এইমাত্র
  • মানুষমাত্রই উদ্যোক্তা, তারা শ্রমিক না: প্রধান উপদেষ্টা
  • মেট্রোরেল লাইনের ফানুস রাতভর পরিষ্কার করলো ডিএমটিসিএল
  • টানা তৃতীয়বার এআইপিএসের বর্ষসেরা আর্জেন্টিনা
  • ভারত থেকে আসছেন না চিন্ময়ের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ
  • পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
  • সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর ও তার স্ত্রীর ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান
  • পঞ্চগড়ে বছরের প্রথম দিনেই জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি
  • নারী চিকিৎসকের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে ডিম ব্যবসায়ীর প্রেম, বিয়ে না করায় অপহরণ
  • ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে সড়ক-মহাসড়ক, ধীরগতিতে চলছে যানবাহন
  • 'বাংলাদেশকে জুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি দিয়েছেন আল্লাহ'
  • আজ বুধবার, ১৮ পৌষ, ১৪৩১ | ১ জানুয়ারি, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    এবারও 'থার্টিফার্স্ট নাইটে' উন্মুক্ত আয়োজন নেই কক্সবাজারে

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম
    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম

    এবারও 'থার্টিফার্স্ট নাইটে' উন্মুক্ত আয়োজন নেই কক্সবাজারে

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম
    ফাইল ফটো

    আগামী ৩১ ডিসেম্বর সূর্যটি পশ্চিমাকাশে ডুবে গেলেই প্রতীক্ষা শুরু হবে নতুন বছরের সূর্যোদয়ের। আর সূর্যডুবার এ রাতেই পৃথিবীর হালখাতা থেকে স্মৃতি হবে ২০২৪ নামের আরো একটি বছর। বুধবারের সূর্যের সাথে শুরু হবে ২০২৫ সালের পথচলা। বিদায় বেদনার মাঝেও ৩৬৫ দিনের সফলতা-ব্যর্থতার হিসাব পেছনে ফেলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় ৩১ ডিসেম্বর রাতে ২০২৫কে স্বাগত জানিয়ে পালন করা হবে থার্টিফাস্ট নাইট।

    বিগত দেড়যুগ ধরে প্রতিবছর থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে পর্যটন নগরী কক্সবাজার লোকারণ্য হয়ে উঠে। তবে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢল এবং কোভিড-১৯ পিরিয়ডের কারণে গত অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে প্রকাশ্যে থার্টিফাস্ট উদযাপন। তবুও থার্টিফাস্ট এবং বছরের শেষ সূর্যাস্থ দেখতে কক্সবাজার সৈকত ও আশপাশের পর্যটন এলাকায় অতিথি ও স্থানীয় মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়। এবারও তেমনটি প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের ।

    কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. তানভীর হোসেন বলেন, সার্বিক আইনশৃংখলা বিবেচনায় এবারও বীচে বা অন্যকোন খোলা স্থানে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসনের থার্টিফাস্ট সংক্রান্ত মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে, পর্যটকরা চাইলে নিজেদের মতো নতুন বছর উদযাপনে মাঝরাত পর্যন্ত বীচে ঘুরতে পারবেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে থাকবে। ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে শহরের অভ্যন্তরে যানজট কমাতেও।

    কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন বলেন, একবিংশ শতাব্দির শুরু হতে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে বেসরকারি টেলিভিশন কিংবা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী সৈকতে উন্মুক্ত আয়োজনে বর্ষবরণ জমাতো। তারকা হোটেল গুলো আয়োজন করতো ইনডোর অনুষ্ঠান। যেখানে বহিরাগতরাও অংশ নিতে পারত। কিন্তু ২০১৭ সালে একসাথে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা আগমণ ঘটে। পূর্ব থেকে অবস্থান করা আরো তিন লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে উখিয়া-টেকনাফে ৩৩টি ক্যাম্পে এখন রোহিঙ্গার অবস্থান প্রায় ১২ লাখ। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় ২০১৭ সাল হতে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে সৈকতে উন্মুক্ত বা বাউন্ডারি ভুক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ হয়। আর ২০১৯ সালে করোনা মহামারীর পর পুরো পর্যটন নগরী-ই বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে থার্টিফার্স্ট নাইটের সেই জমজমাট আয়োজন আর হচ্ছে না কক্সবাজারে।

    কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাবের সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, এবারো থার্টিফার্স্টে উন্মুক্ত কোন আয়োজন নেই। তবে, তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইজ, সায়মন বীচ রিসোর্ট, রামাদা, মারমেইডসহ আরো কয়েকটি হোটেল ইনহাউজ গেস্টদের জন্য আয়োজন করছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। কিন্তু এবারও বাইরের কোন অতিথিকে এসব উপভোগের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তাই এবারের থার্টিফাস্ট নাইট বা নতুন বর্ষ বরণকেও ‘প্রাণহীন’ বলে উল্লেখ করছেন পর্যটকরা।

    ট্যুরস অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, থার্টিফাস্ট নাইট উৎসবের আগেই বড়দিন ও শীতকালীন ছুটি উপলক্ষ্যে পর্যটকে ভরে গেছে কক্সবাজার। সমানতালে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন সমুদ্র সৈকত, ইনানী, হিমছড়ি, রামুর বৌদ্ধপল্লী, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, মহেশখালীর আদিনাথসহ পুরো কক্সবাজারের পর্যটন স্পটে। আর সরকারের নিয়ম মেনে সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন দুহাজার পর্যটক। বিগত সময়ে অনেক ভ্রমণপিপাসু সেন্টমার্টিনে অবস্থান করে নতুন বছরকে বরণ করতো।

    তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) সায়ীদ আলমগীর জানান, থার্টিফাস্টকে পর্যটকদের কাছে উপভোগ্য করতে বর্ষ বরণে আমরা ইনডোর আয়োজন করি। এবারও বলরুমে ইনহাউজ গেস্টদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের করা হচ্ছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে ক্রিসমাস ব্যুফে ডিনার এবং থার্টিফাস্ট নাইটে রসালো ম্যানোতে সাশ্রয়ী মূল্যে রাখা হয়েছে গালা ব্যুফে ডিনার। কক্সবাজারে শিশুদের বিনোদন ও রাতের বেলা উপভোগ্য কিছু না থাকায় দু’একদিন পর পর্যটকদের ফিরে যেতে হয়, এমন অভিযোগ সবসময় শুনতে হয়।

    কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, মৌসুমের এসময়টা বেরাতে সবাই কক্সবাজারকেই প্রাধান্যে রাখে। আর কক্সবাজার আসা পর্যটকদের সিংহভাগ এক-দুদিনের ট্যুরে সেন্টমার্টিন যেতেন। কিন্তু এবছর পর্যটক নির্দিষ্ট পরিমাণ করে দেয়ায় আগের সুযোগ অবারিত নেই। এরপরও ইংরেজি নতুন বছর ২০২৫-কে স্বাগত জানাতে পর্যটক-দর্শণার্থী মিলে কয়েক লাখ মানুষের মিলন মেলা হবে আশা করা যায়। ইতোমধ্যে অনেক হোটেল ৮০-৮৫ শতাংশ বুকিং হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে বলে আশা করা যায়।

    কক্সবাজার জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, অতীতে ভ্রমণকারিরা বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে রাত ১২টা ১মিনিটে পুরোনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করতো। এ সময় আতশবাজির ঝলকানি এবং ফানুসের আলোয় ঝলমল হতো অন্ধকার আকাশ। বছর ছয়েক আগে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে থার্টিফাস্ট নাইটের উৎসব জমকালো ও উপভোগ্য ছিল।

    কক্সবাজার চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয় ও অন্যকোন ইস্যু কক্সবাজারের সৌন্দর্য্যকে স্নান করতে পারেনি। সবাই মিলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সৈকততীরে থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা গেলে পর্যটনের বিভিন্ন সেক্টরে কয়েকশ কোটি টাকা বাণিজ্য হতো।

    কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, থার্টিফাস্ট-নাইট উপলক্ষে কক্সবাজার হতে টেকনাফ সৈকতের কোথাও উন্মুক্ত স্থানে আতশবাজি, ফটকা ফোটানোসহ কনসার্ট, গান-বাজনাসহ সবধরনের আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের অতিথিদের জন্য নববর্ষ উদ্যাপনে ইনডোর আয়োজন করতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায় বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করতে পারেন পর্যটক বা দর্শনার্থীরা। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পর্যটন এলাকায় টহলে থাকবে। নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ ও র‍্যাব।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…