এইমাত্র
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুটবল টার্ফকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা
  • বিশ্বকাপের আগে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা, প্রতিপক্ষ যারা
  • কুমিল্লায় দেশের প্রথম স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি বিপণন ডিপো চালু
  • বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১২০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি
  • কুয়াকাটায় চাঁদাবাজি মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ
  • পুরো আইপিএলের জন্য এনওসি পাবে মুস্তাফিজ, তবে
  • নভেম্বরে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৩ ও আহত ১৩১৭ জন
  • ছয় মাসের মাথায় চাকরি হারালেন আনচেলত্তি
  • নিকুঞ্জের সামনে ট্রাক উল্টে এয়ারপোর্ট রোডে তীব্র যানজট
  • রাজধানী থেকে এনসিপি নেত্রীর মরদেহ উদ্ধার
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ, ১৪৩২ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে লিচুর সবুজ গুটি

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ এএম
    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ এএম

    সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে লিচুর সবুজ গুটি

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ এএম

    চট্টগ্রামের দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম কৃষিপ্রধান এলাকা সাতকানিয়া। এই উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য আদর্শ বলে পরিচিত। প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতে সাতকানিয়ার বাগানগুলোতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ লিচু, আর কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি।

    উপজেলার এওচিয়ার ছনখোলা, সোনাকানিয়া, পুরানগড় ও মাদার্শা ইউনিয়নের লিচু বাগানগুলোতে এখন থোকায় থোকায় সবুজ লিচুর সমারোহ। প্রতিটি গাছ যেন প্রকৃতির একেকটি সবুজ ভাণ্ডার। দূর থেকে তাকালে মনে হয়, গাছের শাখাগুলো সবুজ লিচুর ভারে নুয়ে পড়ছে।

    সাতকানিয়ার ছনখোলা ইউনিয়নের লিচু চাষি মো. আলমগীর বলেন, "এবার গাছে এমনভাবে লিচু ধরেছে যে মনে হয় মেহনতের ফল পাওয়া যাবে। প্রকৃতির দয়া থাকলে ভালো আয় হবে।"

    একই কথা জানালেন মাদার্শা ইউনিয়নের চাষি নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, "গত দুই বছরের তুলনায় এবার গুটি বেশ শক্ত হয়েছে। এখন শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।"

    কৃষকদের মতে, এ বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে অনুকূল আবহাওয়া এবং নিয়মিত পরিচর্যার কারণে লিচুর গুটি বড় হয়েছে এবং এখন সবুজ রঙে ভরে গেছে। এখনো ফল পাকেনি, তবে আরও কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সবুজ লিচু লালচে আভা নিতে শুরু করবে।

    লিচু গাছে ফল আসার পর থেকে পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। সাতকানিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে এখন কৃষকরা সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছে পানির ব্যবস্থা, পোকামাকড় প্রতিরোধে কীটনাশক ছিটানো, এবং গাছের গোড়ায় সারের প্রয়োগ—সব কিছুতেই এখন সচেতনতা দেখা যাচ্ছে।

    সাতকানিয়ার লিচু শুধুমাত্র স্থানীয় বাজারেই নয়, চট্টগ্রাম নগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, সাতকানিয়ার লিচুর চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। মিষ্টি স্বাদ, বড় আকার এবং তাজা রাখার সক্ষমতার জন্য এখানকার লিচু আলাদাভাবে পরিচিতি পেয়েছে।

    ব্যবসায়ী মো. জাকির বলেন, "আমরা আগেই বাগান মালিকদের সাথে চুক্তি করে রাখি। মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই সংগ্রহ শুরু হবে। বাজারে এবার দামও ভালো থাকবে বলে আশা করছি।"

    যদিও সবকিছু ভালোই চলছে, তারপরও কৃষকদের মনে কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়, অতিবৃষ্টি কিংবা শিলাবৃষ্টি—যেকোনো দুর্যোগ লিচুর ফলন বিপর্যস্ত করতে পারে। এজন্য তারা সার্বক্ষণিক সতর্ক রয়েছেন। অনেকে ইতিমধ্যেই গাছের চারপাশে বাঁশের কাঠামো তৈরি করে ফল রক্ষার চেষ্টা করছেন।

    বর্তমানে গাছে থাকা সবুজ লিচুগুলো ধীরে ধীরে আকারে বড় হচ্ছে। আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে লিচুগুলো পাকতে শুরু করবে। তখন সাতকানিয়ার প্রতিটি বাজার ভরে উঠবে টকটকে লাল লিচুতে। সেই সঙ্গে জমবে বিকিকিনি, সরব হয়ে উঠবে হাট-বাজার।

    সাতকানিয়ার কৃষকরা এখন দিন গুনছেন। প্রকৃতির অশেষ দয়ার আশায় বুক বাঁধছেন তারা। তাদের পরিশ্রম আর ভালোবাসায় বড় হওয়া প্রতিটি লিচু যেন শুধু ফল নয়, বরং স্বপ্নপূরণের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবছর যদি প্রকৃতি সহায়ক হয়, তাহলে শুধু কৃষকদের মুখেই নয়, সাতকানিয়া জুড়েই ছড়িয়ে পড়বে সাফল্যের উচ্ছ্বাস।

    সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, "আমরা নিয়মিত কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। লিচুর গুটি বড় হওয়ার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঝড় ও শিলাবৃষ্টি থেকে রক্ষা করা। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের ফলন রেকর্ড হবে।"

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…