বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল ধর্মাবলম্বী নগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের ভূমিকাকে সমুন্নত রেখে ওয়াকফ সংশোধন আইনটি ভারত সরকার পুনর্বিবেচনা করবে, আমরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করি।
আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে ভারতের পার্লামেন্টে মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ নামে একটি আইন পাশ করা হয়। আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি যে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই আইনে। ভারতে মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতে কোনো অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে এর প্রভাব বাংলাদেশে এসে পড়ে, এজন্যই আমরা বলেছি আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন বজায় থাকে এবং কোনোভাবেই যেন এর প্রভাব এই ভূখণ্ডে এসে না পরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ভারতের জনসংখ্যার ১৪% অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে- যা ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
‘‘ভারতে ওয়াকফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণ মূলক কাজে। নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।”
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘ভারতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের এই জাতীয় বোর্ডে অথবা কোনো আইনি সংগঠনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোনো অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে এই আইনটি একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসাবে বিবেচিত হবে। নতুন আইনের পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াকফ জমির উপর গড়া মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
তিনি বলেন, ‘‘নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিসমূহের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।”
এইচএ