বরিশালের গৌরনদীর শরিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষিকা কনিকা মুখার্জী ‘পদত্যাগ করলাম’ লিখে পদত্যাগপত্র বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি নানামুখী চাপের মুখে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ছুটি নিয়ে বিদ্যালয়েও যাচ্ছেন না, রয়েছেন অজ্ঞাত স্থানে। মঙ্গলবার সাদা কাগজে দুই শব্দের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই শিক্ষিকার সাকোকাঠী গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগের জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছিলেন। এতে আতংকিত হয়ে পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে কনিকা মুখার্জী স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন। ভয়ে তিনি গৌরনদী ছেড়ে বরিশাল নগরীতে আশ্রয় নিয়েছেন।
একাধিক শিক্ষার্থী দাবি করেন, সম্প্রতি নবম শ্রেণির পাঠদানের সময় শিক্ষিকা কনিকা মুখার্জী লেখাপড়ায় অমনোযোগী এক ছাত্রকে কটুক্তি করে বলেন, ‘আবু সাঈদের (বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র) মতো সন্ত্রাসী হবে নাকি?’- বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কনিকা মুখার্জীর পদত্যাগের দাবি তোলে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহীম জানান, মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্কুলের জীববিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র সহকারি শিক্ষিকা কনিকা মুখার্জীর স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্রটি হাতে পেয়েছেন। একটি সাদা কাগজে ওপরে ও নিচে দাগ কাটা মাত্র দুটি শব্দ ‘পদত্যাগ করলাম’ লেখা।
জানতে চাইলে শিক্ষিকা কনিকা মুখার্জী বলেন, ‘আমি বিধস্ত, কথা বলার মতো মানসিকতা নেই। আমি বাড়িও ছেড়েছি’। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘পদত্যাগ করলাম’ শুধু এইটুকু লিখেছি। কি পরিস্থিতিতে লিখেছি, সেটা আপনারা বুঝে নেন। ছাত্রদের করা অভিযোগ মিথ্যা ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে জানান কনিকা।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, কনিকা মুখার্জী পদত্যাগ করেছেন বলে সরিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি পদত্যাগপত্র হাতে পাননি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, সহকারি শিক্ষক কনিকা মুখার্জী শারিরীক অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটিতে আছেন। তার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র তিনি পাননি। যদি কাগজে দুই শব্দের কিছু লিখেও থাকেন, চাকরিবিধিতে সেটা গ্রহনযোগ্য হবে না।
এফএস