এইমাত্র
  • ডুমুরিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
  • কোটা প্রথা সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী: জি এম কাদের
  • মিরপুরে কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা
  • মতিউরের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস, নিজের সম্পদ নিয়ে মুখ খুললেন আরজিনা
  • রান্না করা ও শুকনো খাবার চান বানভাসি মানুষেরা
  • খাম লেনদেন করা সেই ওসি প্রত্যাহার
  • হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ১ দিনে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার
  • কিশোরগঞ্জের নদীতে ডুবে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  • কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাবিতে আজও বিক্ষোভ
  • গাজার শিশুদের জন্য ২০ লাখ মার্কিন ডলার দিলেন নিকোলা কফলান
  • আজ রবিবার, ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৭ জুলাই, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    মেডিকেল ভিসায় ভারতে আটকা শতাধিক বাংলাদেশি

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম

    মেডিকেল ভিসায় ভারতে আটকা শতাধিক বাংলাদেশি

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম

    মেডিকেল ভিসা নিয়ে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারতীয় দূতাবাসের নতুন শর্তে শতাধিক বাংলাদেশি ভারতে আটকা পড়েছে। দেশে ফিরতে ভারতীয় ইমিগ্রেশন ব্যুরো অফিসে আবেদন করলেও ধীরগতিতে ২ সপ্তাহ ধরে আটকে আছেন তারা। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। ভুক্তভোগীরা জটিলতা কমিয়ে ভারত ভ্রমণ সহজ করার দাবি জানিয়েছেন।

    ভুক্তভোগী সাইদুর নীর সালিন বলেন, ‘আমার বাবা মোহাম্মদ শাহ আলম জটিল রোগে আক্রান্ত। স্বজনদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল ভিসায় গত মাসে বাবাকে নিয়ে ভারতে আসি। আসার আগে দূতাবাসের শর্ত অনুযায়ী কলকাতার একটি হাসপাতালের প্রত্যায়নপত্র দেখাই। কিন্তু ভারতে এসে জানতে পারি হায়দ্রাবাদে আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। পরে কলকাতায় না দেখিয়ে হায়দ্রাবাদে চিকিৎসা করানো হয়। পরে বাবাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অপারেশনের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও চিকিৎসার জন্য বড় অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হওয়ায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেই।

    তিনি আরও বলেন, গত ২১ জুন ফেরার সময় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন চিকিৎসার কাগজপত্র দেখে অভিযোগ করেন কলকাতায় না দেখিয়ে কেন হায়দ্রাবাদে ডাক্তার দেখিয়েছি। এক পর্যায়ে আমাদের দেশে ফেরার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয় ও ভুল স্বীকার করে অনলাইনে ইমিগ্রেশন ব্যুরোতে আবেদন করতে বলেন কর্মকর্তারা। বাধ্য হয়ে একটি আবাসিক হোটেলে উঠি এবং অনলাইনে আবেদন করি। কিন্তু আবেদনের ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইমিগ্রেশন থেকে অনুমতি না আসায় দেশে যেতে পারছি না। আমাদের হোটেলেই থাকতে হচ্ছে। এতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। আর কবে ফিরতে পারব তাও জানি না। তাদের মতো আরও অনেকেই মেডিকেল ভিসায় ভারতে যেয়ে দেশে ফেরার পথে এ সমস্যায় পড়ছেন। ভারতীয় দূতাবাসের খামখেয়ালিপনার কারণে আমাদের এ ভোগান্তি।

    জানা গেছে, উন্নত চিকিৎসা সেবা, উচ্চশিক্ষা, ব্যবসার খোঁজখবর ও দর্শনীয় স্থান ঘুরতে প্রতিবছর বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে ২০ থেকে ২২ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করেছে ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৭ জন। আর গত অর্থবছরের ১১ মাসে ছিল ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৭ জন। এক্ষেত্রে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১৩ হাজার ৪০ জন। এই খাত থেকে ভিসা ফি বাবদ বেনাপোল ইমিগ্রেশন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ভারতীয় দূতাবাস বছরে ১২০ কোটি টাকার বেশি আয় করে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতে নিয়ে খরচ করছে। আর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে বড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক।

    পাসপোর্টধারী যাত্রীরা জানান, কাগজপত্র ঠিক থাকলেও মায়ের ভিসা দিলেও সঙ্গে থাকা বাচ্চার ভিসা অনেক সময় পাওয়া যায় না। পরের বার আবেদনের জন্য রাখা হয়। এছাড়া মেডিকেলের ক্ষেত্রে ৬ মাসের ভিসা দিলেও অনেক সময় একবার ভ্রমণের সুযোগ মিলছে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পূর্ণ হচ্ছে না। পরে আবার ভিসা করাতে বা দীর্ঘ সময় ভারতে থেকে চিকিৎসা শেষ করতে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

    এছাড়া ৬ মাসের মাল্টিপল ট্যুরিস্ট ভিসায় মাসে দুইবারের বেশি পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভ্রমণ করা যায় না। আবার অনেক সময় দেখা যায় বিজনেস ভিসায় বারবার গেলেও নানান জবাব দিতে হয়। অথচ ভারতীয় পাসপোর্টধারীরা এ ধরনের কোনো শর্ত ছাড়াই অনায়াসে ব্যবসা, চাকরি বা স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটাতে বাংলাদেশে আসেন।

    পাসপোর্টযাত্রী আব্দুর রহমান বলেন, মেডিকেল ভিসায় আগে চিকিৎসার জন্য ডাক্তার বুকিং নিয়ে সেই ডাক্তারকেই দেখানোর ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। তবে এখন সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আয় বাড়াতে দূতাবাস এ পদ্ধতি অবলম্বন করছে বলে লোকমুখে এমনটি শুনেছি।

    পাসপোর্টধারী রতন সরকার বলেন, অনেকে বাধ্য হয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য যায়। কিন্তু এখন দেশে ফেরার সময় বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে জনবল সংকটে এক একজনকে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ভারত আমাদের বন্ধু দেশ, তারা বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সেবা সহজ করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করছি।

    পাসপোর্টযাত্রী পূজা পোদ্দার বলেন, মেডিকেল ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমার সিরিয়াল নিতে যদি দুই মাস অপেক্ষা করতে হয় তাহলে জরুরি চিকিৎসা কীভাবে পাব ?

    ট্রাভেলস ব্যবসায়ী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ভারতে যাত্রী যাতায়াত বাড়লেও তারা সেবার মান বাড়ায়নি। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ছাড়তে এক একজনের ৩ ঘণ্টার বেশি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেবার মান বাড়াতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক বৈঠকে অনেক অনুরোধ করলেও এখন পর্যন্ত তারা কথা রাখেনি।

    বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, দ্রæত বেনাপোল বন্দর পার হলেও পেট্রাপোল বন্দরে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়। তবে সেবার মান বাড়াতে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা সভায় আশ^স্ত করলেও তারা সেটা মানছে না।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…