এইমাত্র
  • মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার
  • দুই সপ্তাহে ২৩ প্রাণ কেড়েছে ডেঙ্গু
  • নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে নতুন অতিথি
  • নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে: ডা. তাহের
  • ১১ মাসে কোরআনে হাফেজ লক্ষ্মীপুরের শিশু তামিম
  • আজ থেকে সারা দেশে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু
  • মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
  • আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলাম না: মাহফুজ আলম
  • দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে চান ইবি শিক্ষার্থীরা
  • কটিয়াদীতে নিহতদের স্মরণে জামাতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল
  • আজ রবিবার, ৩১ ভাদ্র, ১৪৩১ | ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    এক মাসেই বিদ্যালয়ের ২০ ছাত্রীর বিয়ে

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম

    এক মাসেই বিদ্যালয়ের ২০ ছাত্রীর বিয়ে

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম

    সপ্তম থেকে দশম। এই চারটি শ্রেণির ছাত্রী উপস্থিতি কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়া ছাত্রীদের বেশির ভাগই এখন সংসার ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত। ছাত্র আন্দোলনের একমাসে এক বিদ্যালয়ের অন্তত ২০ ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে।

    নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় শাহীদা কাশেম বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা নির্বিচারে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া ২০ ছাত্রী আর বিদ্যালয়ে আসছে না। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুপস্থিত ছাত্রীদের তালিকা করার পর বাল্যবিবাহের বিষয়টি সামনে আসে।

    বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওই বাল্যবিয়ের বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাল্যবিয়ের শিকার ছাত্রীরা ছিল ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিভাবকরা গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। অধিকাংশ বিয়ে হয়েছে মেয়ের নানা, মামা ও আত্মীয়ের বাড়িতে।

    সমাজের একশ্রেণির অসাধু লোক ও নিকাহ রেজিস্ট্রার এই বাল্যবিয়ে দিয়ে থাকে। টাকার লোভে তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে বিয়ে সম্পন্ন করে। সেক্ষেত্রে ডুপ্লিকেট রেজিষ্টারও ব্যবহার করেন তারা।

    সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রী অনুপস্থিত। তালিকা করা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ওই ২০ ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে।

    বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থানীয় পৌরসভা, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীরাও এসব বিয়ের খবর জানতেন না। তালিকা অনুযায়ী খোঁজ নিতে গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

    অভিভাবকরা বলছেন, এলাকায় বখাটেদের উৎপাত, উত্ত্যক্ত, অপহরণ চেষ্টা এবং প্রেম করে পালিয়ে যাওয়াসহ নানা আতঙ্কে মেয়েদের বাল্যবিয়ে দিয়েছেন।

    স্থানীয়রা জানায়, কম্পিউটার দ্বারা জন্মসনদে বয়স বাড়িয়ে কতিপয় অসৎ কাজী দিয়ে এসব বাল্যবিয়ের কাবিননামা করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি তদারকি না থাকায় এবং অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হচ্ছে।

    স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক বলেন, ঝামেলা এড়াতে কাজীরা বাল্যবিয়েতে ডুপ্লিকেট রেজিস্টার ব্যবহার করেন। বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিকাহ রেজিস্টার দেন না তারা। তিনি মনে করেন, বাল্যবিয়ের হার কমাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে সচেতন হতে হবে।

    অষ্টম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানান, স্কুলে এসে দেখে তার বান্ধবীরা স্কুলে আসেনি। খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে, তার পাঁচ বান্ধবীসহ স্কুলের ২০ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তাকেও বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। অথচ পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছে রয়েছে তার।

    অপর এক ছাত্রীর বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ভ্যান চালক। স্বচ্ছল পরিবার থেকে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসায় তাকে বিয়ে দিয়েছি। তবে এখন মনে হচ্ছে বিয়ে না দিয়ে পড়াশোনা করানোই ভালো ছিলো।

    নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া আরেক ছাত্রীর বাবা রমিজুল করিম জানান, তিনি তার মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিতে চাননি। কিন্তু যুগ- জামানা খারাপ। তাছাড়া স্কুলে যাতায়াতের সময় তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা। নানাদিক ভেবে তিনি অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।

    স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন। তার মধ্যে গত মাসে ২০ জনের বিয়ে হয়েছে। এর আগেও অনেক শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট মাসিক আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপজেলা প্রশাসনের সকলকে অবহিত করেছেন তিনি।

    প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে- ৭ম শ্রেণিতে ৪ ছাত্রী, অষ্টম শ্রেণির ২ ছাত্রী, নবম শ্রেণির ৬ ছাত্রী, দশম শ্রেণির ৮ জন ছাত্রী। বর্তমানে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। স্কুলে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করলেও এলাকার অভিভাবকরা আসতে চাননা।

    উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেখামনি পারভিন জানান, বাল্যবিয়ের খবর তাদের কেউ জানায় না। ওই বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানিয়েছ্নে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন,শাহিদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়ে শিগগিরই অভিভাবক সমাবেশ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    এসএস

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…