ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর প্রতিবেশী দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে সৌদি আরব। বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানিয়েছেন দেশটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) পেহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘটনার জের ধরে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নয়াদিল্লি এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল-এলওসি) বরাবর উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ উভয় পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সৌদি আরব প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই দুটি দেশই সৌদি আরবের বন্ধু রাষ্ট্র। আমরা চাই না পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক।’
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান পৃথকভাবে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় তিনি ‘পরিস্থিতির অগ্রগতি ও উত্তেজনা হ্রাসের প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করেছেন’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের সময় কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়। উভয় দেশই সম্পূর্ণ ভূখণ্ডের ওপর নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে।
মঙ্গলবার যখন এই হামলার ঘটনা ঘটে, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সফরে ছিলেন। হামলার খবর পাওয়ার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তার সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন।
সৌদি আরবের আগেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালনের চেষ্টা করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আলোচনার আয়োজন করেছিল। এ ছাড়াও, রিয়াদ সুদানের যুদ্ধ এবং লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নিরসনেও আলোচনা আয়োজন করেছে।
এইচএ
