ভূমিসেবা অনলাইনে হলে দুনীতি শতভাগ নির্মূল করা সম্ভব। আমরা সেদিকেই এগোচ্ছি। সব সেক্টর ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এতে সেবাপ্রত্যাশীদের আর কারো কাছে যেতে হবে না। গ্রামে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে তারা জমি সংক্রান্ত সব কাগজপত্র পেয়ে যাবে। তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছানোর তাগিদ দিয়ে এসব কথা বলেন ভূমি উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ।
মঙ্গলবার সকালে ভূমি ভবনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচি স্বয়ংক্রিয় ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (এলামস) এবং ভূমি রাজস্ব মামলা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক পৃথক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ, মো. এমদাদুল হক চৌধুরী ও মাইসফ্ট হেভেন (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোফাখ্খারুল ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভূমিসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক সেক্টরের প্রধানরা তাদের সেবা মূলক কার্যক্রম ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের নিজ নিজ পরিচয় তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসান আরিফ বলেন, ভূমিসেবা কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষ বিশেষত গ্রামীণ জনপদের মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা রয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারের চলমান আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় কাঙ্ক্ষিত ভূমিসেবা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভূমি নামজারি, ভূমি কর পরিশোধ ও হোল্ডিং নম্বর প্রাপ্তির ভয়-ভীতি ও সংশয় দূর হবে।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভূমিসেবার জন্য ভূমি ভবনের কল সেন্টারে ফোন করে থাকেন। তাদের নাম, পেশা, অঞ্চল, কাঙ্ক্ষিত সেবার ধরন নিয়ে গবেষণা ও এনালাইসিস করার পরামর্শ দেন। এতে করে ভূমি পরিষেবা কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা ও সেবার মানোন্নয়ন ঘটানো সহজ হবে। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশে জমি কিনে বাড়িঘর নির্মাণ করেন। তাদের জায়গা-জমি প্রায়ই মামলাবাজরা দখল করে হয়রানি করে থাকে।
প্রবাসীদের ভূমি সেবাদান কার্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সহায়তাদানের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, একটি শ্রেণি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি দখলের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে। কিন্তু মামলার নোটিস মন্ত্রণালয় যথাসময়ে না পাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে সদা সজাগ থাকতে হবে।
ভূমিসেবায় সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক এক কর্মশালায়ও যোগদান করেন ভূমি উপদেষ্টা।
এর আগে নবনিযুক্ত ভূমির সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ ভূমি ভবনে স্থাপিত ভূমি নাগরিক সেবা কেন্দ্র ও কল সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং ভূমি সংক্রান্ত নাগরিক সেবা কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। তিনি কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যাবলী নিয়ে কথা বলেন। নাগরিকদের সঙ্গে ভালো আচরণ, হয়রানিমুক্ত ভূমিসেবা ও কাজের গুণগত মান বজায় রাখার পরামর্শ দেন।
এসএফ