বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের বীরকান্দা গ্রামের কয়েকজন একটি দোকানের সামনে রাতে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এমন সময় তারা দেখতে পান একটি বিমান বার বার এই গ্রামের ওপর দিয়ে চক্কর দিচ্ছে৷ প্রথমে স্বাভাবিক মনে হলেও এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ভয় কাজ করে৷ কারণ এভাবে কখনো বিমান চক্কর দিতে তারা দেখননি৷
নরসিংদী বেলাবো উপজেলার আকাশে গতকাল সোমবার (২৪ জুন) রাত ১১টার দিকে এমনি দৃশ্য দেখতে পায় অনেকেই৷ কেউ কেউ থানায় জরুরি নম্বর ৯৯৯ এ কল করেও জানান।
বীরকান্দা গ্রামের মরম আলী, জসিম, সবুজ, আলিম উদ্দিন জানান, মাঝ রাতে হঠাৎ দেখি একটি বিমান বার বার চক্কর দিচ্ছে৷ অনেক্ক্ষণ এমনটি হতে থাকলে আমাদের মধ্যে ভয় কাজ করে৷ কি কারণে এমনটি হচ্ছিল আমরা কেউ বুঝতে পারিনি৷ এলাকার সবাই বাড়ি থেকে বের হয়ে এটি দেখতে থাকি৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবিগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ১২৭ ফ্লাইট হযরতের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকায় জরুরি অবতরণ করেছে। সোমবার (২৪ জুন) দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করে। ফ্লাইটে কতজন যাত্রী ছিল তা, এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (বিজি-১২৭) পাইলটের সামনের কাচে (উইন্ডশিল্ড) ফাটল দেখা দেয়। ফ্লাইটটি আবুধাবি না গিয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে নরসিংদীর আকাশে চক্কর দেয়। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে রাত ১টা ২০ মিনিটে নিরাপদে ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, ফ্লাইটটির টেকনিক্যাল ফল্ট হয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ এটি নিরাপদে অবতরণ করেছে।
বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ফ্লাইট রাডারের তথ্য মতে, ফ্লাইটটি রাত ১০টা ৪ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবির জন্য উড়াল দেয়। তবে ত্রুটির কারণে নরসিংদীর বেলাবো এলাকার আকাশে প্রায় ২৬/২৭টি চক্কর দেয়।
বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, উড়োজাহাজটির উইনশিল্ডে ফাটল দেখা দেওয়ায় এটি জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য নিয়ম অনুযায়ী ফ্লাইটটি আকাশে চক্কর দিয়ে জ্বালানি পুড়াতে থাকে। ঢাকা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার ফ্লাইটটিকে নরসিংদীর আকাশে চক্কর দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।
নরসিংদীর বেলাবো থানার ডিউটি অফিসার ইফাত হোসেন জানান, ফ্লাইটটি চক্কর দিতে থাকলে ৯৯৯ এর মাধ্যমে থানায় স্থানীয় কয়েকজন ফোন দিয়েছিলেন। তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছিলেন। তবে আমাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না।