সরু সড়কের দুপাশে সারি সারি তালগাছ। গ্রামীন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে পরিবেশ রক্ষা ও ভাঙন রোধে সড়কের দুইপাশে তালগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকবছর আগে। এখন তালগাছ গুলো বেড়েছে বেশ, সড়কে চলাচলকারী পথচারী সহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষের মুগ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা থেকে তেঁতুলবাড়ীয়া সড়কে হঠাৎ করে গেলেই মুগ্ধ হতে হবে যে কাউকে। অনেকেই আবার দূর-দূরান্ত থেকে দেখতে আসেন তালসারি সড়ক। প্রায় ২ কিলোমিটারের বেশি অংশ জুড়ে সড়কের দু'পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি তালগাছ। গাছের সারিতে ঘেরা সড়কটি সবসময়ই মানুষের নজর কাড়ে।
এখানেই শেষ নয়, সারি সারি তালগাছে আশ্রয় নিয়ে বসত গড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখপাখালি। জানা যায় বছর বিশেক আগে বর্ষায় সড়কটির ভাঙন রোধে এবং পরিবেশ রক্ষার কথা চিন্তা করে তালগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন সেসময়কার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হক। ১০ ফুট পর পর দুরত্ব রেখে প্রায় এক হাজার তালগাছ লাগানো হয় এ সড়কটিতে।
তালসারি সড়কের তালগাছ থেকে তালপাতা দিয়ে হাতপাখা, তালপাটিসহ নানা উপকরণ তৈরি করা হয়। গ্রীষ্মকালে তালশাঁসও বিক্রি করা হয়। তালের রসে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার তৈরি করার জন্য তালসারি সড়কের তালগাছ থেকে তালের ফল কিনে আনেন অনেকেই। সারিবদ্ধ তালগাছ সড়কটিকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরেছে। কিন্তু তালসারি সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
তালসারি সড়কের পাশে কয়েক বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, তালগাছ গুলোর পরিচর্যা আমারা নিজেরাই করি। সড়কের পাশে যাদের জমিজমা রয়েছে তারাই বেশির ভাগ সময় দেখভাল করেন তালগাছগুলোর।
তালসারি সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করেন তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের হালিম রেজা। তিনি জানান, আমি গতবছরে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরেছি। আমি যখন প্রবাসে গিয়েছিলাম তখন এই সড়কে তালগাছ দূরের কথা মাটির রাস্তা ছিলো। হঠাৎ দেশে ফিরে এসে দেখি মাটির রাস্তা পরিবর্তন হয়ে পিচঢালা সড়ক আর দুপাশে তালগাছের সারি। যা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস জানান, সড়কের দুপাশে তালগাছ এখন মানুষের মধ্যে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। গাছগুলো পরিচর্যার জন্য আমি দেখভাল করছি।
এমআর