নীলফামারী মেডিকেল কলেজ বন্ধ বা স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র চলছে এমন অভিযোগে সর্বস্তরের জনগণ ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।
নীলফামারী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্সের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার, সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী আহমেদ রায়হান, জজ কোর্টের জিপি আবু মো. সোয়েম, বার কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফসহ আরও অনেকে।
এসময় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম বা ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না। এই প্রতিষ্ঠান নীলফামারীবাসীর বহুদিনের স্বপ্ন। এটি বন্ধ করে দেওয়া বা অন্য জেলায় স্থানান্তরের চেষ্টা করা হলে তাঁরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবেন। নীলফামারীর মানুষ তাঁদের অধিকার রক্ষার জন্য রাস্তায় নামতে প্রস্তুত।
শিক্ষার্থীরা বলেন, নীলফামারী মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও চিকিৎসক থাকার পরেও এটা বন্ধের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। একটি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হতে পারে না। মেডিকেল কলেজকে মানহীন ট্যাগ দিয়ে বন্ধের সেই ষড়যন্ত্র বন্ধ করে অতিসত্বর মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান তারা।
আন্দোলনকারীরা সরকারের প্রতি দ্রুত কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানান। যাতে নীলফামারীর জনগণ চিকিৎসা ও শিক্ষার পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে পারেন। আন্দোলনকারীরা স্পষ্টভাবে জানান, তাঁরা নীলফামারী মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেবেন না এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দিতে পিছপা হবেন না।
নীলফামারী মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চালু রাখা এবং দ্রুত স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া জেলা আইনজীবী সমিতি, আইনজীবী সহকারী সমিতি, বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি, নীলফামারী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট নীলফামারী মেডিকেল কলেজসহ চারটি নতুন মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয় সরকার। পরে ৩০ আগস্ট নীলফামারী মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়। একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান খুলনা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম শাহ।
পরে ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর প্রথম ব্যাচের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী ডায়াবেটিক হাসপাতালের নতুন ভবনে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়।
এফএস