রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরিধান করে ডাকাতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র্যাব। এর মধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব এবং তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) পুলিশ।
শনিবার ও রোববার দুই দিন মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন জানান, গত শুক্রবার দিনগত রাতে মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড় বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্যবসায়ী বাসায় ডাকাতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান এখনো চলমান আছে।
অন্যদিকে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, আটজনকে গ্রেফতার করেছেন। এর পাঁচজন বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিচ্যুত ও তিনজন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এ ঘটনায় কোনো বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে মোহাম্মদপুরে তিন রাস্তা মোড়ের কাছে একটি বাড়িতে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল প্রবেশ করে। একপর্যায়ে তারা ওই বাসা থেকে সাড়ে ৭৫ লাখ টাকা ও ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে বাড়িটিতে কয়েকজন ডাকাত প্রবেশ করে। এরপর সিড়ি বেয়ে তারা ওপরে উঠে। এ সময় তাদের মুখে মাস্ক ছিল।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান জানিয়েছেন, মুখে মাস্ক লাগিয়ে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে আসা লোকজনকে দেখে দারোয়ান গেট খুলে দেয়। এরপর তারা তিনতলায় আবু বকরের ফ্ল্যাটে যায়। র্যাবের জ্যাকেট পরা ও সাদা পোশাকের লোকজনও ছিল তাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা যে কয়জন এসেছিলেন, তারা এমনভাবে এসেছিলেন যে বোঝার উপায় নেই তারা সেনাবাহিনীর সদস্য নন।
ভুক্তভোগী আবু বকর বলেন, তারা বাসায় ঢুকে আমার বৈধ অস্ত্র থানায় জমা দেইনি বলে অস্ত্র নিতে আসার কথা জানায়। অস্ত্র থানায় জমা দেওয়া হয়েছে জানালেও তারা কোনো কথা না শুনে অস্ত্র খোঁজার নাম করে আলমারিগুলো খুলে তছনছ করে এবং টাকা স্বর্ণালংকার নেয়।
তিনি জানান, পরে তারা ফ্ল্যাটের একপাশে আমার অফিসে যায় এবং একইভাবে অস্ত্র আছে বলে সিন্দুক ও আলমারি খুলে টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে ভোর সোয়া ৪টার দিকে বের হয়ে যায়।