প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পেহেলগামের অপরাধীদের ‘কল্পনাতীত শাস্তি’ দেওয়ার অঙ্গীকার ঘোষণার পর উপত্যকায় শুরু হয়ে গেছে ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘বুলডোজার নীতি’। ২২ এপ্রিলের সশস্ত্র গোষ্ঠীর গুলিতে ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় কুশীলবদের একজনকেও ধরতে না পারলেও জম্মু–কাশ্মীর প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার থেকে সন্দেহভাজনদের ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করেছে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শোপিয়ান, কুলগাম ও পুলওয়ামা জেলায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। গত কয়েক দিনে সন্দেহভাজনদের ওপর দমন অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।
কাশ্মীর উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর মোকাবিলায় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর এই কৌশল একেবারেই নতুন। এতকাল নানাভাবে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়েছে। সন্দেহভাজনদের আটক করে জেরা করা হয়েছে। কিন্তু স্রেফ সন্দেহের বশে কারও বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়নি। বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র বা গুজরাটের ‘বুলডোজার নীতি’ এবার চালু হয়ে গেল কেন্দ্রশাসিত জম্মু–কাশ্মীরেও।
দেশটির গণমাধ্যমের খবর, শোপিয়ানের চোপোটিপোরা গ্রামে শাহিদ আহমেদ কুত্তের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে লস্কর কমান্ডার বলে দাবি করছে ভারত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুত্তে গত তিন-চার বছর ধরে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ সমন্বয় করার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। কুলগামের মাতালম এলাকায় আরেক সন্দেহভাজন জাহিদ আহমেদের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলওয়ামার মুররান এলাকায় বিস্ফোরক পেতে আহসান উল হক নামে একজনের বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের দাবি, আহসান ২০১৮ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি উপত্যকায় ফিরে আসেন।
এহসান আহমেদ শেখ নামে একজন সন্দেহভাজনের দোতলা বাড়িও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে দাবি করা হচ্ছে, যিনি ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে সক্রিয় ছিলেন।
পঞ্চম সন্দেহভাজন হারিস আহমেদের বাড়িও বিস্ফোরক পেতে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার কাচিপোরা এলাকার ওই বাসিন্দা ২০২৩ সাল থেকে সক্রিয় বলে দাবি করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে, পেহেলগাম হামলার মূল সন্দেহভাজন আদিল হুসেন থোকের এবং আসিফ শেখের বাড়ি বিস্ফোরণে ধ্বংস করা হয়।
বৃহস্পতিবার অনন্তনাগ পুলিশ পেহেলগাম হামলায় জড়িত সন্দেহে থোকের এবং আরও দুইজনের স্কেচ প্রকাশ করেছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্য দুই সন্দেহভাজন—হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলি ভাই ওরফে তালহা আপন ভাই। তাঁরা পাকিস্তানি নাগরিক এবং তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য ২০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
এসকে/আরআই