এইমাত্র
  • মধ্য গাজার স্কুলে বিমান হামলা, নিহত ১৬
  • চীন সফরে যেসব সমঝোতা সই হতে পারে
  • টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিতে উরুগুয়ে
  • ডুমুরিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
  • কোটা প্রথা সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী: জি এম কাদের
  • মিরপুরে কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা
  • মতিউরের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস, নিজের সম্পদ নিয়ে মুখ খুললেন আরজিনা
  • রান্না করা ও শুকনো খাবার চান বানভাসি মানুষেরা
  • খাম লেনদেন করা সেই ওসি প্রত্যাহার
  • হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ১ দিনে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার
  • আজ রবিবার, ২৩ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৭ জুলাই, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    মঠবাড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ঝুলছে তালা

    সৈয়দ বশির আহম্মেদ, পিরোজপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
    সৈয়দ বশির আহম্মেদ, পিরোজপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম

    মঠবাড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ঝুলছে তালা

    সৈয়দ বশির আহম্মেদ, পিরোজপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষ্যে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া ৮৩০ ঘরের মধ্যে অ‌ধিকাংশ ঘরেই উপকারভোগীর বসবাস নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব উপকারভোগী পরিবারগুলোর আশ্রায়ণের নির্দিষ্ট বরাদ্ধকৃত ঘরে ঝুলছে তালা। অভিযোগ র‌য়ে‌ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই না করে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৬টি ঘরের মধ্যে প্রায় ২০টি ঘরেই তালা ঝুলছে। একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩৩ ঘর থাকলেও প্রায় ১৩টি ঘরেই তালা ঝুলছে। এছাড়া অন্য ইউনিয়ন গুলোতেও ঘুরে দেখা গেছে বরাদ্দকৃত ঘর উপকারভোগীকার নিয়ে দখল করে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র থাকছেন। কেউ ১০ থেকে ১৫ দিন, কেউবা আবার ১ থেকে ২ মাস থেকেই অবস্থান মজবুত করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে চলে গেছেন। আবার কোনো কোনো উপকারভোগী তাদের বরাদ্ধকৃত ঘর বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে এলাকাবাসীর। পরিত্যাক্ত ঘরে অনেককে আবার পশু (ছাগল) পালন করতেও দেখা গেছে।

    উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী আশ্রায়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ কয়েকটি ঘরের নাম্বার উল্লেখ করা হলো--৬, ৯, ১১, ১৩, ২১, ২৩, ৩৮, ৫৬, ৬০, ৬৪, ৬৬ নম্বর ঘর। এবং একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ ঘর ১, ৩, ১১, ১৪, ১৯, ২১, ২৬, ২৭, ২৮ নম্বর ঘর।

    উল্লেখ্য, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১৮১ জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০ জন, তৃতীয় পর্যায়ে ২৯৫ জন, চতুর্থ পর্যায়ে ১৫৪ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। পরিবারগুলোর মাঝে ঘরের চাবি, কবুলিয়ত দলিল, নামজারি খতিয়ান, ডিসিআরসহ যাবতীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করে উপজেলা প্রশাসন।

    আশ্রায়ণে বসবাসকারী একাধিক বাসিন্দা, প্রায় দুই-তিন মাস পর থেকে কিছু কিছু পরিবার পর্যায়ক্রমে ঘরে আসতে শুরু করে। তবে বর্তমানে অনেক পরিবারের জিনিসপত্র ঘরে থাকলেও তারা নিয়মিত বসবাস করছেন না। অনেক পরিবার আছে, তারা কখনই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেনি। আশ্রয়ণে বসবাসকারী বাসিন্দারা তাদের কোনো দিন দেখেননি।

    জানা গেছে, প্রতিটি ঘর প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ৭১ হাজার, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯১ হাজার, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে প্রায় ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়।

    আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালি আশ্রায়ণে আশ্রিত একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ প্রকল্পের ২১ নম্বর ঘরটির মালিক ইউনিয়নের পরশুরিয়া গ্রামের ইব্রাহিম। তিনি ঘর বুঝে পাওয়ার এক বছরের অধিক সময়ে একদিনও এখানে বসবাস করেনি। দীর্ঘদিন ধরেই তার ঘরে তালা ঝুলছে। ৬ নম্বর ঘরটির মালিক মিরাজ হোসেন। তার বাড়ি দক্ষিণ সোনাখালি এলাকায়। ঘর বুঝে পাওয়ার পর কয়েক দিন থাকলেও বর্তমানে তিনি নিজ গ্রামে সপরিবারে বসবাস করছেন। এরকম আরো অনেক পরিবার রয়েছেন যারা ঘর পাওয়ার পরে চলে গেছেন। আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া আশ্রয়ণের ১ নম্বর ঘরের মালিক বেতমোড় গ্রামের কামাল হোসেন। তিনি প্রথম দিকে কিছু দিন আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও প্রায় ৭-৮ মাস ধরে তার কোনো খোঁজখবর নেই। ১৯ নম্বর ঘরের মালিক কামরুল ঘর পাওয়ার পর ২০-২২ দিন বসবাস করে থাকলেও ৯ মাস ধরে এখানে আসেন না। আশ্রায়ণের এ সকল ঘরে মানুষজন বসবাস না করায় অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে ঘরগুলো। এ ছাড়া উপজেলার পাঁচশতকুড়া টিকিকাটা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুফিয়া বেগমের ঘরটি আছে তালাবদ্ধ অবস্থায়। স্থানীয় লোকজন ঘরটিকে গরুর গোয়াল হিসেবে ব্যবহার কর‌ছে। ঘরটিতে কারো কোনো যাতায়াত পথ নেই। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর যাবত এখানে কেউ বসবাস করছেন না।

    মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পে কিছু সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। প্রকল্পের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সমস্যাগুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

    মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম জানান, সমস্ত উপকার ভোগীকেই যাচাই বাছাইয়ের কয়েকটি ধাপ পার করেই শর্ত সাপেক্ষে গৃহের দলিলসহ কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছি, এখানে তো কাজের জায়গা নেই। তাই এরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে দিন মজুর হিসাবে কাজ করে। অনেকে আছেন অনুমতি নিয়ে তারপরে গিয়েছেন। অনেক জায়গায় রয়েছেন বাবার পরিবর্তে ছেলে থাকেন। মাঝে মাঝে কাজের জন্য বাইরে চলে আসে। ঘরগুলো বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। আর কেউ যদি স্থায়ীভাবে না থাকে, তাহলে আমরা যাচাই বাছাই ক‌রে ব্যবস্থা নিবো।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…