বগুড়ায় বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি। পানিতে ডুবে গেছে চরের নিম্নাঞ্চলের বসত বাড়ি, তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত।
চরাঞ্চলে বেশ কিছু উচু সড়ক ভেঙে যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। নদী তীর ও বাধের মাঝে বসতবাড়ীতে পানি প্রবেশ করায় বাড়ীঘর সরিয়ে নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে বনার্ত হাজারো মানুষ। এদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
বগুড়ায় যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে গত সপ্তাহের শুরু থেকেই। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে গত বুধবার রাতেই যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরের নিচু গ্রামগুলোর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ২০ হাজারেরও বেশি পরিবারের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিন উপজেলার ১৩৫৬ হেক্টর জমির পাট, রোপা আমনের বীজতলা, সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। ৩৬টির বেশি স্কুলে পানি ওঠায় অনানুষ্ঠিকভাবে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আলহাজ নাজমুল হক জানান, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট এই তিন উপজেলায় যমুনার পানি শনিবার দুপুরে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে এসব উপজেলার চরগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্নিবাড়ি, কামালপুর, চন্দনবাইশা, বোহাইল, হাটশেরপুর, ফুলবাড়ি ও চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নিচু জায়গা ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পানি বৃদ্ধি পেলেও যমুনা তীরের ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে এখনো কোনো ঝুঁকি দেখা দেয়নি। যমুনার ৬টি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে ইছামারা অংশে ভাঙন প্রবল। সেখানে নদী থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। ঝুঁকিপূর্ণ ওই এলাকা রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবুর রহমান জানান, যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। সারিয়াকান্দিতে ৫৬০ হেক্টর এবং সোনাতলা উপজেলায় ২৬১ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এসব জমিতে পাট, ভুট্টা ও সবজি চাষ করা হয়েছিল।
এফএস