ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। জোবায়েদকে হত্যার সময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন তার ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা। রক্তাক্ত অবস্থায় বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছিল জোবায়েদ, কিন্ত মন গলেনি বর্ষার।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে এমনই চাঞ্জল্যকর তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, জোবায়েদকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ওই ছাত্রী ও এবং তার প্রেমিক মাহির রহমান। বাসায় পড়াতে গিয়ে জুবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বর্ষার। জুবায়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে মাহির রহমানের সঙ্গে ব্রেকআপ করেন বর্ষা। কিন্তু মাহিরকে ভুলতে পারছিলেন না বর্ষা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জোবায়েদকে আর ভালো লাগতো না বর্ষার। বর্ষা এ ঘটনা তার সাবেক প্রেমিক মাহিরকে জানায়। এরপর বর্ষার জীবন থেকে জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করে বর্ষা ও মাহির। প্রথমে ভয়ভীতি দেখাতে চাইলেও বর্ষার চাপে হত্যার পরিকল্পনা করে মাহির। ঘটনার দিন মাহির ও তার বন্ধু আয়লান অনলাইনে ছুরি কিনে বর্ষার বাসায় যায়। বর্ষা তখন ফোনে জোবায়েদকে বাসায় ডেকে আনে । পরে বর্ষার বাসার সিঁড়িতে মুখোমুখি হয় দুজন। সেখানে মাহির জোবায়েদকে বর্ষার কাছ থেকে সরে যেতে বলে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মাহির জোবায়েদের গলায় ছুরি মারে। জানা গেছে ছুরিকাঘাতের সময় বর্ষা ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিল। জোবায়েদ যখন ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছিল, তখন বর্ষা তাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘তুমি না সরলে আমি মাহিরের হব না।’ পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পুরো হত্যার পরিকল্পনাই ছিল বর্ষার। বিষয়টি অনেকটা বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার মতো। বর্ষা দুই প্রেমিকের কাউকেই ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তাই সে নিজেই জোবায়েদকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা সাজায়।
উল্লেখ্য, নিহত জুবায়েদ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি।
রোববার বিকেলে বর্ষার বাসায় টিউশনে যাওয়ার পথে জুবায়েদের সঙ্গে দেখা হয় মাহিরের। এসময় দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কিছুক্ষণ পরই জুবায়েদ ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে জুবায়েদের প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
এইচএ