এইমাত্র
  • ৫ দিনের ব্যবধানে ২ জাহাজে আগুনে নাশকতার সম্ভাবনা দেখছে শিপিং করপোরেশন
  • পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ, নিহত ১২
  • সিনেমা হলে টিকিট বিক্রি করলেন সৃজিত-দেব
  • দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতি সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি
  • আজ ‘জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন’ দিবস
  • ঠাকুরগাঁওয়ে যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
  • শেকৃবি উপাচার্যকে দেখতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দুই উপদেষ্টা
  • প্রেমের গুঞ্জনের পর তিশা আউট, পূজা ইন
  • রাজধানীর ২৫৭ মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা
  • বন্যা-ভূমিধসে ভারতের মেঘালয়ে ১০ জনের মৃত্যু
  • আজ রবিবার, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৬ অক্টোবর, ২০২৪
    শিক্ষাঙ্গন

    ইবি: সক্রিয় আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় ক্লাসরুম

    যায়িদ বিন ফিরোজ, ইবি প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম
    যায়িদ বিন ফিরোজ, ইবি প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম

    ইবি: সক্রিয় আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় ক্লাসরুম

    যায়িদ বিন ফিরোজ, ইবি প্রতিনিধি প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম

    ‘মুদ্রার এপিঠে প্রত্যয় স্কিম হলে ওপিঠে কোটা বৈষম্য’ মুদ্রার গোটা বৃত্ত জোরে চলছে লাগাতার আন্দোলন। সারা দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের দাবিগুলোকে আদায়ের লক্ষ্যে রয়েছেন সোচ্চার অবস্থানে। এতে করে প্রায় সপ্তাহখানেক এর বেশী সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার ক্লাস পরিক্ষা ও ক্যাম্পাসের দাপ্তরিক কার্যক্রম।

    এমন সক্রিয় আন্দোলনের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে পরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ। আন্দোলনরত শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা কর্মকর্তারা বলছেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিরবেন না স্ব স্ব দায়িত্বে। এতে করে একদিকে যেমন ভোগান্তি বেড়েছে, বেড়েছে স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ নিয়ে অনিশ্চিয়তা অন্য দিকে উঁকি দিচ্ছে সেশনজট শঙ্কা।

    কোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে বিদ্যমান ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ৫৬ শতাংশ, ১ম ও ২য় শ্রেণী নন ক্যাডার জবে ৬১ শতাংশ কিংবা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৯৬ শতাংশ কোটা বিরাজমান’ এতে প্রকৃত মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মত তাদের। পাশাপাশি চলমান আন্দোলন থেকে কবে নাগাদ কোটা সংস্কার ইস্যুতে যৌক্তিক সমাধান আসবে এবং কবে পুনরায় শ্রেণীকক্ষে ফিরতে পারবেন তারা এনিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে।

    এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপন এসেছে সে বিষয়ে শিক্ষক ফেডারেশনের আহবানে সাড়া দিয়ে ইবি শিক্ষকরা রয়েছেন অনড় অবস্থানে। সকল প্রকার ক্লাস পরিক্ষা বন্ধ রেখেছেন তারা। তারা দাবি করছেন এই প্রত্যয় স্কিম তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে বৈষম্যমূলক সর্বজনীন পেনশন 'প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন’ না হলে তারা তাদের অবস্থান থেকে সড়ে আসবেন না।

    একই পথে হাটঁতে দেখা গিয়েছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের। তারাও অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপন এর বিরোধিতা করেছেন। এতে করে বন্ধ রয়েছে দাপ্তরিক কার্যক্রম।

    সবমিলিয়ে ত্রিমুখী এই আন্দোলনে অচল অবস্থায় পতিত হয়েছে কুষ্টিয়ার এই সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়টি। সকলপ্রকার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে শিক্ষাঙ্গনটিতে। তবে এমন অবস্থার দ্রুত সমাধান খুঁজছে সকলেই।

    সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবগুলো ক্লাসরুমেই ঝুলছে তালা। এলোমেলো চেয়ার টেবিল উপরে সপ্তাহখানেক এর ব্যবধানে ধূলোর আস্তরণ জমেছে ক্লাসরুম জুড়ে। এছাড়াও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়।

    এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, ‘আমরা চাই সরকার শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন এবং শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাসে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করুক। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে পড়াশোনা করার জন্য। তাদেরকে পড়াশোনার জন্য সুষ্ঠু সুন্দর একটা পরিবেশ দিয়ে তাদেরকে দেশ এবং সমাজ গড়ার সুযোগ করে দিক’।

    কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, ‘আমাদের অফিসের বিভিন্ন কাজ করার কথা সেখানে আমরা কাজ বাদ দিয়ে এই পথে নেমেছি। এই বিষয়টি আমাদের জন্যই কষ্টদায়ক। এই প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা অফিসিয়াল কাজে ফিরে যাবো না’।

    বিষয়টি নিয়ে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ‘চাকরিতে জয়েন করছি এখানে পেনশন একটি লাইফের সিকিউরিটি। যদি আগে থেকেই বলে দেয়া হতো তাহলে হয়তো এদিকে আসতাম না। এখন বিষয়টি যেভাবে বলা হচ্ছে সেখানে আমাদের জব সিকিউরিটি প্রশ্নের মুখে’।

    শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সবার ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। আমার বিভাগ বা আমার একার পক্ষে তো আর কিছু করা সম্ভব না। আশাকরি একটা পরিকল্পনা থাকবে কিভাবে লেভেলে নেয়া যায়।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, যে দাবিরগুলোর প্রেক্ষিতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছে তা যৌক্তিক। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন তো বলে দিছে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলমান থাকবে।এগুলো সুনজরে দেখে আলাপ আলোচনা করে একটা সমাধানে আসা উচিত।

    সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এইটা তাদের অধিকারের আন্দোলন। বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন করছে। এইটা একটা জাতীয় ইস্যু এখন এই বিষয়টি জাতীয়ভাবে সমাধান না হলে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে সমাধান করা যাবে না।

    তিনি আরও বলেন, তাদের মৌলিক অধিকার নিয়ে তারা আন্দোলন করছে।শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন একটা কোর্ট ইস্যু এখানে আমার ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলার থাকে না। তবে শিক্ষকদের প্রতি আমার আহবান থাকবে যেনো যে ক'দিন শিক্ষা-কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা যেনো কোনোভাবে পুষিয়ে নেন তারা।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…