ত্রিরা জানান, তারা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ভালো মানের কাঠ জাতীয় গাছ সংগ্রহ করেন। তারপর এগুলো চিড়ে রোদে শুকিয়ে নেন। কাঠ যত শুকানো হবে তত মজবুত হবে। এরপর এগুলো বিভিন্ন আকারে কেটে নিয়ে তৈরি করেন চাহিদা মতো সামগ্রী। করাত, হাতুড়, বাডাল, মাডাল, রাঁদা, ড্রিল মেশিন ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে শক্তপোক্ত কাঠকে সাজিয়ে তোলেন ব্যবহার উপযোগি আসবাব। আকাশী কাঠ সবেচেয়ে ভালো। এই কাঠের তৈরী আসবাবপত্র টেকসই হয়। এছাড়া সেগুন, মেহগনি, কাঁঠাল ও রেইনট্রি গাছ কাঠের জন্য ভালো। ক্রেতাদের ফরমায়েশ অনুযায়ী বিভিন্ন নকশাও করে দেন তারা।

    কাঠমিস্ত্রি আল আমিন জানান, আগে একটা সময় এই অঞ্চলের অনেক মানুষ ছিল কর্মহীন। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। কিন্তু ২০০৮ সালের পর থেকে পাল্টে যেতে শুরু করে সেই চিত্র। ছোট ছোট দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করে তারা। আজ প্রায় প্রতিটি ব্যবসায়ী কয়েকটি কারখানা ও দোকানের মালিক। আর অনেকেই হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা। যারা নিজেদের পাশাপাশি জেলার অর্থনীতিতে দারুণ ভূমিকা রাখছেন।

    কাঠমিস্ত্রি দুলাল মিয়া বলেন, কাঠমিস্ত্রিদের দৈনিক মজুরি ৬০০-৭০০ টাকা। আবার যারা হেলপার, তাদের মজুরি কিছুটা কম। অনেক সময় চুক্তি নিয়েও কাজ করি।

    নকশা মিস্ত্রি কালাম বলেন, কাঠের ওপর নকশা ফুটিয়ে তোলা খুব সময়ের ব্যাপার। আস্তে-ধীরে নকশার কাজ করতে হয়। যদিও এখন মেশিনে নকশা করা যায়। তবে মেশিনে নকশার পর ফিনিশিংয়ের জন্য আমাদের হাতে কাজ করতে হয়। কাজের নকশা বুঝে আমরা টাকা নিচ্ছি।

    কাঠমিস্ত্রি আমিনুল ইসলাম বলেন, সবচেয়ে কম দামী কাঠ হলো রেইনট্রি গাছের কাঠ। এটির চাহিদাও কম। বেশি নকশা করে যে কোনো আসবাব তৈরিতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ দিন। বড় খাটে নকশা করে বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়। ৪৫-৫০ হাজার টাকায় এসব খাট বিক্রি হয়।

    ফার্নিচার ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া বলেন, আমাদের এখানে তৈরি কাঠের আসবাব রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। বাহারি কারুকাজ আর নিত্য নতুন নকশার তৈরি এসব আসবাব আমরা খুব অল্প লাভেই বিক্রি করি। তাই এর চাহিদা বেশি। সরকারের সহযোগিতা পেলে আসবাবপত্র রফতানিও করা সম্ভব হবে।

    এ ব্যাপারে জেলা বিসিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপ (ভাঃ) মোহাম্মদ রাকিবুর রহমান খাঁন বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলায় কাঠের মান ভালো এবং আসবাবপত্রের চাহিদা ব্যাপক। এরমধ্যে অনেকেই ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসার পরিধি বাড়িয়েছেন। এ শিল্প প্রসারে উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও পরামর্শ দেওয়া হবে।

    আরইউ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…