এইমাত্র
  • জালিয়াতির অভিযোগ, নায়িকাকে সমন পাঠালো পুলিশ
  • নানান অনিয়মেই চলছে মানিকগঞ্জ শিশু হাসপাতাল!
  • 'পাপমুক্ত' ছবির নায়ক ও হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা
  • হোসেনপুরে ইসলামিক ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় যুবক আটক
  • তিন পার্বত্য জেলায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণ না করার অনুরোধ
  • রাজশাহীর সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান আসাদ গ্রেফতার
  • পুলিশের কনস্টেবলের পর এসআই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
  • চিপস কি‌নে দেয়ার কথা ব‌লে অপহৃত শিশুকে মঠবাড়িয়া থেকে উদ্ধার
  • সামোয়া উপকূলে ডুবল নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনীর জাহাজ
  • ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা নেতানিয়াহুর
  • আজ রবিবার, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৬ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    স্বাধীনতার বায়ান্ন বছরেও নির্মাণ হয়নি কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ

    অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম
    অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম

    স্বাধীনতার বায়ান্ন বছরেও নির্মাণ হয়নি কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ

    অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম

    মৌলভীবাজারের শেরপুর এলাকায় স্বাধীনতার দীর্ঘ বায়ান্ন বছরেও নির্মাণ হয়নি কুশিয়ারা নদীর সাত কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ। বছরের পর বছর এ নদীভাঙনে বন্যাকবলিত হয় সদর ও রাজনগর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রাম। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোন এলাকার প্রাচীনতম শেরপুর বাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

    মৌলভীবাজার কুশিয়ারা পাড়ের খলিলপুর, মনুরমুখ ইউনিয়ন ও শেরপুর শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোন এলাকায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। প্রতি বছর এ মানুষগুলোর কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই।

    চলতি বছর বর্ষার শুরুতে এ নিয়ে তিনবার কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে ও পাড় ভেঙে পাঁচটি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। শুধু যে এবারের বর্ষায় এ অঞ্চলে বন্যা, তা কিন্তু নয়। প্রতি বছর এমন ভয়াবহ বন্যায় কয়েক হাজার পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়। এর ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।

    পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে, মৌলভীবাজারের মনুরমুখ থেকে নেমে আসা কুশিয়ারা নদী ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রাচীনতম শেরপুর বাজার হয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে গিয়ে মিশেছে। এ নদী মনুরমুখ থেকে শুরু করে মৌলভীবাজারের শেরপুর বাজার দক্ষিণ দিক পর্যন্ত দুপাড়ের প্রায় ১৪ কিলোমিটার বিশাল এলাকাজুড়ে নেই কোনো প্রতিরক্ষা বাঁধ।

    স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার আগে থেকেই মানুষের স্বাভাবিক পায়ে হাঁটার সমতল সড়ক ছিল এ নদীর দুই তীরে সিলেটের বালাগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের শেরপুরে। এতে দুপাড়ের ১৪ কিলোমিটার নদীর বাঁধ পুরোটাই উন্মুক্ত। প্রতি বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নদী উপচে রাস্তা ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে সদর উপজেলার খলিলপুর, মনুরমুখ, আখাইলকুড়া ও রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নসহ গ্রামের পর গ্রাম। এ পর্যন্ত কুশিয়ারার করাল গ্রাসে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার অনেক পরিবার।

    এছাড়াও নদী তীরবর্তী অসংখ্য বাড়িঘর ও হাটবাজার এখনও ভাঙনের মুখে। জেলার প্রাচীনতম শেরপুর খেয়াঘাট বাজারও এখন হুমকির সম্মুখীন। সরেজমিনে মনুরমুখ, শেরপুর বাজার, ব্রাহ্মণগ্রাম ও হামরকোন গ্রাম ঘুরে স্থানীয় একাধিক লোকের সঙ্গে কথা হয়।

    ব্রাহ্মণগ্রামের যুবক উৎপল ভৌমিক, ব্যবসায়ী আব্দুল বাছিত ও জুয়েল আহমদ জানান, মাসের মধ্যে এ নিয়ে তারা তিনবার কুশিয়ারার পানিতে প্লাবিত হয়েছেন। দেখা গেলো, অনেক পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে থেকে বাড়িতে আসতে না আসতেই আবার পড়েছেন বন্যার কবলে।

    তারা জানান, কুশিয়ারা নদীতে প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকাতে তারা জন্মের পর থেকেই এ অবস্থার শিকার। তাদের দাবি, মনুরমুখ থেকে শেরপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত নদীর বাঁধ নির্মাণ করা হোক। এ বাঁধ নির্মাণ হলে তারা আর বন্যায় আক্রান্ত হবেন না।

    ওই এলাকার বৃদ্ধ জমির হোসেন জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকেই তারা কুশিয়ারা নদীর বাঁধ নির্মাণের দাবি করে আসছেন। কিন্তু বিষয়টি কেউ আমলে নিচ্ছে না। এতে বন্যায় বছরের পর বছর তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

    এদিকে, মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, কুশিয়ারা নদী মৌলভীবাজার অংশে রয়েছে ৩৪ কিলোমিটার। এ নদী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুরমুখ থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার অংশে কোন প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। এছাড়াও, অপর পাড়ের সিলেট বালাগঞ্জ অংশে একই অবস্থা। এতে নদীতে পানি বাড়লেই দুই তীরে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা।

    তিনি আরও জানান, নদীপাড়ের রাস্তার মালিকানা এলজিইডির আওতাভুক্ত। কাজেই পানি উন্নয়ন বোর্ড চাইলেই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

    তবে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিএম আব্দুল মুমিন বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙন রক্ষায় ৯৮০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রকল্পে বাঁধ উঁচুকরণ ও নদী খননসহ একাধিক কর্ম-পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে কুশিয়ারার বন্যা থেকে এ অঞ্চলের মানুষ স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

    এসএফ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…