লক্ষ্মীপুরে লাইসেন্সবিহীন ১৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানই স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মানছে না। পুরোদমে চলছে তাদের কার্যক্রম। তবে তাদের দাবি লাইসেন্সের আবেদন হয়েছে, কিন্তু মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিচ্ছে না।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার ১৫টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স না থাকায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা সিভিল সার্জন আহাম্মদ কবীর প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছেন। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের বন্ধের নির্দেশনা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের নিরাময় হাসপাতাল (প্রা:), নগর ক্লিনিক, দি মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ট্রাস্ট মেডিকেল সার্ভিসেস, মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সদরের মান্দারী বাজার ইরা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডক্টরস চেম্বার, রামগঞ্জে ইসলামিয়া হসপিটাল, ইসলামিয়া ডায়াগনস্টিক, ডা. এম মাঈন উদ্দিন আল্ট্রাসনোগ্রাফি অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, রামগঞ্জ হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রায়পুরে মা-মনি স্পেশালাইজড হাসপাতাল (প্রা:), মা-মনি স্পেশালাইজড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কমলনগরে ফজুমিয়ার হাট নিরাময় ডিজিটাল ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক স্টোরসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) লক্ষ্মীপুর শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় বিভিন্ন অপরাধে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিকের মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার সকল নিয়মনীতি তারা মেনে চলছেন। এছাড়া লাইসেন্সের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল স্বাক্ষর হচ্ছে না। এতে করে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে তারা দাবি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হাসপাতালের মালিক বলেন, আমাদের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন। এখন শুধু স্বাক্ষরের বাকি। অথচ ডিজি হেলথ স্বাক্ষর দিচ্ছেন না, একদিকে মন্ত্রীর নির্দেশনা, অন্যদিকে ডিজি হেলথ স্বাক্ষর দিচ্ছেন না। এদিকে আমরা প্রতিষ্ঠান নিয়ে আছি বেকায়দায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেরুল হাসান রাজু বলেন, যে সকল হাসপাতালকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা সবাই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। সবাই নিয়মনীতি মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। তারপরও আমাদের প্রত্যেক হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে কোন প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সবিহীন না চলে। ইতোমধ্যে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানকে আমরা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। যারা বন্ধ রাখছে না তাদের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান শুরু করা হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে সিলগালা করে দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, যদিও যে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা প্রত্যেকে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। তবে কি কারণে লাইসেন্স হচ্ছে না সে বিষয়ে তাদের মন্ত্রণালয়ে খোঁজ খবর নেওয়া প্রয়োজন।
এআই